নার্স তানিয়াকে ধর্ষণের পর হত্যা, স্বীকারোক্তি চালকের

প্রকাশিত: ১০:৩১ অপরাহ্ণ, মে ১২, ২০১৯

নার্স তানিয়াকে ধর্ষণের পর হত্যা, স্বীকারোক্তি চালকের

স্বর্ণলতা পরিবহনের একটি বাসে নার্স শাহিনুর আক্তার তানিয়াকে গণধর্ষণ ও হত্যার কথা স্বীকার করেছেন চালক নুরুজ্জামান নুর (৩৯)। কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরে ওই ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে শনিবার রাতে আদালতে ১৬৪ ধারায় এমন স্বীকারোক্তি দেন নুর।

স্বীকারোক্তি কিশোরগঞ্জ আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আল মামুন রেকর্ড করেন। আট দিনের রিমান্ডের জিজ্ঞাসাবাদের চতুর্থ দিনে জবানবন্দি দিলেন নুর। এর আগে অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে তাকে আদালতে হাজির করা হয়। পরে নুরকে আদালতের নির্দেশে কিশোরগঞ্জ জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।

রোববার বিকেলে কিশোরগঞ্জ এসপি কার্যালয়ের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের পক্ষ থেকে এসব জানানো হয়।এতে জানানো হয়, পুলিশের কাছে মামলার সিংহভাগ তথ্য এসেছে। সব কিছু খতিয়ে দেখে দ্রুত অভিযোগপত্র দেয়া হবে।

নুরুজ্জামান নুরের স্বীকারোক্তির সূত্র ধরে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ৬ মে রাত আটটার পরে বাসটি কটিয়াদী পার হওয়ার পর একজন বৃদ্ধ যাত্রী নামলে তানিয়া বাসটিতে একা হয়ে যান। বাসটি যখন বাজিতপুর উপজেলার বিলপাড় জামতলা নির্জন স্থানে একটি কলাবাগানের কাছে এলে এর সব জানালা লাগিয়ে দিয়ে নুর প্রথমে তানিয়াকে ধর্ষণ করে। পরে হেলপার লালন মিয়া এবং বাসচালক নুরের খালাতো ভাই ও বাসের অপর হেলপার বোরহান- এই তিনজন মিলে পালাক্রম ধর্ষণে তানিয়া রক্তাক্ত করে। এই নৃশংস ঘটনাটিকে সড়ক দুর্ঘটনা হিসেবে চালিয়ে দিতে তানিয়াকে বাস থেকে নিচে ফেলে দেয়া হয়। এতে মাথা থেতলে গিয়ে গুরুতর আহত হয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়েন তানিয়া।

জবানবন্দিতে আরো উল্লেখ করা হয়, দায় এড়াতে অভিযুক্তরা তাৎক্ষণিক কৌশল আঁটেন। কৌশল হিসেবে ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডকে দুর্ঘটনা হিসেবে চালিয়ে দিতে তানিয়াকে ফের বাসে তোলা হয় এবং পরে বাস থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলা দেয়া হয়। আবার তারাই সড়ক থেকে তুলে এনে চিকিৎসা করানোর জন্য এখানে-সেখানে নিয়ে যান। শেষে নিয়ে যায় কটিয়াদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, চারজনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে এজহারভুক্ত নুরুজ্জামান নুর ও লালন মিয়া (৩৩) গ্রেফতার হয়েছে। সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে বকুল মিয়া ওরফে ল্যাংড়া বকুল, রফিকুল ইসলাম, খোকন মিয়াকে পুলিশ গ্রেফতার করার পর ৭ মে অতিরিক্ত মুখ্য বিচারক আল মামুন ৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। মামলার অপর দুই আসামি আল আমিন (২৮) ও আবদুল্লাহ আল মামুন (৩৭)।

সংবাদ সম্মেলনে কিশোরগঞ্জের এসপি মাশরুকুর রহমান খালেদসহ ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন ও অতিরিক্ত ডিআইজি মো. আসাদুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, তানিয়া ইবনে সিনা হাসপাতালে ঢাকার কল্যাণপুর শাখায় নার্স হিসেবে কর্মরত ছিলেন। কটিয়াদী উপজেলার বাহেরচর গ্রামে তার বাড়ি। ঢাকা-পিরিজপুর চলাচলকারী স্বর্ণলতা পরিবহনের একটি বাসে বাড়ি ফেরার পথে তানিয়ার মৃত্যু হয়।

ক্রাইম সিলেট/এইচ/এস

Sharing is caring!

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..