সিলেট ১৫ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১লা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৪ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৮:১৪ অপরাহ্ণ, জুন ২৮, ২০১৯
গোলাপগঞ্জে ব্রাজিল প্রবাসী সাজাপ্রাপ্ত আসামী মহি উদ্দিন ওরফে সামু গ্রেফতারী পরোয়ানা মাতায় নিয়ে পুলিশের সামনে প্রকাশ্যে ঘুরাফেরা করলেও রহস্যজনক কারণে তাকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না। সাজাপ্রাপ্ত আসামি থাকার পরও মহি উদ্দিন প্রবাসে যাওয়া আসা করছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ওই পলাতক আসামীকে দেখেও না দেখার ভান করছেন। অভিযোগ উঠেছে পুলিশকে গোপন রফাদফার মাধ্যমে সাজাপ্রাপ্ত আসামী মহি উদ্দিন দিব্যি প্রকাশ্যে ঘুরা ফেরা করছেন। মামলার বাদি একাধিক বার পুলিশকে শতভাগ নিশ্চিত করে আসামির লোকেশন প্রদান করলে পুলিশ গ্রেফতারের জন্য অভিযান চালায় বটে তবে পুলিশ ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই সে পালিয়ে যায়। বাদিসহ সচেতন মহলের অভিযোগ পুলিশের ইশারায় পলাতক সাজাপ্রাপ্ত আসামী মহি উদ্দিন পুলিশ আসার আগেই গা ঢাকা দেয়। এ নিয়ে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। গোলাপগঞ্জ থানায় মহি উদ্দিনের মতো আরো অনেক বৃত্তবানদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা ও সাজা প্রাপ্ত আসামী রয়েছেন তারা দিব্যি প্রকাশ্যে ঘুরাফেরা করার অভিযোগ উঠেছে।
সাজাপ্রাপ্ত আসামী মহি উদ্দিন ওরফে সামু আদম ব্যবসায়ী ছিলেন। ইতোমধ্যে জেলা ও উপজেলার অনেক সাধারণ পরিবারের লোকজনকে ব্রাজিল পাঠানোর নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে অনেক পরিবারকে সর্বহারা করে পথে বসিয়েছন। এক পর্যায়ে মহি উদ্দিন ব্রাজির পাঠানোর নামে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে গোপনে ব্রাজিল চলে যান। এতে নিঃস্ব হয়ে পথে বসছেন জেলা উপজেলার একাধিক পরিবার। তার বিরুদ্ধে গোলাপগগঞ্জ থানায় একাধিক গ্রেফতারী পরোয়ানা রয়েছে। ওই আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা, সাজা থাকার পরও পুলিশের রহস্যজন ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। মহি উদ্দিনের বাড়ি উপজেলার লক্ষণাবন্দ ইউপির করগাঁও উজানপাড়া গ্রামে। সে মৃত মঈন উদ্দিনের ছেলে।
এদিকে সাজাপ্রাপ্ত আসামি মহি উদ্দিন একই উপজেলার আমুড়া ইউপির সুন্দিশাইল গ্রামের আহমেদ আলীর ছেলে জিল্লুর রহমানের কাছ থেকে ব্রাজিল পাঠানোর নামে ৪লাখ ৫০হাজার টাকা নেন। ব্রাজিল পাটানোর অপারগতা দেখা দিলে বিনিময়ে মহি উদ্দিন জিল্লুর রহমানের নামে ৪লাখ ৫০হাজার টাকার চেক এক্সিম ব্যাংক গোলাপগঞ্জ শাখার নামে প্রদান করেন। পরে মহি উদ্দিন প্রতারণা করেন এবং জিল্লুর রহমানের ভাইকে ব্রাজিল পাটাতে পারেননি। পরে জিল্লুর রহমান ব্যাংক থেকে টাকা নগদায়ন করার জন্য ব্যাংকে গেলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ একাউন্ট সচল নয় সেটি বন্ধ রয়েছে বিধায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ চেক নং-৩৭৫৭৬০৮, হিসাব নং-১১১০০০০০১১০ ওই চেকটি ডিজঅনার করেন। পরে জিল্লুর রহমান ২০১৭ সালে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১ম আদালত, সিলেট এ মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-২৩/২০১৭। উক্ত মামলাটি বিজ্ঞ আদালতের বিচারক সাক্ষ্য প্রমাণে ও তদান্তক্রমে সত্যতা পেয়ে যুগ্ন দায়রা জজ ৩য় আদালত, সিলেটের বিচারক মোঃ সাহেদুল করিম উপজেলার করগাঁও উজানপাড়া গ্রামের মৃত মঈন উদ্দিনের ছেলে মহি উদ্দিনকে ঞযব ঘবমড়ঃরধনষব ওহংঃৎঁসবহঃ অপঃ, ১৮৮১ এর ১৩৮ ধারায় দোষী সাব্যস্থ করে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদÐ ও নালিশী চেকে বর্ণিত ৪লাখ ৫০ হাজার দ্¦িগুন অর্থাৎ ৯ লাখ টাকার অর্থদন্ডে দন্ডিত করা হয়। রায়ের পর থেকে মহি উদ্দিন পলাতক থাকেন এক পর্যায়ে পালিয়ে ব্রাজিল দেশে পাড়ি জমান। বর্তমানে ব্রাজিল থেকে দেশে এসেছেন এবং ওই পলাতক সাজাপ্রাপ্ত আসামী রহস্যজনক কারণে দিব্যি প্রবাস থেকে যাওয়া আসাসহ প্রকাশ্যে ঘুরা ফেরা করছেন। বাদি একাধিক সময়ে পুলিশকে অবহিত করলেও পুলিশ আসামী মহি উদ্দিনকে আটকের জন্য অভিযানে গেলেও ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই পালিয়ে যায়। এতে পুলিশের ভুমিকা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। অনেকেই পুলিশের অনৈকতাকে দায়ী করছেন। মহি উদ্দিনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা ও সাজার আসামি থাকার পরও তিনি ব্রাজিল থেকে দুই মহিলা নিয়ে আসছেন এবং তাদেরকে নিয়ে প্রকাশ্যে ঘুরাফেরা করছেন। অনেকে অভিযোগ করেছেন ওই ব্রাজিল নাগরিক মহিলাদেরকে দেখিয়ে ও বিবাহের প্রলোভনের মাধ্যমে অনেকের কাছ থেকে কৌশলে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন।
এদিকে মামলার বাদি জিল্লুর রহমান সাজাপ্রাপ্ত আসামী ও পলাতক আসামী মহি উদ্দিন ওরফে সামুকে গ্রেফতার করতে র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তার হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। অনুসন্ধানে জানা যায় উঠেছে মহি উদ্দিনের বিরুদ্ধে গোলাপগঞ্জ থানায় আরো একাধিক গ্রেফতারী পরোয়ানা রয়েছে।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd