সিসিকের চালক’র কাছে ধর্ষিতা যুবতী অন্তসঃত্ত্বা

প্রকাশিত: ৮:৪২ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২৮, ২০১৮

সিসিকের চালক’র কাছে ধর্ষিতা যুবতী অন্তসঃত্ত্বা

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : মেয়েটির মা-বাবা কেউ বেঁচে নেই। নেই কোনো আপন ভাই বোন। সে তাকে জেটাতো ভাইদের কাছে। সেই মেয়েকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে ধর্ষণ করে সিলেট সিটি করপোরেশনের গাড়িচালক লচুমন রবি দাস কামাল (৩২)।

ধর্ষিতা ওই নারী বর্তমানে ৭ মাসের অন্তসঃত্ত্বা। কিন্তু ওই গাড়ি চালক এখন অস্বীকার করছেন ধর্ষিতা নারীর ও তার গর্ভের সন্তানকে।

বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে ব্যাপাক সমালোচনা হয়। ধর্ষিতার কথা বিশ্বাস না করে তাকে পরপর দু’বার আল্ট্রাসনোগ্রাফি করানো হয়। এতেও ৭ মাসের অন্তসঃত্ত্বার প্রমাণ পাওয়া যায়। এ বিষয়টি আপোষ মীমাংসার জন্য কয়েকবার বৈঠকও হয়েছে। কিন্তু তাতে কোন ফল পাননি ধর্ষিতা। উল্টো ধর্ষিতার ভাইদের বিরুদ্ধে থানায় জিডি করে ধর্ষক লচুমন।

পরবর্তীতে কোনো উপায়ান্তর খোজে না পেয়ে এসএমপির কোতয়ালি থানায় অভিযোগ করেন ধর্ষিত নারী। এসএমপির কোতয়ালি থানা পুলিশ সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মামলা রুজু করেন। পরে ধর্ষক মৌলভীবাজার থানার কুলাউড়া উপজেলার হোসেনপুর গ্রামের মৃত নিরঞ্জন রবি দাসের ছেলে লচুমন রবি দাস ওরফে কামাল (৩২)-কে আটক করে।

তিনি বর্তমানে সিলেট সিটি করপোরেশনের শেখঘাট ভাঙ্গা টিকর নবীন-৪২ নম্বর বাসার বাসিন্দা। তাকে আটকের পর গত রোববার সিলেট মেট্রোপলিটন আদালতে ধর্ষকের ডিএনএ পরীক্ষার জন্য আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। আদালত ডিএনএ টেস্টের অনুমতি প্রদান করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ সূত্র।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ধর্ষিতার পিতা-মাতা তাকে রেখে মৃত্যুবরণ করেন। তার আপন কোনো ভাই-বোন নেই। তাই তিনি থাকতেন তার জেঠাতো ভাইদের সাথে। ধর্ষক লচুমন রবি দাস সিলেট সিটি করপোরেশনের গাড়িচালক হওয়ায় বসবাস করছেন ভাঙ্গাটিকর এলাকায়। সে সুবাদে ধর্ষিতার আপন চাচার বাসায় যাতায়াত করতেন লচুমন।

আর ধর্ষিতার জেঠাতো ভাইয়েরা কাজের জন্য সকল সময় বাইরে থাকতেন। এরফলে ধর্ষিতার চাচার বাসায় ধর্ষক যাওয়া-আসার প্রাক্কালে তার সাথে দেখা সাক্ষাৎ ও পরিচয় হয়। কিছু দিন পর হতে ধর্ষিতার ঘরেও আসা-যাওয়া করতেন লচুমন।

একপর্যায়ে গত ২৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় ধর্ষিতার ঘরে কেউ না থাকায় তাকে নানাভাবে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে তাকে ধর্ষণ করে লচুমন। পরবর্তীতে বিভিন্ন দিন ও বিভিন্ন সময়ে ধর্ষিতার জেঠাতো ভাইদের অনুপস্থিতিতে তার ঘরে এসে একাধিকবার শারীরিক সর্ম্পক স্থাপন করে। একপর্যায়ে ওই নারী অন্তসঃত্ত্বা হয়ে পড়েন। ফলে লচুমনকে বিয়ের জন্য চাপ প্রয়োগ করে। কিন্তু তিনি বিভিন্ন অজুহাতে নানা ধরনের টালবাহানা করতে থাকেন ও ধর্ষিতার সহিত অশালীন আচরণ শুরু করে।

বিষয়টি বাধ্য হয়ে ধর্ষিতা তার জেঠাতো ভাইদেরকে অবগত করেন। বিষয়টি জেনে জেঠাতো ভাইয়েরা স্থানিয়ভাবে মীমাংসার চেষ্টা করেন। কিন্তু লচুমন তা সমাধান করতে রাজি নন। অতঃপর বিষয়টি স্থানীয় কাউন্সিলরকে অবগত করা হয়।

আর গত ২৪ অক্টোবর ধর্ষিতার জেঠাতো ভাইয়েরা সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে তাকে ভর্তি করে আল্ট্রাসনোগ্রাফ পরিক্ষার ব্যবস্থা করেন। এতে ধর্ষিতা ৩০ সপ্তাহের অন্তসঃত্ত্বা বলে ডাক্তার মতামত ব্যক্ত করেন।

মামলা দায়েরের পর লচুমনকে আটক করা হয়। পরবর্তীতে সিলেট মেট্রোপলিটন আদালতের মাধ্যমে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রেরণ করা হয়। বর্তমানে তিনি কারাগারে আটক রয়েছেন।

এ ব্যাপারে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ সেলিম মিঞা জানান, ধর্ষণের অভিযোগ পেয়েই সিলেট সিটি করপোরেশনের গাড়িচালককে আটক করা হয়। আর ধর্ষিতাকে মেডিকেল চেকআপও করানো হয়েছে। তাছাড়া ডিএনএ পরীক্ষার জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..