নির্ঘাত মৃত্যু থেকে ফিরে আসা পরী, নার্সদের কোলে ঘুমাচ্ছে

প্রকাশিত: ৮:৩৭ অপরাহ্ণ, মে ২০, ২০১৯

নির্ঘাত মৃত্যু থেকে ফিরে আসা পরী, নার্সদের কোলে ঘুমাচ্ছে

মৌলভীবাজারের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের জানকিছড়া থেকে উদ্ধার হওয়া নবজাতক পরী এখন অনেক ভালো আছে। হাসপাতালের নার্সদের কোলেই সে ঘুমাচ্ছে প্রশান্তির ঘুম। নির্ঘাত মৃত্যু থেকে ফিরে আসা পরী এখন সুস্থ। যে সময়ে মাতৃকোল থাকার কথা সে এখন কেবল আপন ঠিকানা ফিরে পাওয়ার অপেক্ষায়।

রোববার (১৯ মে) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের পুরনো ভবনের তৃতীয় তলায় শিশু ওয়ার্ডের স্ক্যানো (স্পেশাল কেয়ার ইউনিট) বিভাগে গেলে দায়িত্বপ্রাপ্ত নার্সরা জানালেন, ওখানে ঢোকা যাবে না। চিকিৎসকের বাধানিষেধ আছে। শিশু স্বাস্থ্যের জন্য বাইরের লোকজনের প্রবেশ ঝুঁকিপূর্ণ। তখন শিশু চিকিৎসক ওয়ার্ড পরিদর্শন করছেন। চিকিৎসকের অনুমতি নিতে হবে। স্ক্যানো বিভাগের বাইরে বারান্দায় চিকিৎসকের আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হলো। চিকিৎসক শহীদুল ইসলাম খানের অনুমতির পরই নার্স হামিদা আক্তার পরীকে কোলে করে নিয়ে আসেন ওয়ার্ডের সংরক্ষিত এলাকার একটি কক্ষে। পরী ঘুমে ছিল। শেষ পর্যন্ত ঘুমিয়েই থাকে সে।

এসময় কথা হয় জ্যেষ্ঠ স্টাফ নার্স চম্পা বেগমের সাথে। তিনি বলেন, ‘পরীকে নার্সরাই দেখাশোনা করছেন। যখন যে নার্স দায়িত্বে থাকেন, তিনিই পরীকে দেখেন। খাওয়া-দাওয়া করান। পরীর ওষুধ-পথ্য, পোশাক-আশাক যাই প্রয়োজন পড়ছে। তা সরবরাহ করছে হাসপাতালের সমাজকল্যাণ বিভাগ।’

এদিকে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের শিশু চিকিৎসক শহীদুল ইসলাম খান বলেন, ‘মেয়েটির অবস্থা মোটামুটি ভালো। ছুটি দেওয়ার মতো অবস্থা। ভালো আছে।’

প্রসঙ্গত, গত ২৪ এপ্রিল মৌলভীবাজারের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের জানকিছড়া এলাকায় রাস্তার পাশে এক নবজাতককে পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় এক ব্যক্তি। পরে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ নবজাতকটিকে উদ্ধার করে শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে ভর্তি করে। শ্রীমঙ্গল থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ২৫ এপ্রিল মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। খুবই ঝুঁকিতে ছিল শিশুটি। চিকিৎসক-নার্সদের সার্বক্ষণিক চিকিৎসা, সেবা শুশ্রূষায় সুস্থ ও নতুন জীবন ফিরে পায় নবজাতকটি। মাতৃ আদরে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে শিশুটির এখন বয়স বাড়ছে। এদিকে একসময় নবজাতকটির বাবা-মায়ের পরিচয়ও বেরিয়ে আসে। গত ২৮ এপ্রিল শিশুটির জন্মদাতা হিসেবে পুলিশের হাতে আটক হন জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার কালাপুর ইউনিয়নের ভগলপুর গ্রামের অরুন কর। এর আগে ওই দিন বিকেলে অরুন করের নামে অবিবাহিত এক কিশোরীকে ধর্ষণ ও সন্তান জন্ম দেওয়ার অভিযোগ এনে মামলা করেন ওই কিশোরীর মা। অরুন কর বর্তমানে মৌলভীবাজার জেলা কারাগারে রয়েছেন।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..