সিলেট ৭ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৩শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১১ই মহর্রম, ১৪৪৭ হিজরি
প্রকাশিত: ২:০৯ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৮
স্টাফ রিপোর্টার :: সিলেট সিটি করপোরেশন ও সদর উপজেলা নিয়ে গঠিত সিলেট-১ আসনের উন্নয়নের কৃতিত্ব নিয়ে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছেন এ আসনের জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও মহাজোটের প্রার্থী। বিএনপির নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির বলেছেন, গত ১০ বছর ধরে সিলেট-১ আসনে জনগন উন্নয়ন বঞ্চিত। এ আসনের সংসদ সদস্য দেশের একজন ক্ষমতাধর মন্ত্রী হয়েও সিলেটবাসীর প্রত্যাশা পূরণে সক্ষম হননি। বিএনপির সরকার ক্ষমতা ত্যাগের প্রাক্কালে সিলেট সদর উপজেলা ও মহানগরে যে অসমাপ্ত উন্নয়ন কর্মকান্ড রেখে গিয়েছিলেন তা সম্পূর্ণ করতে পারলেই সিলেটের চেহারা পাল্টে যেত। অন্যদিকে মহাজোটে প্রার্থী ড. একে আব্দুল মোমেন উন্নয়ন নিয়ে বিএনপি মিথ্যাচার করছে বলে দাবী করেছেন। তিনি বলেছেন, অন্ধ লোকও বিশ্বাস করবে না সিলেটেরে উন্নয়ন হয়নি। সিলেট-১ আসনে বিগত দশবছরের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের হাত ধরেসিলেটের সকল ক্ষেত্রেই উন্নয়ন হয়েছে। উন্নয়ন অস্বীকার করা, মিথ্যাচার ও দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করাই বিএনপির কাজ। সিলেট সিটি করপোরেশন ও সদর উপজেলায় যেসব উন্নয়ন হয়েছে সেটা দৃশ্যমান। তিনি আরো বলেছেন, সিলেট সিটি করপোরেশন এলাকায় অর্থমন্ত্রীর বরাদ্দে যেসব উন্নয়ন হয়েছে তা নিজের কৃতিত্ব দেখিয়ে বিগত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থীও উন্নয়নের প্রচারণা চালিয়েছেন। অথচ এখন সিলেট-১ আসনে বিএনপি প্রার্থী অস্বীকার করে বলছেন, সিলেটে কোন উন্নয়নই হয়নি। এটা অত্যন্ত দু:খজনক। এদিকে সাংবাদিকেদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় খন্দকার মুক্তাদির বলেন, সিলেটে সিটি করপোরেশনে আগে আওয়ামী লীগের মেয়র ও মন্ত্রী ছিলেন। তখন উন্নয়ন হয়নি। যেদিন থেকে সিটি করপোরেশনে বিএনপি প্রতিনিধি বসেছেন যেদিন থেকেউ উন্নয়ন শুরু হয়েছে। বিএনপির আর উন্নয়ন সমার্থক শব্দ। তিনি বলেন, আজো যেদিকে চোখ যায় বিএনপির আমলে সাইফুর রহমানের উন্নয়ন চোখে পড়ে। কিন্তু সরকার দলীয় নেতাদের ব্যার্থতায় সেই উন্নয়নের ধারাবাহিকতা ব্যাহত হয়েছে। দুটি সরকারি স্কুল প্রতিষ্ঠার কথা ১২ বছর আগে বলে গেলেও এখনো একটি চালু হয়নি। কোনও কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়নি সিলেটে। সরকারী-বেসরকারি চাকুরী মন্ত্রী আর নেতাদের আতœীয় ছাড়া কেউ পায়নি। সিলেটে গ্যাস সংযোগ দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ। ফলে বিকাশমান আবাসন খাত ধ্বংস হয়েছে।সিলেটে বিদ্যুৎ বিভ্রাট কমেনি। ওসমানী বিমানবন্দরের মান বাড়েনি। সিলেট থেকে লন্ডনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সরকারি ফ্লাইট চালু হয়নি।ঢাকা-সিলেট চার লেন সড়কের সপ্ন ১০ বছর আগে দেখানো হলেও তা এখনো হয়নি।সিলেটে নির্বাচনী প্রচারে এসে বিএনপির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান নজরুল ইসলাম খানও সিলেটে উন্নয়ন হয়নি বলে দাবী করেছেন। তিনি বলেছেন, সিলেটের মানুষ তাদের অনির্বাচিত এমপি মুহিত সাহেবকে দেখেছে। সিলেটের মানুষের সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক ছিল না। ভোট নিয়ে তিনি ঢাকায় বসেছিলেন। সিলেটে আসেননি। আর এ কারণেই তিনি প্রত্যাখ্যাত হওয়ার ভয়ে ভোট থেকে সরে গেছেন। তার ভাই মোমেনও সারা জীবন সিলেটের বাইরে কাটিয়েছেন। এখন বসন্তের কোকিলের মতো ভোট চাইতে এসেছেন। ভোটের পর আর তাকে কাছে পাবে না সিলেটবাসী।বিএনপি নেতাদের এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মহাজোটের প্রার্থী আব্দুল মোমেন বলেছেন, সিলেট সিটি ও সদর উপজেলায় বিগত দশ বছরে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আরো কয়েক হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। তিনি বলেন, সিলেট-১ আসন ছাড়াও বিভাগের বিভিন্ন মেগাপ্রকল্প অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের হাত ধরে হয়েছে। এর মধ্যে সাড়ে পাঁচশ’ কোটি টাকা ব্যয়ে সিলেট-ভোলাগঞ্জ মহাসড়ক, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ছয় লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্প অনুমোদন, আখাউড়া-সিলেট ব্রডগেজ লাইন নির্মাণ প্রকল্প, ৪৫২ কোটি টাকা ব্যয়ে ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর স¤প্রসারণ ও আন্তর্জাতিক মানদন্ডে উন্নীতকরণ প্রকল্প, সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাসহ বেশ কিছু প্রকল্প রয়েছে। যার মাধ্যমে সিলেটবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ও প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটেছে। ড. মোমেন অর্থমন্ত্রী প্রসঙ্গে আরোও বলেন, দশম জাতীয় সংসদের সমাপনী অধিবেশনে অবসরে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে সিলেট-১ আসনের সংসদ সদস্য ও অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তাঁর ক্ষমতার মোহ নেই, তিনি একজন বিশ্ববরেণ্য অর্থনীতিবিদ।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd