বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সিলেটের বিশ্বনাথে কৌশলের অংশ হিসেবে গোপনে সংগঠিত হচ্ছেন যুদ্ধাপরাধের দায়ে নিবন্ধন বাতিল হওয়া বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও তাদের ছাত্র সংগঠন ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা। অতি সতর্কতার সাথে বাসা-বাড়ি ও নির্দিষ্টস্থানে বৈঠক করার পাশাপাশি জনশক্তি বাড়াতে কাজ করছেন তারা। তাদের জোটমিত্র বিএনপির সাথে অনেকটা দূরত্ব বজায় রেখেই চলছে তাদের এসব কার্যক্রম। জোটের পক্ষ থেকে সিলেটের দুটি আসনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী দেয়ায় ভেতরগতভাবে চাঙ্গাও হয়ে উঠেছেন তারা। কিছুটা প্রস্তুতি থাকলেও মামলা ও গ্রেফতার এড়াতে আপাতত প্রকাশ্যে মাঠে নামছেন না দলটির নেতাকর্মীরা। তবে, গোপনে সংগঠিত হওয়ার প্রশ্নই ওঠে না জানিয়ে জামায়াত-শিবিরের নেতারা জানান, স্বাভাবিকভাবেই তারা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। নিয়মতান্ত্রিকভাবেই প্রকাশ্যেই বৈঠক, জনসংযোগ করছেন। গোপনে সংগঠিত হওয়ার বিষয়টি নিতান্তই অপপ্রচার।
সর্বশেষ, ২৩ সেপ্টেম্বর রবিবার বিকেলে উপজেলার দেওকলস ইউনিয়নের গন্ধারকাপন গ্রাম থেকে জামায়াতের গোপন বৈঠক চলাকালে জেহাদী বইসহ জেলা জামায়াত নেতা মাওলানা লোকমান আহমদসহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের শীর্ষ ১৭ নেতাকে আটক করে থানা পুলিশ। এরপর থেকেই অনেকটা কৌশলী ভূমিকায় অবতীর্ণ হন তারা। গোপন চালিয়ে যাচ্ছেন সাংগঠনিক কার্যক্রম।
জানা গেছে, সিলেট-২ আসনে বিএনপির নিখোঁজ নেতা এম. ইলিয়াস আলী সংসদ সদস্য থাকাবস্থায় কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে জামায়াত-শিবির। ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল ঢাকার রাজপথ থেকে ইলিয়াস আলী নিখোঁজ হলে তার সন্ধান দাবীতে গড়ে ওঠা আন্দোলনে স্বতঃর্স্ফুত অংশও নেয় তারা। তবে, বিগত উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির সাথে দুরত্ব সৃষ্টি হয় তাদের। বর্তমানে বিএনপির সাথে অনেকটা নিয়ম রক্ষা করেই চলছেন দলটির নেতাকর্মীরা।
এই অবস্থায় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোন ভূমিকায় অবতীর্ণ হবেন জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা, সেটাও কম আলোচিত হচ্ছে না বিশ্বনাথ উপজেলায়। সিলেট-২ আসনে বিএনপির দলীয় প্রার্থী ইলিয়াসপত্মী তাহসিনা রুশদীর লুনার পক্ষে স্বতঃর্স্ফুত কাজ করবেন কি না, অথবা বিএনপি তাদেরকে এ ক্ষেত্রে কতটুকু গুরুত্ব দেবে-এমন প্রশ্নও অনেকের। তবে, এ আসনে জোটপ্রার্থীকে বিজয়ী করতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবেন বলে প্রত্যয় ব্যক্ত করেন জামায়াত-শিবিরের নেতারা।
সাংগঠনিক নিয়মেই অফিস, বাসা অথবা বাড়ির উঠোনে প্রকাশ্যেই বৈঠক করেন জানিয়ে উপজেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মকবুল হোসাইন বলেন, আমাদের জনশক্তি বিগত সময়ের চে’ দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
বিশদলীয় জোট-বিশ্বনাথের সদস্য সচিব, জামায়াত নেতা নিজাম উদ্দিন সিদ্দিকী বলেন, জামায়াত-শিবির কোনো নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন নয় যে, গোপনে সংগঠিত হতে হবে। এটা নিতান্তই অপপ্রচার। আমরা অন্যান্য দলের মতই প্রকাশ্যেই সভা-জনসংযোগ করছি। কিন্তু কেউ যদি এটাকে গোপন বৈঠক বলে অপপ্রচার চালায়, তাহলে আমাদের কিছুই করার নেই। বিগত উপজেলা নির্বাচনে বিএনপির সাথে আমাদের কোনো দুরত্ব সৃষ্টি হয় নাই। কেননা, সেটা ছিল স্থানীয় নির্বাচন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোট সমর্থিত প্রার্থীর পক্ষেই আমরা কাজ করব।
উপজেলা জামায়াতের আমির মুহাম্মদ আবদুল কাইয়ূম বলেন, সিলেট-২ আসনে ইলিয়াসপত্মী তাহসিনা রুশদীর লুনাকে নির্বাচিত করতে মাঠেঘাটে সর্বাত্মক কাজ করে যাবে জামায়াতের নেতাকর্মীরা।
Sharing is caring!