সিলেটের আদালত পাড়ায় ভূয়া মহিলা আইনজীবী আটক : ভিজিটিং কার্ড উদ্ধার

প্রকাশিত: ৯:৩৩ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৫, ২০১৮

সিলেটের আদালত পাড়ায় ভূয়া মহিলা আইনজীবী আটক : ভিজিটিং কার্ড উদ্ধার

স্টাফ রিপোর্টার :: সিলেটের আদালত পাড়া থেকে আরেক মহিলা ভূয়া আইনজীবীকে আটক করেছেন আইনজীবীরা। গতকাল সোমবার দুপুরে ঐ ভূয়া আইনজীবী মহিলাকে আটক করা হয়।

এ সময় তার কাছ থেকে কয়েকটি ভিজিটিং কার্ডও উদ্ধার করেন আইনজীবীরা। আদালতে আটক ভূয়া মহিলা আইনজীবী হলেন, শেরপুর জেলার ঝিনাইদহ থানার মাজলিগান্দা গ্রামের ফকির মুন্সির স্ত্রী চাদনী মনি। সে বর্তমানে দক্ষিন সুরমা উপজেলার ভার্থখলা এলাকায় বসবাস করে আসছে।

আটকের পর তার কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির নেতৃবৃন্দ। এর আগে বৃহস্পতিবার (২০ ডিসেম্বর) এক ভুয়া আইনজীবী ও আরেক আইনজীবী সহকারিকে আটক করা হয়েছিল।

আদালত সূত্র জানায়, সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য ও আইনজীবী পরিচয় দিয়ে দীর্ঘ দিন থেকে প্রতারণা করে আসছেন এক মহিলা। সেই খবর পেয়ে বিভিন্নভাবে তথ্য নিয়ে আইনজীবীরা জানতে পারেন, দক্ষিণ সুরমা তথা সিলেটের বিভিন্ন স্থানে আইনজীবী পরিচয়ে চাদনী মনি বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে টাকা পয়সা হাতিয়ে নিচ্ছে।

এ বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর গতকাল সোমবার দুপুরে কৌশলে চাদনীকে আদালতে ডেকে আনেন আইনজীবীরা। সেখানে আসার পর তাকে সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির কার্যালয়ে আটক করে রাখা হয়। পরবর্তীতে আইনজীবী সমিতির সভাপতির কক্ষে তাকে নিয়ে যাওয়া হলে তার কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ ভিজিটিং কার্ড উদ্ধার করা হয়।

সেই কার্ডগুলোর দু পাশেই লেখা রয়েছে। একপাশে লেখা, এডভোকেট ও ৫ নম্বর বার হলের ঠিকানা। আর অন্যপাশে রয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি সম্বলিত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের স্লোগান। সেখানে আরো লেখা রয়েছে এ্যাডভোকেট চাদনী মনি মহিলা সম্পাদিকা, বাংলাদেশ কৃষক লীগ, সিলেট মহানগর। তবে কৃষক লীগের সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ জানান, চাদনী মনি নামের তাদের কোন নেত্রী আছে বলে জানা নেই।

আইনজীবীরা জানান, চাদনী মনি আইনজীবী পরিচয়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে লোকজনের টাকা পয়সা হাতিয়ে নেয়া সহ আইনজীবী সমিতিতে তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে। শুধু তাই নয় চাদনী আইনজীবী পরিচয় ব্যবহার করে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র ও ২৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর তৌফিক বক্স লিপন এর সাথে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অতিথিও ছিল। সর্বশেষ অতিথি হয়ে দক্ষিণ সুরমায় শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্টানে উপস্থিত থেকে আইনজীবী পরিচয়ে তা বিতরণ করেন। কিন্তু সিলেট জেলা আইনজীবীতে কোথাও চাদনী মনি নামের কোন আইনজীবী নেই।

এ ব্যাপারে সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ লালা জানান, এক ভূয়া মহিলা আইনজীবীকে আটক করেন আইনজীবীরা। পরবর্তীতে তার কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। সে মুচলেকায় উল্লেখ করেছে ভবিষতে আর কখনও আইনজীবী পরিচয় বহন করবে না। আর কোথাও এই পরিচয়ও দিবে না।

সিলেট সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র তৌফিক বকস লিপন জানান, তাকে একটি শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্টানে অতিথি হিসাবে আমন্ত্রণ করা হলে তিনি সেখানে গিয়ে উপস্থিত হন। কিন্তু তিনি জানতেন না চাদনী মনি যে ভূয়া আইনজীবী । তবে আজকে (গতকাল) তিনি ফেইসবুকের মাধ্যমে দেখতে পেয়েছেন আদালত পাড়ায় ভূয়া আইনজীবী হিসাবে চাদনী মনি আটক হয়েছেন।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (২০ ডিসেম্বর) এক ভুয়া আইনজীবী ও আরেক আইনজীবী সহকারিকে আটক করা হয়েছিল। এর মধ্যে ভুয়া আইনজীবী হলো লুতফুর রহমান জবলু। সে বিয়ানীবাজার উপজেলার তাজপুর গ্রামের আব্দুল হাসিবের ছেলে। এছাড়া আইনজীবী সহকারি শামিম উদ্দিন খান সিলেট নগরীর ৮৪ নং ইঙ্গুলাল রোড, কুয়ারপাড় এলাকার বাসিন্দা।

Sharing is caring!

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..