সিলেট ১৩ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৯শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১২ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৮:১২ অপরাহ্ণ, জুন ১৭, ২০১৯
সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার পাইকরাজ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসকে নিয়ে দীর্ঘ দুই যুগের অধিক সময় ধরে টানা টানি চলছে। একের পর এক মামলা হামলার পরও সমাধানে পৌঁছাতে পারেনি এলাকাবাসী।
সরেজমিন জানা যায়, পাইকরাজ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টির স্থায়ী ক্যাম্পাস নিয়ে সৃষ্ট জটিলতার বাস্থব চিত্র। পাকিস্তান আমলে ১৯৪৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এ বিদ্যালয়টি। পাইকরাজ দক্ষিন পাড়া জামে মসজিদ, পাইকরাজ (বড়) জামে মসজিদ, মাওলানা শফিউল্লাহর বাড়ী ও প্রয়াত আমজাদ আলীর বাড়ীতে বিভিন্ন সময়ে বিদ্যায়টির অস্থায়ী ক্যাম্পাস শেষে বির্তকিত ভাবে ১৯৮৬ সালে পাইকরাজ উত্তর পাড়া সরকারী গোফাঠে বিদ্যালয়টির একাডেমিক টিন শেড ঘর নির্মিত হয়। একাডেমিক টিন শেড ঘরটি নিয়ে এলাকাবাসী ভিন্নমত পোষন করেন।
পাইকরাজ দক্ষিন পাড়ার বীর মুক্তিযোদ্ধা ইস্রাদ আলীসহ অনেকে জানান, প্রয়াত সাবেক ইউপি সদস্য ইসাক আলী পাইকরাজ দক্ষিন পাড়া গ্রামের পূর্ব দিকে ২ বিঘা জমি বিদ্যালয়টির স্থায়ী ক্যাম্পাসের জন্য হস্তান্তর করেন। এছাড়া সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুর রহিম ইস্রাকের জমির পাশে বিদ্যালয়ের জন্য এক বিঘা জমি দান করেন। বিদ্যালয়টির স্থায়ী ক্যাম্পাসের জন্য মোট ৩ বিঘা জমি পাওয়ার পর সরকারীভাবে একটি একাডেমিক ভবন বিদ্যালয়ে প্রদান করা হয়। তখন টিকাদারী প্রতিষ্টান ঐ জমিতে একাডেমিক ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করে সমতল ভূমি থেকে ৩ফুট উপরে পৌছার পর আকস্মিক বন্যার পানিতে তলিয়ে যায়। বন্যার পানি কিছুটা হ্রাস পাওয়ার সাথে উত্তর পাড়া গ্রামের একটি গ্রুপ নৌকা দিয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্টানের সকল মালামাল নিয়ে উত্তর পাড়া গোফাটে উক্ত টিন শেড ঘর তৈরি করেন।
এ বিষয়ে ১৯৮৬সালে দক্ষিন পাড়ার প্রয়াত সাবেক মেম্বার ইস্রাক আলী বাদী হয়ে একই গ্রামের মখলিছ উদ্দিনকে বিবাদী করে একটি মামলা দায়ের করেন। ২০০৫ সালে তোয়াকুল ইউনিয়ন পরিষদের তৎকালীন চেয়াম্যান মো. উমর আলী উদ্দ্যেগ নিয়ে তৎকালীন সিলেট ৪-আসনের সংসদ সদস্য দিলদার হোসেন সেলিমের হস্থক্ষেপে পাইকরাজ গ্রাম বাসীর মধ্যে বিদ্যালয় ব্যাপারে একটি সমোঝতায় পৌঁছান।
পাইকরাজ দক্ষিন পাড়া ও উত্তর পাড়া গ্রামের সকলের সম্মতিতে মধ্যে ভর্তি স্থানে বিদ্যালয়টির স্থায়ী ক্যাম্পাস স্থাপনের সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হলেও শেষ পর্যন্ত ওই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়নি।
অবশেষে সালুটিকর-গোয়াইনঘাট সড়ক ঘেঁষে পূর্বপাশে পাইকরাজ দক্ষিন পাড়ায় উজ্জল কুমার দে, অনন্ত কুমার দে ও মনিদ্র কুমার দে ৩৩ শতক জমি পাইকরাজ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নামে দান করেন। ঐ স্থানে গ্রামবাসী শতাধিক লম্বা একটি টিন শেড ঘর নির্মাণ করেন এবং একই সাথে যুগ উপযোগী খেলার মাঠ তৈরি করেন। মামলাটি বিভিন্ন কোর্ট পেরিয়ে মাহামান্য হাইকোর্ট পর্যন্ত গড়ায়। ২০১৬ সালে বিদ্যালয়টি স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তর বিষয়ে মাহামান্য হাইর্কোটে দক্ষিন পাড়া গ্রাম বাসী আবেদন করে। উক্ত আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০১৯ সালে স্থায়ী ক্যাম্পাসে বিদ্যালয়টি হস্তান্তরের জন্য মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট আদেশ প্রদান করেন। যাহার আদেশ নং- ৩৩০৩। কিন্তু এখন পর্যন্ত বিদ্যালয়টি সরকারী গোফাটে রয়েছে বলে দক্ষিন পাড়া গ্রামবাসী দাবি করেন।
এ বিষয়ে পাইকরাজ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি রুহুল আমিন বলেন, বর্তমানে এ বিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসটি ১ (একর ) নিজস্ব জমিতে রয়েছে।
অপর দিকে বিদ্যালয়টি স্থানান্তর করে স্থায়ী ক্যাম্পাসে হস্থান্তরের লক্ষ্যে দক্ষিণ পাড়া গ্রামবাসীর সার্বিক অংশ গ্রহনে সোমবার দুপুর ১২টায় শিক্ষার্থীসহ নবনির্মিত টিন শেড ঘরের সামনে মানববন্ধন করেছেন।
এ দিকে সোমবার বেলা ১টায় বিদ্যালয়টি স্থায়ী/অস্থায়ী ক্যাম্পাস পরিদর্শন করেছেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের উপ পরিচালক শাহ সুফি মোহাম্মদ আলী রাজা ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সিলেট বিভাগের উপ-পরিচালক মো. শাফায়াতুল আলম। পরিদর্শন শেষে বিদ্যালয়টির স্থায়ী ক্যাম্পাস নিয়ে এখনও সঠিক কোন সিদ্ধান্ত পাওয়া যায়নি।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd