সিলেটে খুনীদের নিয়ে বিএনপি-ছাত্রদলের ইফতার!

প্রকাশিত: ৬:১৬ অপরাহ্ণ, মে ২২, ২০১৯

সিলেটে খুনীদের নিয়ে বিএনপি-ছাত্রদলের ইফতার!

সিলেট ছাত্রদল নেতা ফয়জুল হক রাজু হত্যাকারীদের নিয়ে ইফতার করেছেন স্থানীয় বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দ। মঙ্গলবার (২১ মে) সিলেট মহানগর ছাত্রদলের প্রতিনিধি সভা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মোক্তাদির। বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী পরিষদের সহ ক্ষুদ্র ঋণ বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক, জেলা বিএনপির সভাপতি আবুল কাহের চৌধুরী শামীম, সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ, মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আজমল বখত সাদেক। এছাড়াও স্থানীয় বিএনপি নেতৃবৃন্দ ইফতার মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন।

ইফতার মাহফিলে ছাত্রদল নেতা রাজু হত্যাকারী ফরহাদ আহমদ ও এনামূল হকও উপস্থিত ছিলেন। তারা হত্যা মামলার আসামী থাকার পরও কীভাবে ছাত্রদলের ইফতারে যোগদান করেন এ নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠে আছে।

অনেকেই ধারণা করছেন- বর্তমান ছাত্রদলের কমিটির নেতারাই হত্যাকারীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছেন। তাদের সাথে আতাঁত করেই রাজু হত্যাকারীরা আজও দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে। নতুবা- হত্যা মামলার আসামীরা ছাত্রদলের ইফতার মাহফিলে কীভাবে অংশগ্রহণ করে।

গেল বছরের ১১ আগস্ট সিলেট মহানগর ছাত্রদলের সহ প্রচার সম্পাদক ফয়জুল হক রাজুকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। পরে ১৩ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টায় মহানগর পুলিশের কোতোয়ালি থানায় রাজুর চাচা দবির আলী বাদী হয়ে ছাত্রদলের ২৩জন নেতাকর্মীকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলার অন্যতম আসামী হলেন ইফতার মাহফিলে উপস্থিত থাকা ফরহাদ আহমদ ও এনামুল হক।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়- সিলেট মহানগর ছাত্রদলের ইফতারে পদত্যাগীকারী ছাত্রদলের সিনিয়র নেতারা যাননি। এর পূর্বে পদত্যাগীরা ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে।

এর কারণ হিসেবে সিলেট জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (পদত্যাগী) সোহেল ইবনে রাজা বলেন, ‘আমাদের আগে থেকেই সন্দেহ হয়েছিল- রাজু হত্যাকারীরা মহানগর ছাত্রদলের ইফতারে আসবে। আমরা শহীদ জিয়ার আদর্শকে বুকে নিয়ে ছাত্রদলের রাজনীতি করি। ছাত্রদলের একজন কর্মী হয়ে রাজু’র রক্তের সাথে বেইমানী করে তার হত্যাকারীদের সাথে ইফতার করতে পারিনা। তাই মহানগর ছাত্রদলের ইফতারে যাইনি।’ তাছাড়া সিলেটে ছাত্রদলকে ঢেলে সাজাতে ও দেশনেত্রীর মুক্তি আন্দোলন আরো ত্বরান্বিত করতে আমরা নির্বাচনের পর তাদের সাথে বসতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তারা সাড়া দেননি। এতে স্পষ্ঠ বুঝা যাচ্ছে- দেশনেত্রীর মুক্তি আন্দোলন করতে তারা প্রস্তুত নয়। যারা দলের স্বার্থে আমাদের সাথে আলোচনা করতে সাড়া দেয়নি, তাদের সাথে ইফতার করতে আমরা কেন যাব?।

এ ব্যাপারে সিলেট জেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ বলেন, ছাত্রদলের ইফতারে আমি অতিথি ছিলাম। আমি ছাড়াও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা সহ স্থানীয় অনেক নেতা উপস্থিত ছিলেন। তাছাড়া- আমি ব্যক্তিগতভাবে তাদেরকে চিনিনা। তবে নৈতিকভাবে আয়োজনকারী ছাত্রদল নেতাদের উচিত ছিল রাজু হত্যাকারীদের ব্যাপারে সতর্ক থাকা। তাদের প্রশ্রয় না দেয়া।

তবে- সিলেট মহানগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বী এহসান বলেন, আমরা পদত্যাগী সহ সবাইকে ইফতারের দাওয়াত দিয়েছি। পদত্যাগী নেতারা আসেননি। আর রাজু হত্যাকারীরা ইফতারে এসেছে এটা আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। কিন্তু কেউ যদি ইফতারে এসে পড়ে তাহলে তাকে কীভাবে ইফতার মাহফিল থেকে বিদায় করা যায়। পরবর্তীতে সব অনুষ্ঠানে আমরা এ ব্যাপারে সতর্ক থাকবো।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..