বিশ্বনাথের সড়কে বড় বড় গর্ত আটকে পড়ে বাস : জনদূর্ভোগ চরমে

প্রকাশিত: ৯:৩৩ অপরাহ্ণ, জুলাই ১, ২০১৯

বিশ্বনাথের সড়কে বড় বড় গর্ত আটকে পড়ে বাস : জনদূর্ভোগ চরমে
সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার রামপাশা-বৈরাগী-সিংগেরকাছ বাজার সড়কের গর্তে একটি যাত্রীবাহী বাস আটকে যানবাহান চলাচল বন্ধ রয়েছে। সোমবার সকালে সিংগেরকাছ এলাকা থেকে ছেড়ে আসা সিলেটগামী যাত্রীবাহী বাস বৈরাগীবাজার-সিংগেরকাছ সড়কের রহমাননগর স্থানে গর্তে পড়ে আটকা পড়ে বাস। ফলে ওই সড়ক দিয়ে সকল ধরনের যানবাহান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে এলাকাবাসীকে পুহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ। স্থানীয় এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীরা পায়ে হেটে যেতেও দুর্ভোগ হচ্ছে।  যথা সময়ে সংস্কার কাজ না করায় বিশ্বনাথের জনগুরুত্বপূর্ণ রামপাশা-বৈরাগী-সিংগেরকাছ বাজার সড়ক এখন বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে। পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় সড়কের বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতার কারণে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। প্রতিনিয়ত ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। ফলে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে উপজেলাবাসীকে। এছাড়া জলাবদ্ধতার কারণে পানিবন্ধি অবস্থায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন কয়েকটি পরিবারের লোকজন।
এদিকে, প্রায় সাড়ে ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে রামপাশা-বৈরাগী-সিংগেরকাছ বাজার সড়ক সংস্কার কাজের জন্য দরপত্র (টেন্ডার) আহবান করা হয়। কিন্ত কোনো ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান উক্ত সংস্কার কাজের দায়িত্ব (টেন্ডার ড্রপ) না নেওয়ায় আবারো নতুন করে ২য় পর্যায়ে সংস্কার কাজের দরপত্র (টেন্ডার) আহবানের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে।
জানা গেছে, বিশ্বনাথ উপজেলা প্রধান সড়কগুলোর মধ্যে একটি অন্যতম ‘রামপাশা-বৈরাগী বাজার-সিংগেরকাছ বাজার সড়ক’। জনগুরুত্বপূর্ণ এই সড়ক দিয়ে বিশ্বনাথ, জগন্নাথপুর ও ছাতক এই তিন উপজেলার হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন যাতায়াত করেন। সড়কের সাথে সরকারি ও বে-সরকারি অফিস, শিক্ষা প্রতিষ্টান, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বেশ কয়েকটি বাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ অনেক প্রতিষ্ঠানের সংযোগ রয়েছে। ২০১৫ সালে সড়কে সংস্কার কাজ করা হয়। কিন্ত সংস্কারের কিছু দিন যেতে না যেতেই ফের সড়কের বিভিন্ন স্থানে কার্পেটিং উঠে সৃষ্টি হতে থাকে গর্ত। স্থানীয় রহমান নগর, বৈরাগী বাজার ও কাটলীপাড়া নামক স্থানে সড়কে যে বিশাল গর্ত সৃষ্টি হয়েছে তা দেখলে মনে হয় এটি সড়ক নয়, যেন মিনি পুকুর। পানি নিস্কাশনের কোন ব্যবস্থা না থাকায় বিশেষ করে সড়কের এই তিনটি স্থানে বছরের ১২টি মাসই জলাবদ্ধতা থাকে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, রহমান নগর গ্রামের কিছু লোক তাদের বাড়ির পাশ দিয়ে প্রবাহিত সরকারি নালাটি বেআইনি ভাবে বন্ধ করে দেওয়ার কারণে এই ব্যাপক জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। ফলে সড়ক দিয়ে যাতায়াতকারী জনসাধারণকে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এবং রহমাননগর গ্রামের প্রায় ৪০টি পরিবারের লোকজন পানিবন্ধি অবস্থায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন। পানি নিস্কাশনের সরকারি নালাটি বন্ধ করে জলাবদ্ধতা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন ও নালাটি পূর্বের ন্যায় খনন করে দেওয়ার দাবিতে বছর খানেক পূর্বে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এর কাছেও স্মারকলিপি দিয়েছিলেন এলাকাবাসী। গত ২০ জুন বিশ্বনাথে সড়কের পাশে অবৈধ নির্মিত পাকা দেয়াল উচ্ছেদ অপসারণ করা হয়েছে। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফাতেমা তুজ জোহরা অভিযান পরিচালনা করে রামপাশা ইউনিয়নের ৫২নং জেএল স্থিত সিঙ্গেরকাছ মৌজার ১নং খাস খতিয়ানের ৯১২২, ৯২০৯, ৯২১০ নং দাগের সড়কে অবৈধভাবে নির্মিত পাকা দেয়াল উচ্ছেদ করেন। ফলে উদ্ধার হয় ০.০১০৫ একর খাস জমি।
এছাড়া সড়কটি ভেঙ্গে যাওয়ায় সময়মতো শিক্ষার্থী ও চাকুরিজীবিসহ লোকজন তাদের নিজ নিজ কর্মস্থলে গিয়ে পৌছাতে পারেননি। জরুরী রোগীদের নিয়ে হাসপাতালে যেতে হলে বিপাকে পড়তে হয় অনেককেই। প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট-বড় দূর্ঘটনা ঘটলেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বেহাল এই সড়ক দিয়ে যানবাহনে বাধ্য হয়ে যাতায়াত করছেন ভুক্তভোগিরা।তাই রহমাননগর এলাকায় বন্ধ করে দেওয়া পানি নিস্কাশনের একমাত্র সরকারি নালাটি পূর্বের ন্যায় খনন এবং সড়কটি সংস্কার করে জনসাধারণের দূর্ভোগ লাগবে সংশ্লি¬ষ্ট কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করেছেন এলাকাবাসী।
এব্যাপারে স্থানীয় বাসিন্দা আবদুস শহিদ সুমন বলেন, জলাবদ্ধতা সৃষ্ঠি হওয়ায় সড়কটির করুণ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। আজ সোমবার সকালে ওই সড়কে যাত্রীবাহী বাস গর্তে পড়ে আটকা যায়। এতে সড়কে সকল ধরনের যানবাহান চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে আমাদের চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তাই জরুরী ভিত্তিতে জনগুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি সংস্কারের জন্য আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করছি।
রামপাশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে অবহিত করেছি।
উপজেলা প্রকৌশলী হারুনুর রশীদ ভূঁইয়া বলেন, সড়কের যেসকল স্থানের বড় বড় গর্ত রয়েছে তা আজকের মধ্যেই (সোমবার) ভরাট করা হবে। কিন্তু সড়কটির সংস্কারের জন্য দরপত্র আহবান করা হলেও কোনো ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ড্রপ না করায় আবারো টেন্ডারের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে তিনি জানান।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার অমিতাভ পরাগ তালুকদার বলেন, সড়কে যানবাহান চলাচলের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগকে অবহিত করেছি।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..