সিলেট ১লা জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৭ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ৫ই মহর্রম, ১৪৪৭ হিজরি
প্রকাশিত: ৯:৫২ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৪, ২০১৮
স্টাফ রিপোর্টার :: ইঞ্জিনিয়ার ড. মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ সিলেট পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করে আসছেন বিগত ১ বছর যাবত। তার আসার পর থেকেই ইন্সটিটিউটের পরিবেশ আরো অবনতির দিকে ধাবিত হয়। সাধারণ শিক্ষার্থীদেরকে হেনস্তা থেকে শুরু করে দুর্নীতি করে তাদের কাছ থেকে টাকা আদায়, প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের জোরপূর্বক স্বাক্ষর নিয়ে ১ লক্ষ টাকার ভাউচার ৩০ লক্ষ টাকায়ও পরিণত হয়। কলেজের অব্যবহৃত ফাইল-কাগজপত্রাদি, বিভিন্ন ধরনের পুরোনো আসবাবপত্র, ব্যবহারিক ক্লাসের জিনিসপত্র বিক্রি করে অধ্যক্ষ ইঞ্জিনিয়ার ড. মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ ইলেকট্রনিক্স বিভাগের বিভাগীয় প্রধান আ খ ম সাহাজ উদ্দিন এবং কলেজের ছাত্রলীগ নেতা সৈকত চন্দ্র রিমি ও তার অনুসারী তাওহীদ হাসানকে নিয়ে ভাগভাটোয়ারা করে নেন। মোটা অঙ্কের অর্ধেক টাকা দিতে হয় সৈকত চন্দ্র রিমিকে। অবৈধভাবে নেয়া এই টাকার হদিস দেখানোর জন্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের জোরপূর্বক স্বাক্ষর নিয়ে প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন বাবত খরচ দেখান প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ। সৈকত চন্দ্র রিমি প্রতিষ্ঠানে না থাকলেও তার অনুসারী তাওহীদ হাসান বর্তমানে সুরমা হোস্টেল এবং ছাত্রলীগের দায়িত্বে রয়েছে। সব ধরনের চুক্তি অধ্যক্ষের সাথে সেই করে থাকে। প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি শ্রেণীকক্ষে ফ্যান নষ্ট, নেই কোনো লাইট, দেয়াল স্যাঁতস্যাঁতে এরকম পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে ক্লাস করতে হয় শিক্ষার্থীদেরকে। এমনকি রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণ শিক্ষকের অভাব। ১ম শিফটের শিক্ষক দিয়েই ২য় শিফটের ক্লাস পরিচালনা করা হয়। কিন্তু কারিগরি শিক্ষা বোর্ড থেকে ২য় শিফটের শিক্ষকদের জন্য আলাদভাবে বেতন দেয়া হয়ে থাকে। অধ্যক্ষ ইঞ্জিনিয়ার ড. মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ প্রতিষ্ঠানে পর্যাপ্ত শিক্ষক না রেখে উভয় শিফটের ক্লাস একই শিক্ষকদের দিয়ে পরিচালনা করান। ২য় শিফটের বেতন নিয়েও গড়িমসি করেন অধ্যক্ষ আব্দুল্লাহ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রতিষ্ঠানের একজন শিক্ষক জানান, ‘একটি ভূয়া দরখাস্ত দেখিয়ে বিদায়ী ৬৫০ জন শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ২০০ টাকা করে নেয়া হয়েছে। যার মোট পরিমাণ দাড়ায় ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা।
আর দুটি কারিগরি অধিদপ্তরের নোটিশ এটাচ দেখিয়ে ৫২০০ জন রেগুলার ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে ৩০ টাকা করে ১ লক্ষ ৪ হাজার টাকা নেয়া হয়। এই টাকা অধ্যক্ষ আব্দুল্লাহ ও প্রতিষ্ঠানের ছাত্রলীগের মধ্যে ভাগভাটোয়ারা হয়।’ এই শিক্ষকই বেশ কয়েকদিন আগে আরেকটি বিষয়ে অবগত করে জানান, ‘অধ্যক্ষ আব্দুল্লাহ স্যার কিছুদিন আগে সম্ভবত মামুন নামের এক কন্ট্রাকটরকে ৩৬ লক্ষ টাকার মালামাল ক্রয়ের টেন্ডার দেন, সে ১০ লক্ষ টাকার মালামাল দেয় এবং ৫ লক্ষ টাকার একটি ব্যাংক ড্রাফট দেয় এই বলে যে এখন আমাকে পুরো টাকা অর্থাৎ ৩৬ লক্ষ টাকা পেমেন্ট দেন, আমি বাকি মাল না দিলে এই টাকা নিয়ে নিবেন। এই টাকা সম্পূর্ণ পরিশোধ করা হয়, কিন্ত বাকি ২০ লক্ষ টাকার মালামাল দেয়নি। এই ৩৬ লক্ষ টাকা কন্ট্রাকটর একা নিয়ে যায়নি, অধ্যক্ষ আব্দুল্লাহ স্যার, আ খ ম সাহাজ উদ্দিন, সৈকত চন্দ্র রিমি ও তার অনুসারী তাওহীদ হাসানের মধ্যেও ভাগভাটোয়ারা হয়। কন্ট্রাকটরকে টাকা দিয়ে বাকি টাকা ফেরত পাননি এই কথা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।’ তিনি আরো জানান, ‘সত্য কথা সবাই জানলেও মুখ খুলতে পারছে না তার কারণ হলো অধ্যক্ষ আব্দুল্লাহ স্যার সবাইকে ট্রান্সফারের ভয় দেখিয়ে সব শিক্ষকদের জোরপূর্বক ভাউচারে স্বাক্ষর নিয়ে এই টাকার মোট হিসাব কন্ট্রাকটর ব্যয় বাবত দেখান। এছাড়া অসংখ্য দুর্নীতির কাজ অধ্যক্ষ স্যার প্রতিনিয়ত করছেন, প্রতিদিন হাজার হাজার টাকার ভাউচার শিক্ষকদের দিয়ে স্বাক্ষর করানো হয় যেখানে ৩-১০ টাকার বলপেনের দাম লেখা হয় ২৫০-৩০০ টাকা, ৩০ টাকার ফাইলের দাম লেখা হয় ১০০০-১৫০০ টাকা, ১০০ টাকার বিরিয়ানীর প্যাকেটের দাম লেখা হয় ৫০০ টাকা পর্যন্ত।’ এই পরিপ্রেক্ষিতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নাজমুল হক কোলন ক্যান্সারে আক্রান্ত অসুস্থ দেখিয়ে ৩০ টাকা করে উভয় শিফটের যেসব শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেয়া হয় তা সম্পূর্ণ অসৎ উদ্দেশ্যে নেয়া হয়। নাজমুল হক নামের এরকম দূরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত কোনো শিক্ষার্থী প্রতিষ্ঠানে খুঁজে পাওয়া যায়নি। এমনকি দরখাস্তের মধ্যেও তার ছবি, মোবাইল নাম্বার, বাড়ির ঠিকানা, রোল নাম্বার, রেজিস্ট্রেশন নাম্বার এবং ডিপার্টমেন্ট উল্লেখ করা ছিলো না। কিন্তু দরখাস্তে অধ্যক্ষ বিভাগীয় প্রধানদের জোরপূর্বক স্বাক্ষর নিয়ে টাকা আদায় করেন। আরেকটি দরখাস্ত এরকম ছিলো কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সহকারী প্রোগ্রামার জনাব মো. নুরুজ্জাামান এবং অত্র বিভাগের সচিবের গাড়ি চালক মো.শামসুর রহমানের স্ত্রী বেগম ফয়জুন্নেছা রুনা দূরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত বলে জোরপূর্বক বিভাগীয় প্রধানদের স্বাক্ষর নিয়ে বিদায়ী ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে ২০০ টাকা করে আদায় করা হয়। ওই দরখাস্তে দুটি ব্যাংক একাউন্টের নাম্বার উল্লেখ করা হয় মো. নুরুজ্জামান, সঞ্চয়ী হিসাব নং- ২০৫০২০৬০২০০৭৯০৭০০ ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লি. পল্টন শাখা, ঢাকা। ফয়জুন্নেছা রুনা, অ/ঈ ঘঙ: ১৬৪২১০৫০০৩০৩৫৪ প্রাইম ব্যাংক লিমিটেড পল্লবী শাখা, ঢাকা। বিদায়ী ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে ২০০ টাকা নেয়ার বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শেষ পর্বে এসে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্র্যানিং শেষে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকেই ১২ হাজার টাকা করে প্রদান করা হয়। যেটিকে ইন্ডাস্ট্রিয়াল এটাচম্যান্ট বলা হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে সদ্য বিদায়ী কম্পিউটার ৮ম পর্বের একজন শিক্ষার্থী জানান, ‘আমাদেরকে যে ১২ হাজার টাকা করে প্রদান করা হয় সেখান থেকে ৬০০ টাকা করে জামানত রেখে দেয়া হয় বোর্ড কর্তৃক নোটিশের কথা বলে, কিন্তু পরবর্তীতে ৪০০ টাকা ফেরত দেয়া হয় এবং ২০০ টাকার কোনো তথ্যই পাওয়া যায়নি।’ তিনি আরো জানান, ‘এক পর্যায়ে আমাদের এই টাকাগুলো আমরা জোর করে আদায় করেছি বলেলেই হয়। যেখানে বাংলাদেশের অন্যান্য পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট বগুড়া, ঢাকা প্রায় সব প্রতিষ্ঠানেই দেড় মাস আগেই ইন্ডাস্ট্রিয়াল এটাচম্যান্টের টাকা প্রত্যেক শিক্ষার্থীদের পরিশোধ করা হয় কিন্তু আমাদেরকে প্রথমে দেয়া হবে বলে পরবর্তীতে একটি নোটিশ দিয়ে সেটি বন্ধ করা হয়। কয়েকদিন আগে আমরা সব শিক্ষার্থীরা মিলে প্রতিবাদ করে জোরপূর্বক সেই টাকা আদায় করি।’ নাম প্রকাশ না করার শর্তে কম্পিউটার বিভাগের ৩য় পর্বের একজন ছাত্র জানায়, বেশ কয়েকদিন আগে একটি দরখাস্ত নিয়ে এসে সুরমা হোস্টেলের কয়েকজন প্রত্যেকজন শিক্ষার্থীদের কাছ টাকা আদায় করে অসুস্থতার কথা বলে। পরবর্তীতে সেই টাকার কি করা হয় আর কোনো খোঁজখবর পাওয়া যায়নি।’ নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইলেকট্রনিক্স বিভাগের একজন শিক্ষক জানান, ‘অধ্যক্ষের পাশাপাশি দুর্নীতিতে চড়াও রয়েছেন ইলেকট্রনিক্স বিভাগের বিভাগীয় প্রধান আ খ ম সাহাজ উদ্দিন। শিক্ষার্থীদের সাথে তার ব্যবহার দেখে মনে হয় সে যেন একটা ব্যবসা খুলে বসেছে। বিভিন্ন ট্র্যানিং প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের জোর করে পাঠিয়ে উক্ত প্রতিষ্ঠান থেকে সে কমিশন নেয় এবং শিক্ষার্থীরা তার অনুযায়ী উক্ত প্রতিষ্ঠানে যেতে না চাইলে সার্টিফিকেট নিয়ে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখান এই বিভাগীয় প্রধান। অধ্যক্ষের সাথে ছাঁয়ার মতো থেকে দুর্নীতি করে ১০ টাকার কলম কিনে ১০০ টাকার রশিদ বানান তিনি। কলেজের সাধারণ শিক্ষকদেরকে ট্রান্সফারের ভয় দেখিয়ে অনিয়ম ও জোরপূর্বক স্বাক্ষর আদায় করে নেন এই শিক্ষক। ল্যাব-১ নামে প্রশাসনিক ভবনে একটি রুমে ২০টি কম্পিউটার থাকলেও সেখানে একটি কম্পিউটারও ভালো নেই। ছাত্ররা কিছুই শিখতে পারছে না। কম্পিউটার মেরামত বাবত অনেক টাকা আসলেও সে টাকা চলে যাচ্ছে বোয়ালদের