সিলেট ৫ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২রা জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৭:২৭ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৪, ২০১৯
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : গোলাপগঞ্জে এক আমেরিকান নাগরিককে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করায় গোলাপগঞ্জ থানার ওসি শিবলী,এক ইন্সপেক্টর ও ছয়জন এসআইসহ ১০জনকে আসামী করে আদালতে মামলা করেছেন ফলিক খাঁন। আদালত সেই মামলাটি তদন্ত করার জন্য দুর্নীতি দমন কমিশন দুদককে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। ১০/০২ ২০১৯ ইংরেজী তারিখে সিলেট বিশেষ জজ এবং জেলা ও দায়রা আদালতে গোলাপগঞ্জ উপজেলার বুধবারীবাজার ইউনিয়নের লামা চন্দরপুর গ্রামের হাজী মৃত আলতাব আলী খানের ছেলে বাংলাদেশী বংশদূত আমেরিকান নাগরিক ফলিক উদ্দিন খাঁন একটি এজাহার দাখিল করলে ১এপ্রিল মামলার তদন্ত ভার দুদকের হাতে তুলে দেন আদালত। এদিকে ওসি একেএম ফজলুল হক শিবলী গোলাপগঞ্জে আসার পর থেকে আইন-শৃঙ্খলার চরম অবনতি ঘটে। তিনি ২০০৯ সালের ২১ জুন সিলেটের বিয়ানীবাজার থানায় যোগদান করেন। সেই থানায় ২০১৩ সালের ১৯ নভেম্বর পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন। সেখান থেকে তিনি যোগদান করেন গোলাপগঞ্জ থানায়। এখনও ওই থানায় কর্মরত আছেন। তিনি ওই থানায় যোগদানের পর পরই গোলাপগঞ্জের কর্মরত সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়ও করেন। আইন-শৃঙ্খলা উন্নতির জন্য নতুন নতুন ফর্মুলার বার্তাও দেন এই বহুল আলোচিত ওসি। কিন্তু উনার যোগদারের পর থেকে আইন-শৃঙ্খলার চরম অবনতি ঘটে। রাত পোহালেই পত্রিকার পাতায় ডাকাতি, খুন,গুপ্ত হত্যা, ছিনতাই, চুরি ও অসামাজিক কর্মকান্ডে সংবাদ বেশির ভাগ সংবাদপত্রে সচিত্র সংবাদ প্রতিবেদন থাকে। অবশ্য ওসি শিবলী এর পরও বলেন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি আগের তুলনায় অনেক ভালো। শুধু তাই নয় তিনি ওই থানায় যোগদানের পর অনেক অসহায় লোককে দুর্ভল করার জন্য মিথ্যা মামলার আসামী করেছেন। অনেক লোকই এসব মিথ্যা মামলায় কেউ জেলের ভিতর আবার কেউ জামিন নিয়ে তারিখে তারিখে হাজিরা দিচ্ছেন। উনার যোগদানের পর কোন অসহায় লোক আইনী কোন সহায়তা পায়নি। উল্টো মিথ্যা মামলার আসামী হয়েছে। এসবের প্রতিবাদ করায় প্রবাসী সাংবাদিসহ কেউই উনার হাত থেকে রেহাই পায়নি। এ নিয়ে ভূক্তভোগিরা সু-বিচার পাওয়ার জন্য মহাপুলিশ পরিদর্শক (আইজিপি), সিলেটের ডি.আই.জি ও পুলিশ সুপারের কাছেও লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তাতে কোন কাজ হয়নি। অনেক আলোচিত সমালোচিত ঘটনা ঘটলেও আজো পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নজরে পড়েনি। ২০১৭ সালের ৪ই এপ্রিল খাদিজা বেগম (১০) নামে এক কাজের মেয়েকে ধর্ষণের পর তাকে হত্যা করা হয়। সে সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর থানার ভাটি তাহিরপুর গ্রামের দিনমজুর আলী নূরের