সিলেট ৬ই মার্চ, ২০২১ খ্রিস্টাব্দ | ২১শে ফাল্গুন, ১৪২৭ বঙ্গাব্দ | ২১শে রজব, ১৪৪২ হিজরি
প্রকাশিত: ১০:৪৮ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১১, ২০১৮
Sharing is caring!
নিজস্ব প্রতিবেদক :: রাতের মাছের হাট। প্রতিদিনই বসে সিলেট নগরীতে। নগরীর প্রাণকেন্দ ও নান্দনিক সৌন্দর্য মন্ডিত সিলেট জেলা পরিষদ ও জালালালাবাদ পার্ক। যে জায়গাটি সব সময়ই জনগুরুত্বপূর্ণ। সেই জায়গায় অবৈধভাবে মাছের হাট বসিয়ে মুনাফা নিচ্ছে একটি মহল। সে মহলে রয়েছে পুলিশ ও রাজনৈতিক লেবাছে থাকা কিছু নেতা। এ সকল অসাধু ব্যাক্তিদের সাময়িক কিছু টাকা অর্জন হলেও, পরিবেশের জন্য এই অবৈধ মাছের হাট বয়ে আনছে ভয়াবহ বিপর্যয়। ফলে বিপর্যস্থ হচ্ছে পরিবেশ আর নান্দনিকতা হারাচ্ছে নগরী।
সূত্র জানায়, প্রতিদিনই সিলেট নগরীর প্রশাসনিক এলাকা জেলা পরিষদ ও জালালাবাদপার্ক এবং জেলা প্রশাসকের বাস ভবনের সামনের রাস্তায় বসে মাছের অবৈধ হাট। এক কিলোমিটার জুড়ে সেই হাটটি বসে দুপুর ৩ টা থেকে। আর চলে রাত অবধি। এই অবৈধ মাছের হাটের কারণে ঐ এলাকা দিয়ে ছড়ায় প্রচুর দূর্গন্ধ। তাছাড়া মাছের পানি, বরফগলা ও নানা ধরণের আর্বজনা সৃষ্টি হয়ে বিপর্যস্থ হচ্ছে পরিবেশ। যদিও সিলেট সিটি করপোরেশনের পরিছন্ন কর্মীরা প্রতিদিন তাদেও ময়লা পরিস্কার করে । তবে তাতেও কোন ফল পাওয়া যায়নি। উল্টো আরো পানি থেকে দূর্ঘন্ধ সৃষ্টি হয়ে ছড়াচ্ছে নানা ধরণের বায়ু বাহিত রোগ বালাই। ফলে ঐ এলাকা দিয়ে যাতায়াতরত অনেককেই ভোগছিন নানা ধরণের ভাইরাস জনিত রোগে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, রাতদিন মাছির ভনভন কাদা ও ময়লাযুক্ত পানি লেগেই থাকে। সন্ধ্যা হতেই রাস্তায় বসানো হয় দুই সারি মাছের হাট। মাছের পচা ও বরফের পানিতে তলিয়ে যায় পুরো রাস্তা। মেঘবৃষ্টি না হলেও বারমাস রাস্তা বয়ে যায় পানিতে। পথচারীর জুতোর উপরে টপকে যায় মাছের পচা পানি। তাই অনেকে এ রাস্তা দিয়ে হাটতে গিয়ে পড়েন চরম বিপাকে। ফুটপাতে জেলা পরিষদ কবর্মচারীদের বসানো কাপড়ের দোকান থাকায় ফুটপাত দিয়েও চলাচল করা যায় না। শুকনো মওসুমের রাতের বেলা পানিতে রাস্তা ভেসে সকালে শুকায়। আর দিনের বেলা পুরো রাস্তা দখল করে নেয় মশা ও মাছি। মাছের পানি মাছির প্রধানখাদ্য বিধায় নগরীর নর্দমার মাছিগুলো এসে স্থান নেয় জেলা পরিষদের সামনের রাস্তায়।
রাস্তা দিয়ে যাতায়াতরতরা নাকে রুমাল দিয়ে রাস্তার এ অংশ পার হতে হয়। অভিযোগ পাওয়া গেছে, আদালতের নিষেধাজ্ঞা অগ্রাহ্্য করে একশ্রেণীর অসাধু কর্মকর্তা কর্মচারী পরিষদের সামনের ফুটপাত একসনা নজর দিয়েছেন হকারদের কাছে। এ নজরানার ভাগও পেয়ে থাকে জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ। ফলে জনচলাচলের ফুটপাতে সৃষ্টি হয়েছে স্থায়ী প্রতিবন্ধকতা।
অন্যদিকে, জেলা পরিষদের সামনের রাস্তাটিতে দোকান প্রতি দৈনিক দুইশ’ টাকা হারে চাঁদায় মাছ ব্যবসায়ীদের বসায় বন্দরবাজার ফাড়ি পুলিশ। প্রায় দুশটি মাছের দোকান বসিয়ে দৈনিক ৪০হাজার টাকা আদায় করে নেয় বন্দরবাজার ফাঁড়ি পুলিশ। ফাড়ি পুলিশের লাইনম্যান হয়ে জনৈক সুমন মাছ ব্যবসায়ী প্রত্যেক দোকানীর কাছ থেকে রোজানা দু’শ’ টাকা করে চাঁদা আদায় করে নেয়। ফাড়ি পুলিশের পক্ষে আদায়কৃত এ টাকার ভাগ এসএমপির পদস্থ কর্মকর্তাদেরও দেয়া হয় বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।
সিলেটে সিটি কর্তৃপক্ষ-সহ প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের বারবার নজরে দেয়া সত্বেও রাস্তার উপর থেকে মাছের হাট না সরানোর ফলে নগরীর সৌন্দর্য ও নান্দনিরক পরিবেশ চরমভাবে বিঘিœত হচ্ছে। এব্যাপারে ভোক্তভোগীরা সরকার ও প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্তপক্ষের আশু পদক্ষেপ ও দ্রæততর হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
এ ব্যাপপারে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সেলিম মিয়া জানান, তিনি বাজারটি সম্মন্ধে অবগত নন। তার কোন পুলিশও এটার সাথে জড়িত নয়। তবে তিনি বিষয়টি দেখবেন। আর যাতে করে এখানে কোন অবৈধ মাছের হাট না বসে সে লক্ষে তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্তা গ্রহণ করবেন।
………………………..
Design and developed by best-bd