পেঠে। আপনারা চাইলেও ল্যাব-১ গিয়ে দেখে আসতে পারেন। আর সমস্ত কলেজের প্রত্যেকটি কক্ষে অনেকগুলি ফ্যান থাকলেও সাধারণ শিক্ষার্থীরা শুধুমাত্র এগুলো অবলোকন করে। একটিও কাজের নয়, সবগুলোই নষ্ট। গরমের দিনে ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাস করা অসহনীয় হয়ে পড়ে। আর এদিকে অধ্যক্ষ আব্দুল্লাহ সাহেব অনিয়ম ও সরকারি আইন ভঙ্গ করে উনার বরাদ্দকৃত সরকারি কোয়ার্টারে না থেকে সে টিচার্স কোয়ার্টারকে গ্যাস্ট রুম বানিয়ে বসবাস করে আসছে। এতে করে সরকার এবং কর কমিশন অনেক টাকা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।’ আরেকজন শিক্ষক জানান, ‘এদিকে আ খ ম সাহাজ উদ্দিন ঐশী ইলেকট্রনিক্স (আম্বরখানা) এ বাধ্যতামূলক শিক্ষার্থীদেরকে যেতে জোর করেন এবং সেখান থেকে তিনি মোটা অঙ্কের কমিশনের টাকাও হাতিয়ে নেন।’ অধ্যক্ষ ইঞ্জিনিয়ার ড. মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ বিভিন্ন ছাত্র-ছাত্রীদেরকে নিয়ে আসা পুরুষ/মহিলা অভিবাবকদের সাথে এমন আচরণ করেন উনার আচরণে অভিবাবকরা বাকরুদ্ধ হয়ে যান। এমনকি অধ্যক্ষ কর্তৃক অপমানও হন। অভিবাবকদের বসার উপযুক্ত জায়গা না থাকায় ভুল করে শহীদ মিনার কিংবা পুকুর ঘাটে বসলে তাদের সাথে অমানবিক আচরণও করেন তিনি। এতে করে অভিবাবকরা বিভিন্ন শিক্ষার্থীদের ডেকে অধ্যক্ষের অনিয়মের ক্ষোভ প্রকাশ করেন। প্রশাসনিক ভবনের দ্বিতীয় তলায় রেজিস্টারি অফিসে যেন রয়েছেন পিএচডি ডিগ্রিধারী একজন অধ্যাপিকা। উনার আচরণ দেখলে তাই মনে হয়। আদৌ তিনি তা নন। নমীতা রানী সেই মহিলার আচরণে ক্ষুদ্ধ হয়েছেন প্রতিষ্ঠানের সকল শিক্ষার্থী এমনকি অভিবাবকরাও। মূলত এই শাখার কাজ শিক্ষার্থীদের পরামর্শ এবং সাহায্যের জন্য হলেও সেখানে গিয়ে কোনো কিছু জিজ্ঞেস করলে শিক্ষার্থীদেরকে হেনস্তার শিকার হতে হয়। তারা শিক্ষার্থীদেরকে ছাত্র-ছাত্রী বলে বিবেচ্য করে না। শিক্ষার্থীরা আরো জানান, ‘ইন্সটিটিউটের ওয়াশরুমগুলো এতোই নোংরা একবার প্রবেশ করলে দ্বিতীয়বার আর যেতে ইচ্ছে হয় না। আপনারাই বলুন একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের কোটি কোটি টাকা থাকা স্বত্বেও ওয়াশরুমের অবস্থা যদি এরকম করুণ হয় শিক্ষার্থীরা তাদের প্রয়োজনীয় কাজগুলো করার জন্য কোথায় যাবে..? তিনটি ভবনে একটি মাত্র কমনরুম রয়েছে মেয়েদের জন্য। এতে করে মেয়েদের ভোগান্তি পোহাতে হয়।’ রেজিস্টার শাখায় কর্মরত নমিতা রানী সম্পর্কে আরো একজন শিক্ষার্থী জানান, ‘উনি অধিকাংশ সময় ডিউটি ছেড়ে বাইরে সময় ব্যয় করেন, শিক্ষার্থীরা প্রয়োজনের সময় অফিসে পান না। আর যখন অফিসে পাওয়া যায় কোনো সাহায্যের জন্য গেলে এরকম প্রশ্ন বেশিই শুনতে হয়, কি জন্য এসেছো..? তোমাকে ভিতরে ঢুকার অনুমতি কে দিল..? অত:পর প্রয়োজন না মিটিয়েই চলে আসতে হয়।’ জানা যায়, সিলেট পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের অধ্যক্ষ এর পূর্বে যশোর পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটে অধ্যক্ষের দায়িত্বে কর্মরত ছিলেন। সেখানে দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়ায় কারিগরি শিক্ষা বোর্ড তাকে পদবনতি দিয়ে সার্ভে ইন্সটিটিউটের বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব প্রদান করে। পরবর্তীতে তিনি মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে সিলেট পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটে টিসি নিয়ে অধ্যক্ষ পদে দায়িত্ব প্রাপ্ত হন। এমনকি তার পাশাপাশি তাকে সিলেট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের দায়িত্বও দেয়া হয়। দুর্নীতিতে অভিযুক্ত হওয়ার পরও কিভাবে তাকে দুটি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব প্রদান করা হয় এ নিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিবাবকদের মধ্যে রয়েছে ক্ষোভ ও সংশয়। কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের কর্মদক্ষতা নিয়ে তারা বিভিন্ন ধরনের অপ্রীতিকর মন্তব্যও করছেন। তাদের প্রশ্ন, ‘যেখানে মূলেই ঝামেলা সেখানে আমরা শিক্ষার্থীরা কি শিখব?’ এসব বিষয় নিয়ে অধ্যক্ষের সাথে কথা হলে তিনি জানান, ‘আমরা বাধ্যতামূলক করিনি ৩০ টাকা করে নেয়ার বিষয়টি, তবে বলেছি যে যার সামর্থ্য অনুযায়ী অনুদান দিয়ে এডমিট কার্ড নিয়ে যাবে।’ উনার এই কথার বিরূপ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন শিক্ষক জানান, ‘অধ্যক্ষ মহোদয় আমাদেরকে এডমিট কার্ড নিতে হলে বাধ্যতামূলক ৩০ টাকা করে প্রত্যেক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। আমাদের বিবেক তাড়না দিচ্ছে শিক্ষার্থীদেরকে কাছ থেকে টাকা নিতে, কিন্তু আমরা শিক্ষকরা কি করবো বলুন, আমরা নিরুপায়…!’ সিভিল বিভাগের এক শিক্ষার্থী জানান, ‘আমরা যখন এডমিট কার্ড নিতে যাই আমাদেরকে ৩০ টাকার বিনিময়ে এডমিট কার্ড নেয়ার কথা বললে আমরা সেটার প্রতিবাদ করি এবং আমাদের বিভাগীয় প্রধান মুমতাজ স্যারের মধ্যস্থতায় সেটি মীমাংশা হয়। কারণ আমি গরীবকে সাহায্য করবো সেটি আমার যা মন চাইবে আমি দিবো সাধ্যমতো, কিন্তু জোর করে যেভাবে বাধ্যতামূলক টাকা নেয়া হচ্ছে সেটিকে অনুদান নয় চাঁদাবাজি বলে।’ এসব বিষয় নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের কাছ থেকে কিছু জানতে চাইলে তারা বলেন অধ্যক্ষ মহোদয়ের কাছে যাওয়ার জন্য, অধ্যক্ষ মহোদয়ের কাছে গেলে তিনি বলেন রেজিস্টার অফিসে যোগাযোগ করার জন্য, রেজিস্টার অফিসে গেলে নমিতা রানী বলেন বিভাগীয় প্রধানের সাথে যোগাযোগ করার জন্য, উনার কছে গেলে অধ্যক্ষের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন এরকম অবহেলায় পড়ালেখা করতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদেরকে। নিরাপত্তা শাখার মাহবুব আলমকে এসব বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ‘বিগত ৫দিন যাবত প্রতিষ্ঠানের কোনো খোঁজখোবরই আমার জানা নেই।’ অথচ অধ্যক্ষ আব্দুল্লাহর একান্ত সহকারি তিনি।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd