ছাতকে বিদ্যুৎ বিভ্রাটে অতিষ্ট হয়ে উঠেছে জনজীবন। লোডশেডিং নামে এখানে প্রত্যহ ২০ থেকে ২৫ বার বিদ্যুৎ আসা-যাওয়া করে। এমনকি কোথাও কোথাও সামান্য ঝড়ো হাওয়া বইলেই দিন-রাতের ১২ থেকে ২৪ ঘন্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ বন্ধ থাকে। সকাল-সন্ধ্যা, নামাজ, ইফতার, সেহরীর মত স্পর্শ কাতর সময়ও বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের কাছে কোন বিবেচ্য বিষয় নয়। ভুক্তভোগী গ্রাহকদের অভিযোগ, বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের ইচ্ছে-অনিচ্ছেয় চলেছে এখানের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা। কয়েক লক্ষাধিক গ্রাহকের দুর্ভোগের বিষয়টি বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ মোটেই আমলে নিচ্ছেন না। ফলে ঘন-ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ঘটনায় উপজেলার পল্লী ও বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের গ্রাহকদের মধ্যে বিরাজ করছে চরম ক্ষোভ ও অসস্তোষ।
ভুক্তভোগী গ্রাহকরা জানান, বিদ্যুতের ভেল্কিবাজি বিগত একমাস ধরে চলে আসলেও প্রথম রোজা থেকে এখানে তার ভয়াবহতা মারাত্মক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রত্যহ ২০ থেকে ২৫ বার বিদ্যুৎ আসা-যাওয়া করে। সারাদিন ঘনঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ঘটনা ঘটলেও ইফতারের আগে ও পরে এবং সেহরির সময় এর তীব্রতা বেড়ে যায়। ফলে প্রচন্ড গরমে ঘনঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাটে অতিষ্ট হয়ে উঠেছে এখানকার জনজীবন। তারা আরো জানান, কখনো কখনো সামান্য ঝড়ো হাওয়া বইলেই দিন-রাতের ১২ থেকে ২৪ ঘন্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ বন্ধ করে রাখা হয়। এরপর বিদ্যুৎ বিভ্রাটের বিষয়টি তাৎক্ষনিক জানারও উপায় থাকে না। প্রায় সময়ই বিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকে। বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার কত সময়ের মধ্যে আবার বিদ্যুৎ মিলবে এ বিষয়টি জানারও কোন উপায় থাকে না।
এদিকে, লোডশেডিং নামে বিদ্যুৎ বিভ্রাট বন্ধ, কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা এবং নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের দাবিতে বিক্ষুব্ধ গ্রাহকরা ইতোমধ্যে বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল, সড়ক অবরোধ, সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেছেন। শনিবার দুপুরে উপজেলার বৃহত্তর গোবিন্দগঞ্জ বাসীর উদ্যোগে গোবিন্দগঞ্জ সড়ক অবরোধ, বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন। এরআগে শুক্রবার দুপুরে উপজেলার সিংচাপইড় ইউনিয়নের সিরাজগঞ্জ বাজারে এলাকাবাসীর উদ্যোগে মানবন্ধন কর্মসূচী পালিত হয়। এছাড়া গত ৩ এপ্রিল বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ছাতকের অফিস ঘেরাও করে প্রকৌশলীকে আটকে রাখে পৌরসভার ১, ২ ও ৩ নং ওয়ার্ডের বিক্ষুব্ধ বাসিন্দারা।
এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পরিচালক সুয়েবুর রহমান জানান, গ্রাহকদের প্রতিনিধি হিসাবে গ্রাহকদের সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করাই আমার লক্ষ। বিদ্যুৎ বিভ্রাট রোধে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। ঝড়বৃষ্টিতে খুটির পাশের গাছ এবং গাছের ডাল লাইনে পড়ে মারাত্মক ঝুকিপূর্ন অবস্থা সৃষ্টি হয়। এর থেকে শর্টসার্কিটে প্রাণহানির মতো ঘটনাও ঘটতে পারে। তাই সতর্ক অবস্থানে থেকে কাজ করতে হয়। তবে এই বিশাল এলাকায় লোকবল সংকটের কারণে অনেক সময় কাজ সম্পন্ন হতে বিলম্ব হয়।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ছাতকের সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারণে অনেক সময় বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া সম্ভব হয় না। তবে দ্রুত এই সমস্যা কাটিয়ে উঠার জন্য কাজ চলছে।
Sharing is caring!