মেয়ে। ঘটনার প্রায় ৫মাস পূর্বে গোলাপগঞ্জ উপজেলার বুধবারীবাজার ইউপির বণগ্রাম গ্রামের লন্ডন প্রবাসী মৃত মতিউর রহমানের স্ত্রী বেদেনা বেগমকে দেখা শোনা করার জন্য দেন নিহতের মা কুলছুমা বেগম। ঘটনার দিন রাত ৯টায় লন্ডন প্রবাসী পরিবারের একমাত্র লম্পট ছেলে কামরুল ইসলাম (২৫) ঘরে একা থাকায় কাজের মেয়ে খাদিজাকে ধর্ষণের পর হত্যা করে। ঘটনার দিন রাতেই গোপনে স্থানীয় প্রতিনিধিদের মেনেজ করে লাশ দাফনের চেষ্টা করলে এলাকার কিছু লোকের সন্দেহ হলে পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্ত শেষে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করে। এসময় ওই হত্যাকান্ডের প্রমাণ পাওয়ায় মৃত মতিউর রহমানের ছেলে কামরুলকে আটক করে। ঘটনার পরের দিন নিহতের মা বাদী হয়ে আটক কামরুলকে একমাত্র আসামী করে মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় পুলিশ কামরুলকে আটকের পর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর (অপারেশন) দেলোয়ার হোসেন সে খুন করেছে বলেও সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন। মামলা দায়েরের পর শুরু হয় লন্ডনী পরিবারের টাকার খেলা। বিভিন্ন কৌশলে মামলার বাদীর কাছ থেকে মোবাইল নিয়ে খুনি পরিবারের স্বজনরা জিম্মি করে রাখেন। এমনটাই জানা যায় ২০১৮ সালে নিহত খাদিজার মায়ের সাথে আলাপ করে। ২০১৮ সালের ১১ই মেয়ে খুনি নির্দোশ বলে মিথ্যা চূড়ান্ত রিপোর্ট আদালতে দাখিল করা হয়। পুলিশ ওই চূড়ান্ত রিপোর্টে পরবর্তী আর কোন আসামীর নামও দেয়নি। আজ কেমন আছে সেই কাজের মেয়ে খাদিজার মা-বাবা। কেউ জানে না। ২০১৭ সালের ২৯শে সেপ্টেম্বর গোলাপগঞ্জ কৈলাশটিলার এলপি গ্যাস ফিল্ডের সরকারি কর্মচারী এমাদ উদ্দিন (৪৪) এর বাড়ী থেকে বোতলজাত গ্যাস সিলিন্ডার জালিয়াতি করার সময় জালিয়াতির সরঞ্জামসহ তানভীর আহমদ (৩০) নামে এক শ্রমিককে আটক করে। এসময় (দুইশত আশি) টি গ্যাস সিলিন্ডার উদ্ধার করে পুলিশ। ওই শ্রমিক বরিশাল জেলার হিজলা থানার গুয়াবাড়ীয়া গ্রামের মৃত মোহাম্মদ আলী কাজির ছেলে। এলপি গ্যাস ফিল্ডের কর্মচারী এমাদ আটক শ্রমিক তানভীরসহ তার চাচাতো ভাইদের নিয়ে নিজ বাড়ীতে এক সিলিন্ডার দিয়ে দুই সিলিন্ডার বানিয়ে সাধারণ মানুষকে প্রতারণা করে আসছিলেন। ঘটনার দিন শুক্রবার বিকাল ৫টায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ সরকারি ওই প্লান্টের কর্মচারী এমাদের বাড়ী থেকে হাতে নাতে আটক করে। এমাদের ঘর থেকে এসব উদ্ধার হওয়ার বিষয়টিও সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন ওসি শিবলী। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে সরকারি কর্মচারী এমাদসহ ৪জনকে অভিযুক্ত করে জালিয়াতি ও প্রতারণা মামলা দায়ের করে। ২৩ নভেম্বর ২০১৭ইং পুলিশ এলপি গ্যাস ফিল্ডের সরকারী কর্মচারী এমাদ উদ্দিন ওই ঘটনার সাথে জড়িত ছিলেন না বলে মিথ্যা চূড়ান্ত রিপোর্ট আদালতে দাখিল করা হয়। ওই এমাদ গোলাপগঞ্জ উপজেলার ফুলবাড়ী ইউপির কিছমত মাইজভাগ গ্রামের রফিক উদ্দিনের ছেলে। এর আগে এলপি প্লান্টে বিভিন্ন দুর্নীতির কারণে আলোচনা সমালোনায় আসে এমাদ। বিগত সময়ে সিলিন্ডার জালিয়াতি করার সময় উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বিস্ফোরণে অগ্নি˜গ্ধ হয়ে ৫জনের প্রাণহানি ঘটে। ২০১৫ সালের ৫ডিসেম্বর জকিগঞ্জে মাদক সেবনের সময় ফিরোজ নামে গোলাপগঞ্জ থানার এক এসআইসহ ৩ জনকে আটক করে স্থানীয় জনতা। ঘটনার দিন রাতে গোলাপগঞ্জ থানার ওই দারোগা তার সহযোগীদের নেশা করে মাতলামি করছিল। এসময় জকিগঞ্জ উপজেলার বড়পাথর মাদ্রাসা এলাকার লোকজন তাদের ফেন্সিডিলসহ আটক করেন। পরে জকিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ডেকে ওই দারোগাসহ তাদের ৩ জনকে থানায় সোপর্দ করা হয়। ওই ওসির দায়িত্ব পালনকালে গোলাপগঞ্জ থানার এসআই ফিরোজ,এসআই মশিয়ুর, এসআই আশরাফ বিভিন্ন পুলিশ অফিসার মাদক সেবন ও দুর্নীতিসহ বিভিন্ন কারণে মিডিয়ায় আলোচনায় আসেন। অবশ্য পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তাদের শাস্তিমূলক বদলীও করেছেন। চলতি বছরের ১২ মার্চ গোলাপগঞ্জে পুলিশকে চাঁদা না দেয়ায় দুই পিক’আপ শ্রমিকের হাতে হাতকড়া লাগিয়ে লাঠিপেটা করে গোলাপগঞ্জ থানা পুলিশ। এ ঘটনায় উত্তেজিত শ্রমিকরা সিলেট-জকিগঞ্জ সড়ক প্রায় ৪ ঘন্টা অবরোধ করে রাখে। পরে ওসি ও গোলাপগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শ্রমিকদের সর্বোচ্চ বিচার পাইয়ে দেওয়ার আশ^াস দিলে শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ তুলে নেয়। এ ঘটনার অভিযুক্তরা ওই থানায় এখনও বহাল তবিয়তে রয়েছেন। ২০১৮ সালের ২৭শে নভেম্বর দুপুরে অজানা মামলায় ফলিক উদ্দিন (৪৫) নামে এক আমেরিকা প্রবাসীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তিনি গোলাপগঞ্জ উপজেলার বুধবারীবাজার ইউনিয়নের লামা চন্দরপুর গ্রামের মৃত আলতাব আলীর পুত্র। মিথ্যা এ মামলায় একমাস কারাভোগের পর তিনি জামিনে মুক্ত হন। বর্তমানে মামলাটি বিচারাধিন রয়েছে। এ ঘটনায় ফলিক খাঁন বাদী হয়ে চলতি বছরের ১০/০২ ২০১৯ ইংরেজী ওসি শিবলীকে প্রধান আসামী ও অন্যান্য পুলিসহ ১০ জনকে আসামী করে আদালতে মামলা করেন। আদালত মামলাটি তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সিলেট দুর্নীতি দমন কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছেন। ওই মামলায় বাদী উল্লেখ করেন তাঁর প্রাইভেট কারসহ তাকে আটক করার পর সাথে থাকা প্রায় ২লক্ষ টাকা থানা পুলিশ নিয়ে যায়। নিজের ব্যক্তিগত বিশেষ কাজে তিনি প্রাইভেট কারযোগে গোলাপগঞ্জে আসেন। চলতি সপ্তাহের গত ১এপ্রিল দিবাগত রাত আড়াইটায় গোলাপগঞ্জ ভাদেশ্বর ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি লুৎফুর রহমান বাড়ীতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ১০/১২ জনের মুখোশ পরা ডাকাতদল বাড়ীতে একা থাকা ওই আ.লীগ নেতাকে বাথরুমে আটকিয়ে ২৫ ভরি স্বর্ণলংঙ্কা ও নগদ টাকাসহ ১৫ লাখ টাকার মালামাল লুট করে। এ ঘটনার খবর পেয়ে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এমপি আইন-শৃঙ্খলা অবনতির জন্য ক্ষোভ ঝাড়েন। গেল মাসের ৩০মার্চ গোলাপগঞ্জ পৌরসভার কদমতলী বাজার এলাকায় ৩টি দোকান চুরি হয়। চোরচক্রের সদস্যরা দোকানের সামনের তালা ভেঙে নগদ টাকাসহ প্রায় ৪লাখ টাকার মালামাল চুরি করে। চলতি বছরের ২২মার্চ নিখোঁজের ৩দিন পর আব্দুস শহীদ (৪৫) নামে এক দিনমজুরের গলাকাটা ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সে উপজেলার লক্ষিপাশা ইউপির নিমাদল পূর্বপাড়া গ্রামের মৃত দাইমুল্লাহ আলীর ছেলে। এ ঘটনা নিহতের পরিবার মামলা করলেও আসামীরা প্রবাবসালী হওয়ায় সু-বিচার পাওয়া নিয়ে উৎকণ্ঠায় রয়েছে। বিগত ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারী গোলাপগঞ্জ পৌর চৌমুহনীতে ব্যবসায়ী ও সিএনজি শ্রমিকদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে এ ঘটনায় তিনটি মামলা হয়। শ্রমিক বাদী মামলায় কাওছার নামে স্থানীয় এক সাংবাদিককে আসামী করা হয়। তিনি ওই মামলায় এখনও আদালতে হাজিরা দিচ্ছেন বলে মহাপুলিশ পরিদর্শক (আইজিপি) ’র কাছে দেওয়া একটি অভিযোগ সূত্রে জানা যায়। ওই মিথ্যা মামলার সু-বিচার পাওয়ার আশায় সিলেট পুলিশ সুপার ও ডি.আইজি মহোদয় বরাবর একটি অভিযোগও দিয়েছেন। ২০১৮সালে প্রায় ৮টি হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে। এ বছর ছিল উপজেলাবাসীর কাছে আলোচিত-সমালোচিত। অনেক হত্যাকান্ডে ছিল রহস্যে ঘেরা। সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা ছিল এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রত্যাশি আমির হত্যাকান্ড ও মুহিবুর হত্যাকান্ডের ঘটনা। রহস্যঘেরা ছিল অজ্ঞাত যুবতির গলা কাটা লাশে। এ ঘটনার এখনও কোন ক্লু উদঘাটন হয়নি। ওই আলোচিত বছরে যারা খুন হলেন, দিনমজুর আছবার, গৃহবধূ শাম্পু,পরীক্ষার ফল প্রত্যাশি আমির, কৃষক আতিকুর,মাদক ব্যবসায়ী লিপন,ব্যবসায়ী মুহিবুর,দিনমজুর আজমল আলী ও অজ্ঞাত মহিলা। ২০১৭ সালের বছর জুড়ে ঘটেছে ১৩টি হত্যাকা-, ৫টি আত্মহত্যা ও ২টি রহস্যজনক মৃত্যু ও ২টি বড় ধরনের সংঘর্ষের ঘটনা। তাছাড়া ২০১৪,২০১৫,২০১৬ সালে ওই ওসির আমলে হত্যাকান্ড, আত্মহত্যা, রহস্যজনক মৃত্যুসহ আরো প্রায় ৫০টি প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। উপরোক্ত বিষয়ে গোলাপগঞ্জ মডেল থানার ওসি একেএম ফজলুল হক শিবলীর সাথে আলাপকরা হলে তিনি বলেন, অনেক দিন আগের ঘটনা। সকল বিষয় আমার নলেজে নেই। কাজের মেয়ে খাদিজা ও সিলিন্ডার জালিয়াতির চার্চশীটের বিষয়টি জানতে চাইরে তিনি বলেন রিপোর্ট’টি আমাদের থানা দেয়নি। এব্যাপারে সিলেট জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ মাহবুবুল আলমের সাথে আলাপ করা হলে তিনি বলেন, এসব বিচ্ছিন্ন ঘটনা। তবে আমাদের কঠোর নজরদারি রয়েছে। নিহত কাজের মেয়ে খাদিজা ও সিলিন্ডার জালিয়াতির চার্চশীটের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওই সময় আমি সিলেটে ছিলাম না।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd