দেড় যুগ আগের পুরনো কমিটি দিয়েই চলছে কোম্পানীগঞ্জ আ’লীগ

প্রকাশিত: ৪:২৫ অপরাহ্ণ, মে ২১, ২০১৯

দেড় যুগ আগের পুরনো কমিটি দিয়েই চলছে কোম্পানীগঞ্জ আ’লীগ

দীর্ঘ দেড় যুগ আগে গঠিত কমিটি দিয়েই চলছে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ। কবে উপজেলা আ.লীগের কমিটি গঠিত হয়েছিল সে তথ্য দায়িত্বশীল কেউই বলতে পারেননি। এরফলে কোম্পানীগঞ্জে সাংগঠনিকভাবে অনেকটাই দুর্বল হয়ে পড়েছে সংগঠনটি।

২০০৪ সালে বীর মুক্তিযোদ্ধা সাজিদুল হক সাজিদকে সভাপতি ও আফতাব আলী কালা মিয়াকে সাধারণ সম্পাদক করে ১০১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠিত হয়। কমিটি গঠনের পর ১/১১ আন্দোলন, ফখর উদ্দিনের মাইনাস-২ ফর্মুলা আন্দোলনে প্রশংসনীয় ভূমিকা রাখে।

২০১১ সালে উপজেলা আ.লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সাজিদুল হক সাজিদ মারা যান। এরপর থেকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আলী আমজদ। ২০১১ সাল থেকে আজ পর্যন্ত দীর্ঘ ৮ বছরে মাত্র ৩টি ইউনিয়ন কমিটি হয়েছে। বাকী ৩টি ইউনিয়ন কমিটির সম্মেলন এখনো হয়নি।

সারা দেশে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন আ.লীগকে শক্তিশালী অবস্থানে নিতে কাজ করছেন তখন কোম্পানীগঞ্জ আ.লীগ রয়েছে অগোছালোভাবে। বয়োজ্যেষ্ঠ নেতৃবৃন্দকে দিয়ে কোনরকমে চলছে উপজেলা আ.লীগের কার্যাবলী। গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে উপজেলা আওয়ামী লীগের দুর্বল নেতৃত্বের কারনে উশৃঙ্খলতা সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে জেলা আওয়ামী লীগ উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক আপ্তাব আলী কালা ও সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমকে বহিস্কার করেন। তারপর কেন্দ্রের হস্তক্ষেপে ও তাদের নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়া সাপেক্ষে তাদের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার করে জেলা আওয়ামীলীগ। তবুও চারভাগে বিভক্ত হয়ে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নেয়। ঐ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান জাহাঙ্গীর আলম এবং বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আফতাব আলী কালা মিয়া (কাপ-পিরিচ), সাংগঠনিক সম্পাদক ইয়াকুব আলী (ঘোড়া), ১নং পশ্চিম ইসলামপুর আওয়ামীলীগের সভাপতি হাজী শামীম আহমদ (আনারস)। নির্বাচনে আ.লীগের মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে ৩ জন বিদ্রোহী অংশ নেন। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আ.লীগ কতটুকু শক্তিশালী ও ঐক্যবদ্ধ নির্বাচনের সময়ই উপলব্ধি করা যায়।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন- উপজেলা আ.লীগের দুর্বল নেতৃত্বের কারনে নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীদের ছড়াছড়ি ও উশৃঙ্খলতা দেখা দেয়। যার প্রমাণ পাওয়া যায় বিদ্রোহী প্রার্থী হাজী শামীম আহমদের বিজয়ের মাধ্যমে।

এছাড়া অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের মধ্যে যুবলীগের আহ্বায়ক ও যুগ্ম আহ্বায়ক ২০১৮ সালের শোকের মাস আগস্টে ৬ ইউনিয়নের কমিটি ঘোষনার পর উক্ত আহ্বায়ক কমিটি ১১জন সদস্য ঐক্যবদ্ধ হয়ে আহ্বায়ক ও যুগ্ম আহ্বায়কে অবাঞ্চিত ঘোষণা করেন। যাহা আজ পর্যন্ত বহাল রয়েছে। এর পর থেকে যুবলীগের কার্যক্রম নেই বললেই চলে। ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক বিয়ে করে সম্প্রতি ছেলের বাবা হওয়ার পর থেকে দলীয় কার্যক্রমে তার উপস্থিতি নেই বললেই চলে। তাছাড়া ১৪ বছরের পুরোনো স্বেচ্ছাসেবক লীগের ৩ সদস্যদের আহ্বায়ক কমিটি দিয়েই চলছে। এই কমিটিও কোন কার্যক্রম চোখে পড়ার মতো নয়।

এ ব্যাপারে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক জগলু চৌধুরী বলেছেন, ২০১১ সালে জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি গঠিত হয়। এরপর থেকে ৬টি উপজেলায় সম্মেলন হয়েছে। বাকী উপজেলা গুলোতেও শীঘ্রই সম্মেলন হবে। এতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনারও নির্দেশ রয়েছে। আ.লীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলনের পূর্বেই বাকী উপজেলাগুলোতে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান তিনি।

এ ব্যাপারে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আলী আমজাদ উপজেলা কমিটি কবে গঠিত হয়েছিল এবং তিনি কবে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব নিয়েছিলেন সঠিকভাবে বলতে পারেননি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন- হয়তোবা ৭/৮ বছর পূর্বে আমি ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব নিয়েছি।
ইউনিয়ন সম্মেলনের ব্যাপারে তিনি জানান- উপজেলা ৩টি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের কমিটি হয়েছে। বাকী ৩টি ইউনিয়নের সম্মেলন ঈদের পরে অনুষ্ঠিত হবে।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..