মো. আবুল কাশেম, বিশ্বনাথ থেকে :: ৫ম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে মাঠে তৎপর রয়েছে সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলা আওয়ামী লীগ। গেল দু’টি সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী না থাকায় অনেকটা নির্জীব নেতাকর্মীদের মধ্যেও উপজেলা নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রাণচাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে দলীয় নির্দেশনা মোতাবেক চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৮জনকে বাছাই করেছে দলটি। এসব প্রার্থীদের পক্ষে জনমত তৈরীতে প্রচারণা চালাচ্ছেন নেতাকর্মীরা। ইতিমধ্যে নৌকার পক্ষে ভোট টানতে দলের সম্ভাব্য চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীরা রাত-দিন মাঠ-ঘাট চষে বেড়াচ্ছেন। অন্যদিকে নির্বাচন নিয়ে নিরুত্তাপ বিশ্বনাথ উপজেলা বিএনপি। প্রচার-প্রচারণায় মাঠে নেই তারা। এখনও হয়নি দলীয় ভাবে প্রার্থী নির্ধারণ। দলীয় সূত্র জানায়, কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছে দলটি। তবে, ফেসবুকে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন কেউ কেউ। দলীয় প্রতিকের নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিলে বিশ্বনাথ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি মধ্যেই মূল লড়াই হবে বলে মনে করছেন অনেকেই।
জানা গেছে, দলীয় নির্দেশনা মোতাবেক চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৮জনকে প্রাথমিক ভাবে নির্ধারণ করেছে উপজেলা আওয়ামী লীগ। জেলা আওয়ামী লীগ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরীর উপস্থিতিতে দলটির বিশেষ বর্ধিত সভায় ওই আটজনকে বাছাই করা হয়। বাছাই করা ৮জন প্রার্থীর মধ্য থেকে তিনটি পদের জন্যে ৩জনকে চূড়ান্তভাবে মনোনয়ন প্রদান করবে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ।
উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন ও ৭২টি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের সমর্থনের প্রেক্ষিতে চেয়ারম্যান পদে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য এসএম নুনু মিয়া, বিশ্বনাথ উপজেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট গিয়াস উদ্দিন আহমদ ও উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক আলতাব হোসেন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা প্রনঞ্জয় বৈদ্য অপু, উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ফজর আলী মেম্বার ও যুক্তরাজ্যের বার্মিংহাম আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম শামীম এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিয়াম ল্যাবরেটরী ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের প্রিন্সিপাল মনি কাঞ্চন চৌধুরী ও জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত উদ্যোক্তা রুবা খানমকে প্রার্থী নির্ধারণ করা হয়।
অন্যদিকে, নির্বাচনের কোন আমেজ নেই উপজেলা বিএনপিতে। কেন্দ্রীয় নির্দেশনা না থাকায় দলীয়ভাবে এখনও হয়নি প্রার্থী নির্ধারণ। উপজেলা নির্বাচন নিয়ে দলের কোন সিদ্ধান্ত না আসায় মাঠেও নামতে পারছেন না তারা। উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান বিএনপির হলেও আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে নিস্ক্রিয় দলের নেতাকর্মীরা। এখনও মাঠে প্রচার-প্রচারণায় দেখা যায়নি তাদের। তবে উপজেলা পরিষদের বর্তমান দায়িত্বশীল বিএনপি নেতারা কৌশলে নিজেদের প্রচারণা অব্যাহত রেখেছেন। উপজেলা নির্বাচনে আদৌ বিএনপি অংশ নিবে কি না? এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে উপজেলা বিএনপিতে। দল অংশ না নিলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিএনপি নেতারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন বলে একটি সূত্র জানিয়েছে। তবে, আপাতত প্রার্থী হিসেবে নাম উঠেছে ‘নিখোঁজ’ বিএনপি নেতা এম. ইলিয়াস আলীর ছোট ভাই কেন্দ্রীয় সেচ্ছসেবক দলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক এম. আসকির আলী, বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও সিলেট জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি সুহেল আহমদ চৌধুরী, বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আহমেদ নূর উদ্দিনের।
এ বিষয়ে কথা হলে উপজেলা বিএনপি সভাপতি জালাল উদ্দিন বলেন, আমরা দলীয় সিদ্ধান্তের অপেক্ষায়। দল সিদ্ধান্ত দিলে অবশ্যই আমরা প্রতিদ্বন্ধিতা করবো। যদি দল অংশ না নেয়? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তখন সময়ই বলে দেবে আমাদের করণীয়।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. আসাদুজ্জামান বলেন, দলের নির্দেশনানুযায়ী প্রার্থী বাচাই করে পাঠানো হয়েছে। আমরা নৌকার পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি করতে ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছি। বাচাইকৃতদের মধ্যে দল যাদেরই মনোনীত করবে আমরা তাদের বিজয় সুনিশ্চিত করতে প্রস্তুত রয়েছি। আমরা আশা করি, গত সংসদ নির্বাচনের মতো এবারের উপজেলা নির্বাচনেও সারাদেশে নৌকার বিজয় হবে ইনশাআল্লাহ।
Sharing is caring!