সিলেট ২৬শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৭শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১২:৫৩ অপরাহ্ণ, জুন ২৩, ২০১৯
সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় একটি মাদক চক্রের যন্ত্রনায় অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিয়েও পাচ্ছেন না তারা কোনো প্রতিকার! নিজেদের ছাত্রলীগ কর্মী পরিচয় দিয়ে চাঁদা আদায়সহ চক্রটি বিভিন্নস্থানে গাড়ি দিয়ে ইয়াবা বিক্রি, পানের দোকানে ইয়াবা বিক্রি করে দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে। নিজেদের একটি বিশাল চক্রও তৈরী করেছে তারা। চক্রটি বড় বড় অপরাধ করেও রহস্যজনক কারণে থানা পুলিশের হাত থেকেও ছাড় পাচ্ছে। এ কারণে দক্ষিন সুরমা এলাকায় বৃদ্ধি পাচ্ছে অপরাধ বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয়রা। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসন বিষয়টি জেনেও অদৃশ্য কারণে তাদের বিরুদ্ধে কোনো প্রদক্ষেপ নিচ্ছে না! তাদের কারণে এলাকার উঠতি বয়সী ছেলেরা হচ্ছে বিপদগামী।
এই চক্রটির মূলহোতা দক্ষিণ সুরমার ধরাধরপুর গ্রামের শওকত আলীর ছেলে ছাত্রলীগ নামধারী জনি আহমদ ও রনি আহমদ। তাদের সহযোগী পিনাক দে পাপ্পু, ফাহিম, মুরাদ, সাকিব, নাজিম, নাঈম।
চক্রটি গত মঙ্গলবার ১১ জুন রাতে দক্ষিণ সুরমার ধরাধরপুর গ্রামের মৃত জাহিদ আলীর ছেলে আব্বাস আলী ও তার বন্ধু সাইদ হাসান চৌধুরী উপর পিরোজপুর যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষনের সামনে হামলা করে টাকা-পয়সা ছিনিয়ে নেয়। পরে আহত অবস্থায় স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়।
ঘটনার পর আহত আব্বাসের ভাই ইয়াকুব আলী বাদি হয়ে দক্ষিণ সুরমা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার নং-(১১)১২/০৬/১৯ইং। অভিযোগে প্রকাশ এই মামলার আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও রহস্যজন কারণে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করছেনা। এভাবেই সকল ঘটনা থেকে এই চক্রটি ছাড় পেয়ে যাচ্ছে। আজ প্রায় ৯দিন পার হলেও আজ পর্যন্ত পুলিশ এই মামলার কাউকেই গ্রেফতার করতে পারে নি।
মামলায় আসামিরা হলো- দক্ষিণ সুরমার ধরাধরপুর গ্রামের শওকত আলীর ছেলে জনি আহমদ (৩০), টেনু মিয়ার ছেলে সাকিব আহমদ (২২), লাউয়াই শাপলা গেইটের মঞ্জু মিয়ার ছেলে নাজিম (২৩) ও নাঈম (২২), পিরোজপুরের পিন্টু দে’র ছেলে পিনাক দে পাপ্পু (৩৪) ও দক্ষিন সুরমার পুরান তেতলী এলাকার ফাহিম (২৪), মুরাদ আহমদ (২২) সহ আরো অজ্ঞাত ৫ জন।
সম্প্রতি দক্ষিণ সুরমার পাঁচটি এলাকার মানুষ খবর পান চন্ডিপুলস্থ ফুল কলির সামনে দু’টি পানের দোকানে গভীর রাত পর্যন্ত জনি ও রনির মাদক বিক্রি করছে তারা। এমন খবর শুনে গত ১৪ জুন শনিবার ধরাধরপুরসহ পাঁচটি গ্রামবাসী এই দু’টি পানের দোকান বন্ধ করে দেন। তবে তেতলী বাজার এলাকায় তাদের আরও একটি মাদক বিক্রির আস্তানা রয়েছে। সেখান থেকে তারা মাদক, চুরি-ছিনতাইসহ বড় বড় অপরাধ করে যাচ্ছে।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক ধরাধরপুরের স্থানীয় একজন বাসিন্দা জানান, জনি ও রনি তাদের গাড়িতে করে সহযোগিদের নিয় প্রকাশ্য ইয়াবা, ফেন্সিডিল বিক্রি করছে। তারা নিজেদের স্থানীয় এমপি’র লোক এবং ছাত্রলীগ কর্মী হিসেবে পরিচয় দিয়ে প্রশাসনের কাছ থেকে পাড় পেয়ে যাচ্ছে!
দক্ষিণ সুরমার ধরাধরপুরের মৃত মজিদ আলীর ছেলে আহত আব্বাসের ভাই ইয়াকুব আলী জানান, পাওনা টাকা চাওয়ায় ধরাধরপুর গ্রামের শওকত আলীর ছেলে জনি ও রনি মিলে আমার ভাই ও তার বন্ধুকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা করে আহত করেছে। দক্ষিণ সুরমা এলাকায় জনি ও রনি অপরাধের রাজত্ব করে যাচ্ছে। এলাকাজুড়ে মাদক বিক্রিসহ এই তারা বিভিন্ন ধরণের অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে।
এ ঘটনায় ওই মামলার আসামি রনি ও জনি রধরাধরপুর গ্রামের শিল্পপতি হুমায়ুন আহমদের বাড়িতে গত শুক্র, শনি ও রোববার তিনদিন শালিস বৈঠক বসে। তবে কোনো সিদ্ধান্তে যাওয়া হয়নি। আগামী শনিবার একই বাড়িতে আবারো বৈঠক হবে।
এদিকে স্থানীয়দের অভিযোগ রনি ও জনি সালিশে উপস্থিথ থাকলেও পুলিশ রহস্যজনক কারনে তাদের গ্রেফতার করেনি।
এ ব্যাপরে দক্ষিণ সুরমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল ফজল জানান, এই মামলার আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। তিনি আরো বলেন, তাদের বিরুদ্ধে থানায় বিভিন্ন মামলা রয়েছে।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd