সিলেট ১৯শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৮ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৭:২৭ অপরাহ্ণ, জুলাই ৩, ২০১৯
সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় পরিবার পরিকল্পনা বিভাগে ক্লিনিক্যাল কন্ট্রাসেপশন সার্ভিসেস ডেলিভারী প্রোগ্রামের পেইড পিয়ার ভলান্টিয়ার নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
বিষয়টি নিয়ে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন চাকুরীপ্রার্থী গোয়াইনঘাট উপজেলার লেঙ্গুড়া গ্রামের হাসিনা বেগম। তার পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পান্না আক্তার।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, গোয়াইনঘাট উপজেলায় পরিবার পরিকল্পনা বিভাগে ক্লিনিক্যাল কন্ট্রাসেপশন সার্ভিসেস ডেলিভারী প্রোগ্রামের পেইড পিয়ার ভলান্টিয়ার নিয়োগের জন্য দরখাস্ত আহবান করা হয়। ৮১ টি পদের জন্য গোয়াইনঘাট উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন থেকে মোট ৬৬৫ জন মহিলা আবেদন করেন। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ৮ম শ্রেণি উত্তীর্ণদের কাছ থেকে দরখাস্ত আহবান করলেও মাস্টার্স পড়ূয়া শতাধিক মহিলা এই পদের জন্য আবেদন করে মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির শর্তাবলীর মধ্যে বয়স সীমা ১৮ থেকে ৩০ বছর পর্যন্ত নির্ধারিত ছিল। চলতি বছরের ১৪, ১৫ ও ১৬ মে গোয়াইনঘাট উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে উক্ত পদের জন্য মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়। মৌখিক পরীক্ষায় প্রত্যেক পরীক্ষার্থী যথাযথভাবে উত্তর দিতে সক্ষম হয়েছিলেন।
এ নিয়োগ কমিটি ছিল ৫ সদস্য বিশিষ্ট। কমিটিতে সভাপতি ছিলেন গোয়াইনঘাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ফারুক আহমদ এবং সদস্য সচিব ছিলেন উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাদিক মিয়া। অন্যান্য সদস্যরা হলেন গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিত কুমার পাল, উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা ডা. রেহান উদ্দিন এবং উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মোছা. তাসলিমা বেগম।
তিনি বলেন, নিয়োগে ৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি থাকলেও মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণের সময় প্রভাব খাটিয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও নিয়োগ কমিটির সভাপতি মো. ফারুক আহমদ ও নিয়োগ কমিটির সদস্য সচিব এবং পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাদিক মিয়া পরীক্ষা গ্রহণ করেন। কমিটির মধ্যে অন্যান্য সদস্যদের উপস্থিত না রেখে মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণকালে পরীক্ষার্থীরা নানা প্রশ্ন করেছিল। তখন নিয়োগ কমিটির সভাপতি ও গোয়াইনঘাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ফারুক আহমদ পরীক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে লম্বা লম্বা স্বচ্ছতা ও জবাবদিহীতামূলক বক্তব্য রেখে শান্তনা দিয়েছিলেন।
তিনি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, গোয়ইনঘাট উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের কার্যালয়ের জনৈক কর্মচারী মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী হাসিনা বেগম, স্বপ্না বেগমসহ আরো অনেকের কাছে উক্ত পদে নিয়োগ পেতে তাকে আর্থিক সুবিধা প্রদানের জন্য বলেছিলেন। ২৭ জুন মৌখিক পরীক্ষায় চুড়ান্ত সুপারিশকৃত তালিকা প্রকাশের পর তাদেরকে টাকা না দেওয়ায় উক্ত মহিলাদের চাকুরী হয়নি। এছাড়া নিয়োগ কমিটির সদস্য সচিব এবং পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাদিক মিয়া সরাসরি তার কার্যালয়ের কর্মচারীর স্ত্রীদেরকে চাকুরী প্রদান করেন। তাদের মধ্যে প. প. পরিদর্শক নুর আহমদের স্ত্রী এবং পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ গোয়াইনঘাটের হিসাব সহকারী শিবেন নাথের স্ত্রী উল্লেখযোগ্য।
এছাড়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে দেয়া শর্ত ভঙ্গ করে আর্থিকভাবে লাভবান হয়ে নিয়োগ কমিটির সভাপতি ও গোয়াইনঘাট উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. ফারুক আহমদ ও সদস্য সচিব উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা যাদেরকে নিয়োগ দিয়েছেন তারা হচ্ছে আলীগাঁও ইউনিয়নের আবুল হাসানাতের স্ত্রী ৩৫ বছর বয়সী ৩ সন্তানের মা সাইমা বেগম, পশ্চিম জাফালং ইউনিয়নের লাটি গ্রামের মুজিবুর রহমানের স্ত্রী ৩৭ বছর বয়সী আমিনা বেগম, পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের গোয়াইন গ্রামের মোবারক আলীর স্ত্রী ৪০ বছর বয়সী সুহাদা বেগমসহ আরো কয়েকজন।
তিনি আরো বলেন, গত ২৭ জুন নিয়োগ কমিটির সভাপতি সুপারিশকৃত চুড়ান্ত তালিকাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে প্রকাশ করে তড়িঘড়ি করে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি দেন ফারুক আহমদ। তালিকাটি প্রকাশের পর দেখা যায় উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. ফারুক আহমদ, সদস্য সচিব ডা. সাদিক মিয়া ও চেয়ারম্যান কার্যালয়ের সিএ লুৎফুর রহমানের সমন্নয়ে নিজ কর্মী, সমর্থক ও স্বজনদের নামই শুধুমাত্র সুপারিশকৃত চুড়ান্ত তালিকায়।
ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করে এই পদে কয়েকজন নিয়োগ পেয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। তারা হচ্ছেন- জবা রানী নাথ, সুনিতা রানী দাস, হাসনা বেগমসহ আরো ১০/১২ জন। অপেক্ষমান তালিকায় তোয়াকুল ইউনিয়নের পাইকরাজ গ্রামের মুসলিম মেয়ে হাসনা বেগমের স্বামীর নাম দেয়া হয় প্রহলাদ কুমার দাস দেওয়া হয়।
তিনি এই নিয়োগ বাতিলে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী ইমরান আহমদ এমপির হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd