সিলেট ১৫ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১লা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৪ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৩:০৫ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৫, ২০১৮
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : কানাইঘাটের সীমান্তবর্তী লক্ষীপ্রসাদ পুর্ব ইউপির বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে অবৈধ ভাবে চোরাই পথে ভারত থেকে আসছে গরু-মহিষ। আর এসব গরু মহিষ দেশের অভ্যন্তরে নিয়ে আসতে সক্রিয় রয়েছে একটি চোরাকারবারী চক্র। সীমান্ত এলাকার এসব চোরাকারবারীদের মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে প্রতি রাতে কানাইঘাটে প্রবেশ করছে ভারতীয় গরু-মহিষ। স্থানীয় বিজিবি’র কড়া টহল থাকার পরও চোরাকারবারীরা বিভিন্ন কৌশলে বিজিবি’র চোখ ফাঁকি সীমান্তের অপার থেকে এপারে নিয়ে আসছে শত শত গরু-মহিষ। এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, লোভাছড়া সীমান্ত এলাকায় গরু ও মহিষ চোরাকারবারীদের মুল হোতা লক্ষীপ্রসাদ পুর্ব ইউপির বড়গ্রামের সুলতান আহমদ। সে এলাকার গরু ব্যবসায়ী মাসুক, জামাল, সায়াদ, কুদ্দুছ, হাসন, ফজলু, আবুল, বিলাল, বাহার, নাজিম গংদের নিয়ে লোভাছড়া বিজিবি’র চোখ ফাঁকি দিয়ে ভারতীয় গরু-মহিষ চোরাইপথে অবৈধ ভাবে সীমান্তের ওপার থেকে এপারে নিয়ে আসছে।
এছাড়া ডোনা সীমান্ত দিয়ে সোনারখেয়ড় গ্রামের তাজ উদ্দিন, সায়াদ, মুহিব, ইব্রাহিম, কালাম, মখলিছ, মাসুক, হোসন, ছয়ফুল, ডোনা গ্রামের সাদ্দাম, কয়ছর, রহিম, বাট্টি সাদ্দাম, শাহজান গংরা চোরাই পথে অবৈধ ভাবে ভারত থেকে গরু-মহিষ এনে বিভিন্ন হাট-বাজারে বিক্রয় করছেন বলে এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে। এসব চোরাকারবারীরা অবৈধ ভাবে ভারত থেকে নিয়ে আসা গরু-মহিষ বিভিন্ন হাট-বাজারে বিক্রির পর ক্রেতাদের হাতে বিক্রয় রশিদ প্রদান করছে। এতে করে ক্রেতারা বিভিন্ন হাট-বাজার থেকে ভারতীয় গরু-মহিষ ক্রয় করলেও রশিদ গ্রহন করছে স্থানীয় এলাকার গৃহ পালিত গরু-মহিষ বিক্রয়ের মতো। জানা যায়, সীমান্ত এলাকার চোরাকারবারীরা প্রতিরাতে সীমান্তের বিভিন্ন রাস্তার মূখে তাদের সোর্স বসিয়ে রাখে। যাতে করে আইন শৃংঙ্খলা বাহিনী তাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে এসব গরু-মহিষ আটক করতে না পারে। এছাড়া চোরাকারবারীরা ভারতীয় রোগাক্রান্ত গরু-মহিষ দেশে এনে মোটা তাজাকরণ ট্যাবলেট ও ইনঞ্জেকশন পুশ করে এসব গরু-মহিষকে মোটাতাজা করে বিভিন্ন হাট-বাজারে বিক্রি করছে। এসব গরু-মহিষের মাংস খেলে মানুষের স্বাস্থ্যর মারাত্মক ক্ষতি সহ নানা রোগ ব্যাধি দেখা দিতে পারে বলে অনেকের ধারণা।
এদিকে কানাইঘাটের লোভাছড়া বিজিবি’র ক্যাম্প কমান্ডার জানান, সীমান্ত এলাকার প্রতিটি রাস্তায় বিজিবি’র নজরদারী বৃদ্ধি করা হয়েছে। যাতে করে চোরাকারবারীরা অবৈধভাবে ভারতীয় গরু-মহিষ দেশের ভিতরে নিয়ে আসতে না পারে। তিনি বলেন, বিগত ৩ মাসে লোভাছড়া বিজিবি’র হাতে অন্তত শতাদিক গরু-মহিষ আটক হয়েছে। এছাড়া এসব গরু-মহিষের চোরাকারবারীদের বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে। তিনি বলেন, সীমান্ত এলাকার চোরাকারবারীরা বিজিবি’র চোখ ফাঁকি দেওয়ার জন্য তাদের পর্যাপ্ত সোর্স ব্যবহার করে। বিজিবি কোন সময় কোন রাস্তা দিয়ে টহলে যাচ্ছে তাদের সোর্সরা এসব খবরাখবর মোবাইল ফোনের মাধ্যমে চোরাকারবারীদের বলে দেয়। তাই অনেক সময় বিজিবি’র চোখ ফাঁকি দিয়ে তারা গরু-মহিষ দেশের অভ্যন্তরে নিয়ে আসে।
এদিকে সোনারখেয়ড় গ্রামের গরু-মহিষের ব্যবসায়ীদের অর্থের লোভে পড়ে সীমান্তের অপার থেকে চোরাই পথে ভারতীয় গরু-মহিষ আনতে গিয়ে গত ১৩ অক্টোম্বর খাসিয়ার গুলিতে মারা যায় সোনারখেয়র গ্রামের জালাল উদ্দিনের পুত্র মামুন উদ্দিন। এছাড়া খাসিয়ার গুলিতে তার স্যালক সোনারখেয়ড় গ্রামের শামিম আহমদ গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়। এঘটনায় নিহত মামুন উদ্দিনের পিতা জালাল উদ্দিন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামী করে কানাইঘাট থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd