অনুমতি ছাড়াই দেড়শ’ গাছ কেটে ফেলেছে সিলেট বেতার

প্রকাশিত: ৪:১৮ অপরাহ্ণ, জুলাই ২, ২০১৯

অনুমতি ছাড়াই দেড়শ’ গাছ কেটে ফেলেছে সিলেট বেতার

যে প্রতিষ্ঠান থেকে মানুষকে গাছ লাগানের জন্য উদ্বুদ্ধ করা হয়, সেই প্রতিষ্ঠানের সবগুলো গাছ নির্বিচারে কেটে ফেলা হয়েছে। কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে সম্পূর্ণ বিধিবহির্ভুত ভাবে এই কাজটি করেছে সিলেট বেতার কর্তৃপক্ষ। আর বন বিভাগ জানিয়েছে, তারা গাছ কাটার অনুমতি দেননি।

১৯৬১ সালে যাত্রা শুরু করা সিলেট বেতারের আঙ্গিনায় অসংখ্য ছোট-বড় গাছ ছিলো। গতকাল সরেজমিন গিয়ে দেখা যায় দুএকটি বাদে সবকটি গাছই কেটে ফেলা হয়েছে। সরকারি যে বিধি-বিধান রয়েছে তার কোন কিছুই মানা হয়নি। আরো অভিযোগ রয়েছে গাছগুলো একেবারে পানির দরে অর্থাৎ দেড় শতাধিক গাছ মাত্র চার লক্ষ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে। যেখানে সরকার বিপুল অঙ্কের রাজস্ব থেকেও বঞ্চিত হয়েছে। সরকারি সম্প্রচার মাধ্যমে এমন পরিবেশ বিধংসী কাজে চরম ক্ষুব্ধ হয়েছেন স্থানীয় বৃক্ষপ্রেমীরা।

রাষ্ট্রপতি পদকপ্রাপ্ত বৃক্ষপ্রেমী আফতাব চৌধুরী বলেন, সরকারি অফিস হউক আর বাড়িতে হউক না কেনো, গাছ লাগানোর পর এটার মালিক সরকার। এজন্য অনুমতি নিয়ে গাছ কাটতে হবে। এক্ষেত্রে তারা সেটি মানেননি। এটা একটা অন্যায় কাজ করেছেন। এজন্য তাদের বিচার হওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেট শাখার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিম বলেন, বেতার থেকে সারা দেশের মানুষকে বৃক্ষ রক্ষার সচেতনতার জন্য প্রচার প্রচারণা চালানো হয়। এই ধরনের প্রতিষ্ঠানের বৃক্ষনিধন কোনভাবেই কাম্য নয়। প্রধানমন্ত্রী বৃক্ষরোপনের অঙ্গীকারের সাথে সাংঘর্ষিক এই কাজের সাথে জড়িতদের তিনি শাস্তি দাবি করেন।

এদিকে, প্রধানমন্ত্রীর গৃহিত উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য বনবিভাগের এবং বেতারের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে নিয়মতান্ত্রিক ভাবে গাছগুলো কাটা হয়েছে বলে দাবি করেন সিলেট বেতারের আঞ্চলিক প্রকৌশলী মানোয়ার হোসেন। তবে অনুমতির কোন কাগজ দেখাতে পারেননি। তার দেয়া কাগজপত্রে দেখা যায়, মে মাসের ২৮ তারিখে তিনি বন বিভাগের কাছে গাছ কাটার জন্য আবেদন করেছেন। অথচ এর ২২ দিন আগে তিনি পত্রিকায় গাছ বিক্রির বিজ্ঞাপন দিয়ে দেন। অনুমতি পাওয়ার আগে কিভাবে গাছ বিক্রির বিজ্ঞাপন দিলেন এবং গাছ বিক্রি করলেন এর কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি। এছাড়া যে গাছ কাটার কোন দরকার নেই সে গাছগুলো কেনো কাটা হলো, সে প্রশ্নেরও কোন উত্তর দিতে পারেননি তিনি।

সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এস এম সাজ্জাদ হোসেন এ ব্যাপারে বলেন, সরকারি বিধি অনুযায়ি কোন প্রতিষ্ঠানের গাছ বিক্রি কিংবা কাটতে হলে বন বিভাগের অনুমতি নিতে হবে। এক্ষেত্রে সিলেট বেতার উন্নয়ন কর্মকান্ডের জন্য গাছকাটার জন্য আমাদের কাছে আবেদন করেছে। কিন্তু আমরা এখনো অনুমতি দেইনি। তদন্ত করে দেখবো আসলে উন্নয়য় কর্মকাণ্ডের জন্য কোন গাছ বা কত গুলো গাছ কাটার দরকার। তারপর সেগুলো কাটার অনুমতি দেয়া হবে। কিন্তু অনুমতি দেয়ার আগেই গাছগুলো কেটে ফেলা হয়েছে উল্লেখ করে তাকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, এটা কোন ভাবে সম্ভব নয়। যদি এটা তারা করে থাকেন তাহলে কিভাবে সেটা করেছেন তারাই ভালো জানেন।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালক নারায়ন চন্দ্র শীলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এই বিষয়টি সম্পর্কে কিছুই জানেন না বলে জানান।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..