সিলেটের মানুষকে নিশ্চিত মৃত্যুর দিকে নিচ্ছে ফুচকা ব্যবসায়ীরা

প্রকাশিত: ৭:৪০ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৪, ২০১৮

সিলেটের মানুষকে নিশ্চিত মৃত্যুর দিকে নিচ্ছে ফুচকা ব্যবসায়ীরা

ক্রাইম প্রতিবেদক :: নিয়ম-কানুন না মেনেই সিলেট নগরীতে একের পর এক ফুচকার ফ্যাক্টরী গড়ে উঠছে। এসব ফ্যাক্টরী থেকে নির্গত ক্ষতিকর ফুচকা তৈরী করা হয় যা মানুষের স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলছে। সিলেট মহানগরী লালদীঘির পাড়,মহাজন পট্টী,সোবহানীঘাট এলাকায় চটপটি ও ফুচকার দোকানে ক্ষতিকর মাত্রায় ব্যবহৃত হচ্ছে সোডিয়াম সাইট্রেট নামে একটি কেমিক্যাল। খাদ্যকে টকের সংমিশ্রনে এনে আরো সুস্বাদু করতে তেঁতুলের পরিবর্তে ব্যবহৃত হচ্ছে এ কেমিক্যাল। আর এতে করে ধীরে ধীরে একজন সুস্থ মানুষও এগিয়ে যাচ্ছেন নিশ্চিৎ মৃত্যুর দিকে। কারণ এ কেমিক্যাল ব্যবহারে মানুষের হৃদরোগ, লিভার সিরোসিস, কিডনি সমস্যা, এমনকি ক্যান্সারও হতে পারে বলে জানিয়েছেন নিউট্রিশিয়ান ও খাদ্য বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু তাদের ফুচকা কিছু মুদি দোকানে প্রকাশ্যেই বিক্রি হচ্ছে সোডিয়াম সাইট্রেট। আর সবকিছু জেনেশুনে তা ব্যবহারের জন্য নিয়ে যাচ্ছেন কতিপয় চটপটি ও ফুচকা ব্যবসায়ীরা।

শিশু, কিশোর-কিশোরী, যুবক, বৃদ্ধ সব বয়সের মানুষের কাছেই চটপটি ও ফুচকা একটি রুচিকর খাবার। বিশেষ করে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীদের কাছে প্রিয় এ খাবার। ফলে শহরের বিভিন্ন স্কুল-কলেজের সামনে সড়কের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে এবং বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে সকাল থেকে গভীর রাত অবধি চটপটি ও ফুচকার পসরা সাজিয়ে বসেন দোকানিরা। প্রতিদিনই দোকানিরা গ্রাহকদের কাছে পরিপাটি করে উপস্থাপন করেন এ খাবার। কিন্তু শুধু চটপটি ও ফুচকা খেতে কারোরই ভালো লাগবে না। এটাকে সুস্বাদু করতে একটি জিনিস খুব প্রয়োজনীয়। আর তা হলো টক পানীয়। সচরাচর টক তৈরিতে তেঁতুলের ব্যবহার হলেও অধিক লাভের আশায় ভিন্নকিছু দিয়ে তৈরি হচ্ছে সেই টক। যাতে প্রতিদিন নিশ্চিত একশ’ টাকা লাভ। আর এই একশ’ টাকা লাভের জন্য শত শত গ্রাহককে মৃত্যুর পথে ধাবিত করছেন অধিকাংশ চটপটি ও ফুচকা ব্যবসায়ী।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছিুক দু’জন ফুচকা ব্যবসায়ী জানান, দীর্ঘদিন ধরে তারা টক তৈরিতে ব্যবহার করছেন ‘সাইট্রেট’। মাত্র ১৫ টাকার সাইট্রেট কিনলে সারাদিনের টকের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব। অথচ ওই পরিমাণ টক তৈরিতে দেড়শ’ থেকে ২শ’ টাকা লাগতো। তাছাড়া তেঁতুলের টক গন্ধ হলেও এ টক গন্ধ হয় না। ফলে অহেতুক টক ফেলেও দিতে হয় না। তারা আরো জানান, সিলেটের অধিকাংশ চটপটি ব্যবসায়ী টক তৈরিতে সাইট্রেট ব্যবহার করে। কারণ ১শ’ গ্রাম সাইট্রেটের সাথে সর্বোচ্চ ২শ’ গ্রাম তেঁতুল মিশিয়ে সারাদিন বেচাকেনা করা সম্ভব। তারা আরো বলেন, বড় বাজারের বিভিন্ন মুদি ও মসলার দোকানে এ সাইট্রেট পাওয়া যায়।

নগরীর সুরমার পার এলাকার একটি চটপটির দোকানির সাথে কথা বললে তিনি জানান, অনেক আগে ব্যবহার করতাম। এখন আর করি না। শহরের গাড়িখানা রোডের এক দোকানি বলেন, আমরা তেঁতুল দিয়ে টক করি। কিন্তু খোঁজ নিয়ে জানা গেছে প্রকাশ্যে তেঁতুল মিশিয়ে টক তৈরি করলেও লবনের নামে সাদা যে বস্তু দেয়া হয় আসলে সেটি সাইট্রেট, তথা সোডিয়াম সাইট্রেট।

নগরীর বেশ কয়েকটি দোকানে গিয়ে খুঁজে পাওয়া যায় ক্ষতিকর কেমিক্যাল সাইট্রেট। দোকানিরা এটাকে সাইট্রিক এসিড নামে চেনেন। প্রতিকেজি খুচরা সাইট্রেটের মূল্য ১৫০ টাকা (একশ গ্রাম থেকে ৬শ’ গ্রাম পর্যন্ত।) তবে এককেজি নিলে ১২০ টাকায়ও বিক্রি হয়।

এ সময় ওই দোকানেই সাইট্রেট কিনছিলেন বিপ্রজিৎ মন্ডল। তিনি বলেন, পানির ফিল্টারের আয়রণ পরিস্কারের জন্য তিনি ২শ’ গ্রাম কিনেছেন। কিন্তু এটি খাওয়া যায় কি না তা তার জানা নেই। এসকল ফুচকা ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্তা নিতে প্রশাসনের আশু প্রদেক্ষেপ কামনা করছেন সচেতন মহল। আগামী পর্বে আসছে ফুচকা কারখানা নিয়ে বিস্তারিত দেখতে সাথে থাকেন—-

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..