সিলেট ১৩ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৯শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১২ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১:২৭ পূর্বাহ্ণ, মে ২৭, ২০১৯
রাজধানির উত্তরায় অবস্থিত কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতাল পাচ্ছেন মাত্র ১০ টাকায় উন্নত মানের চিকিৎসা। এক সময় ওই হাসপাতালের ছিলো অনেক সুনাম। কিন্তু এখন আর নেই। সেখানেই অনিয়ম ও দুর্নীতির আখড়া তৈরী করেছেন ওই হাসপালের বিতর্কিত পরিচালক আমিরুল হাসান।
সরেজমিন গত শুক্রবার হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, হাসপাতালে রোগীদের জিম্মি করে বাণিজ্য ও হয়রানি চলছে। কিছু ওষুধ কোম্পানির এমআর এবং ভৌতিক ও গলাকাটা বিল প্রদানকারী কিছু প্রাইভেট ক্লিনিকের অর্ধশত দালাল প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত হাসপাতাল গেটে অবস্থান করে। এ সময় হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের উন্নত চিকিৎসার প্রলোভন দেখিয়ে হাসপাতাল গেট থেকেই জিম্মি করে তাদের ক্লিনিকে নিয়ে যায়। দু’তিন দিন তাদের ক্লিনিকে রাখতে পারলেই ধরিয়ে দেয় লাখ টাকার ভৌতিক বিল। অপরদিকে ওষুধ কোম্পানির এমআররা কোনো রোগী সরকারি এ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসাপত্র নিয়ে বের হলেই গেটের দু’পাশে ওতপেতে থেকে রোগীকে ঘিরে ধরে। তারা রোগীর হাত থেকে প্রেসক্রিপশন কেড়ে নিয়ে ডাক্তার তাদের কোম্পানির ওষুধ লিখেছেন কিনা তার নোট নেয়। কেউ কেউ মোবাইলে প্রেসক্রিপশনের ছবিও তুলে নেয়। এতে চরম হয়রানির শিকার হতে হয় রোগীকে। রোগী বা রোগীর স্বজন ও অন্য কাউকে হয়রানি এবং হাসপাতাল চত্বর ও গেটে অবস্থান করা অন্যায় ও নিষিদ্ধ থাকলেও। হাসপাতালের পরিচালক এ বিষয়ে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেন বলে জানান অনেকে।
হাসপাতাল সূত্রে যানা যায়, এটি একটি নতুন হাসপাতাল। বিদায় একের পর এক আচ্ছে উন্নয়ন কাজ। সেই উন্নয়ন কাজে বড় অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন হাসপাতালের কর্মচারীরা আর ভাগ পাচ্ছেন পরিচালক। সম্প্রতি ওই পরিচালকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
এ হাসপাতালে কোন পরিচালকের পদ নেই জানা সত্বেও আমিরুল হাসান অনেক টাকার বিনিময় এখানে গত ২০১৮ সালের ৪ নভেম্বর অত্র হাসপাতালে যোগদান করেন। তিনি যোগদানের পর থেকেই শুরু করেন একেপর এক অনিয়ম দূর্নীতি। টেন্ডার বাণিজ্য ও নারী কেলেঙ্কারি থেকে শুরু করে এমন কোন কাজ নেই যে তিনি করেননি। যেন এই হাসপাতাল তাহার কাছে একটি আড্ডাখানা। ইতিমধ্যে তাহার বিরুদ্ধে দুদকের একটি মামলাও চলমান আছে।
জানা যায়, হাসপাতালের ডাক্তারদের রেষ্ট রুমের তালা ভেঙে গত ৯ মার্চ এক নার্সকে নিয়ে রাত্রী যাপন করতে গিয়ে হাতে নাতে ধরা পড়েন তিনি। তাহার এমন আচরণে হাসপাতালের ডাক্তার নার্স ও স্টাফরা তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু করে পরে সে ডাক্তারদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেয়।
সর্বশেষ গত ২৮ ফেব্রæয়ারী একজন নার্সকে যৌন হয়রানির অভিযোগ তার বিরুদ্ধে এই অভিযোগকে সে কোন পাত্তাই দিচ্ছে না। উল্টো ওই নার্সের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছে। ওই তার সকল কূ-কর্মে কিছু অডিও-ভিডিও প্রমাণ হিসেবে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে জমা দিয়েছেন। “তার কাছে কিছু ডকুমেন্টস, অডিও-ভিডিও এবং শুরু থেকেই যে ঘটনাগুলো ঘটছে তা অবহিত করেন এবং একটা চিঠির মাধ্যমে বিভিন্ নার্স সংগঠনকে জানান।” এরপর থেকে শুরু হয় ওই পরিচালকের বিরুদ্ধে দেশব্যাপি আন্দোলন।
ডা. আমিরুল হাসানের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “আমি অত্যন্ত কাছ থেকে দেখেছিলাম, আমি উনার স্টুডেন্ট ছিলাম। আমি যখন স্টুডেন্ট ছিলাম, তখনও বিভিন্ন সময়ে, বিভিন্ন মানুষকে বিভিন্ন নিয়ম দেখিয়ে, অনেক ইয়ং মেয়ের লাইফ উনি নষ্ট করেছেন। আমরা স্টুডেন্ট হিসেবে সে সবের প্রত্যক্ষদর্শী ছিলাম।
এত কিছুর পর হাসপাতাল ছেড়ে যেতে চাইছেন না। কারণ এখানে যে দূর্নীতি টেন্ডার বাণিজ্য করা যাবে অন্যত্র গিয়ে তা কোন ভাবেই সম্ভব নয়।
দুদকের মাধ্যমে পরিচালক আমিরুল হাসানের সম্পদের তদন্ত করা হয় তাহলে তার সকল সম্পদের হিসাব বেরিয়ে আসবে বলে দাবি করেন এখানকার সচেতন নাগরীকবৃন্দ।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd