সিলেট ৬ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২২শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১০ই মহর্রম, ১৪৪৭ হিজরি
প্রকাশিত: ৬:১৬ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৩, ২০১৯
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি :: সুনামগঞ্জের তাহিরপুর,বিশ্বম্ভরপুর ও সুনামগঞ্জ সদর উপজেলায় স্বাস্থ্য বিভাগের দূর্নীতিবাজ তিন কর্মকর্তাকে বদলির ঘটনায় তিন উপজেলায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। শান্তির আর সমৃদ্ধির শহর সুনামগঞ্জের মতো স্থানে তাদের বদলির আদেশে স্থানীয় নাগরিকদের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। দূর্নীতিবিরোধী আন্দোলনের কর্মীরা এই দূর্নীতিবাজদের সুনামগঞ্জের বদলে অন্যত্র বদলিসহ তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
জানাযায়,স্বাস্থ্য বিভাগে দীর্ঘদিন ধরে দূর্নীতির সাম্রাজ্য বিস্তার করে টাকার মালিক হয়েছেন ২৩কর্মকর্তা ও কর্মচারী। দুদক তাদেরকে বদলির পাশাপাশি বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে স্বাস্থ্য বিভাগকে দুদকের নির্দেশে স্বাস্থ্য বিভাগের এই সিন্ডিকেটের বলয় ভাঙ্গতে তাৎক্ষণিক ভাবে বদলির সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এর ধারাবাহিকতায় গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের যুগ্মসচিব (পার-২)একেএম ফজলুল হক খান স্বাক্ষরিত এক পত্রে স্বাস্থ্য বিভাগের আলোচিত দূর্নীতিবাজ ২৩কর্মকর্তাকে দেশের বিভিন্ন স্থানে বদলির আদেশ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে তিন দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তা রংপুর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালকের কার্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোঃ জাহাঙ্গীর আলমকে সুনামগঞ্জ সিভিল সার্জন কার্যালয়ে,চট্টগ্রাম স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালকের কার্যালয়ের প্রধান সহকারি ফয়জুর রহমানকে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কার্যালয়ের উচ্চমান সহকারী তৈয়বুর রহমানকে তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বদলির আদেশ দেওয়া হয়েছে।
এই তিন দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তাকে সুনামগঞ্জে বদলি করার আদেশের পরই তিন উপজেলার স্থানীয় সুধীজন,স্বাস্থ্য বিভাগের সংশ্লিষ্ট লোকজন,বিভিন্ন রাজনৈতিক ও পেশাজীবী দলের সচেতন লোকজন ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা অনেকেই এই বদলি আদেশের পর ক্ষোভ প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মন্তব্য করেছেন। সুনামগঞ্জে চিকিৎসকদের সংগঠন মেডিকেল এসোসিয়েশন সুনামগঞ্জ এর নেতারাও এ ঘটনাকে সুনামগঞ্জ স্বাস্থ্য বিভাগের জন্য অশনিসংকেত হিসেবে দেখছেন।
এদিকে,এই দুই দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তার পাশাপাশি সুনামগঞ্জের স্বাস্থ্য বিভাগের অফিসের কয়েকজন দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে দাবি জানিয়েছেন সুধীজন। দীর্ঘদিন ধরে তারা একই স্থানে থেকে পুরো স্বাস্থ্যখাত কুক্ষিগত করে ওপেন দূর্নীতি করে টাকার কুমির সেজেছেন বলে মনে করেন সুধীজন। সুনামগঞ্জের স্বাস্থ্য বিভাগের দূর্নীতিবাজ এই সিন্ডিকেট ভাঙ্গার দাবি জানিয়েছেন তারাও।
সুনামগঞ্জ বিএমএর সাংগঠনিক সম্পাদক ডাঃ সৈকত দাস বলেন, চিহ্নিত দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের সুনামগঞ্জে বদলি করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্বাস্থ্য বিভাগের এই নেতা। এই খবর সুনামগঞ্জবাসীর জন্য একটি দুঃসংবাদ।
সুনামগঞ্জের দূর্নীতিবিরোধী আন্দোলনের পরীক্ষিত নেতা মুক্তিযোদ্ধা মালেক হুসেন পীর বলেন, এই দূর্নীতিবাজ আমাদের স্বাস্থ্য বিভাগের স্থানীয় দূর্নীতিবাজদের সঙ্গে নিয়ে সিন্ডিকেট গড়ে তোলতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। সুনামগঞ্জ কোন পরীক্ষিত দূর্নীতিবাজের বদলি স্থান হতে পারে না। তিনি বলেন,ওদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
এ বিষয়ে তাহিরপুরের সচেতন নাগরিক ও ব্যাবসায়ী নাজমুল হুদা সংগ্রাম,সাদেক আলী,রমজান আলীসহ অনেকেই বলেন,আলোচিত দূর্নীতিবাজ কর্মচারীকে তাহিরপুর থেকে অন্যত্র বদলি করা হোক। সেই সাথে তার বিরুদ্ধে দূর্নীতির শাস্তির দাবীও জানান তিনি।
তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন বলেন,শুনেছি ২৩জনের একজনকে তাহিরপুর বদলি করা হয়েছে। তবে এখনো কোন কাগজপত্র আমি পাইনি।
তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কামরুল বলেন,স্বাস্থ্য বিভাগের ২৩ দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তা কর্মচারীদের মধ্যে একজন কে তাহিরপুর বদলি করার আদেশের পর-পরই স্থানীয় সুধীজন,স্বাস্থ্য বিভাগের সংশ্লিষ্ট লোকজন,বিভিন্ন রাজনৈতিক ও পেশাজীবী দলের সচেতন লোকজন ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। আমরা তাহিরপুরবাসী চাই এই দূর্নীতিবাজ কর্মচারীকে স্বাস্থ্য বিভাগ অন্যত্র বদলি করবে।
সুনামগঞ্জ সিভিল সার্জন ডাঃ আশুতোষ দাস বলেন,বদলির খবর শুনেছি। তবে এখনো কোন কাগজপত্র পাইনি আমরা।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd