সিলেট ৭ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৩শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৩রা রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১১:৫১ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৯, ২০১৮
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : এ এক আজব ঘটনা। যা হজম করা সাধারণের পক্ষে অসম্ভবই। ঘটিয়েছেন পাকিস্তানের মুলতানের এক নারী ও তার স্বামী। বিয়ের পর ওই নারী তার অতি প্রিয় চাচাতো বোনটিকে চোখের আড়াল করে থাকতে পারছিলেন না। তাই নিলেন এক চমকানো সিদ্ধান্ত যা মানতে পারছে না পারিপার্শ্বিক সমাজ ব্যবস্থা। পাঠকদের জন্য ঘটনাটি তুলে ধরা হলো-
পাকিস্তানের দুনিয়া নিউজ ওই ঘটনার ভিডিও শেয়ার করেছে টুইটারে। প্রকাশিত খবরে জানা গেছে, পাঞ্জাব প্রদেশের মুলতানের সামিজাবাদ এলাকার ফারাজ নামে এক টিনএজার মাস দেড়েক আগে বিয়ে করেন আলিনা নামের এক তরুণীকে। এরপর নববধূ আলিনা তার চাচাতো বোন আলিস্মাকেও কয়েক সপ্তাহের মধ্যে বিয়ে দেন নিজের স্বামীর সঙ্গে।
দেশটির সামা টিভিও এই ‘ত্রিরত্নের’ ইন্টারভিউ প্রচার করেছে। ঘটনা জানাজানি হলে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আলিনা বলেন, নিজের জ্ঞাতী বোনকে না দেখে থাকতে পারছিলেন না। তাই তাকে সব সময় কাছে রাখার জন্য নিজ স্বামীর সঙ্গে বিয়ে দিয়ে দিয়েছেন।
তার সদ্য বনে যাওয়া সতীন আলিস্মাও বোনের সঙ্গে একই সুরে কথা বলেছেন।
আলিনা জানান, ছোটবেলা থেকে দুই চাচাতো বোন মানিকজোড়ের মতো একইসঙ্গে বেড়ে উঠেছেন, পড়েছেন একই স্কুলে। জীবনে যা কিছুই করেছেন, দু বোনে একসঙ্গে করেছেন। দুজন দুজনের জন্য বেচইন থাকেন।
আলিনা জানান, বিয়ের পর স্বামীর ঘরে হপ্তা কয়েক কোনোমতে কাটলেও এরপর বোনের স্মরণ তাকে অস্থির করে দিতে থাকে। এরপর আলিস্মাকেও ফারাজের বউ করে আনার সিদ্ধান্ত নেন।
বোঝাই যাচ্ছে, সম্ভবত আর সবকিছুতে অমত করলেও স্ত্রীর এমন ‘চমকপ্রদ’ সিদ্ধান্তে দ্বিমত করেননি ফারাজ।
অপরদিকে, আলিস্মা জানান- বোনকে ছাড়া তারও দিন কাটছিল না। অবস্থা এমন হয় যে আলাদা হয়ে দুজনের পক্ষে বেঁচে থাকা অসম্ভব হয়ে পড়ে।
তবে তারা দুই চাচাতো বোন একই স্বামী নিয়ে সংসার করে সন্তুষ্ট থাকলেও সমাজ তাদের শত্রু হয়ে গিয়েছে। ফারাজ জানান, তার স্ত্রীদের স্বজনরা তাকে খুঁজছে এবং লাগাতার হত্যার হুমকি দিয়ে আসছে। এরই মধ্যে আলিনা এবং আলিস্মার পরিবার মামলা করেছে তাদের স্বামী ও তাদের বিরুদ্ধে।
অপরদিকে, দেশটির সামাজিক মাধ্যমে এই ঘটনা নিয়ে ঠাট্টা-মশকরা, তর্ক-বিতর্কের মেলা বসে গেছে যেন। কেউ কেউ ইসলাম ধর্মের রীতি-রেওয়াজ নিয়ে অজ্ঞতাপ্রসূত দু-চার কথা অর্থাৎ নেতিবাচক সমালোচনা করে পরিস্থিতি গরম করার ফুরসত পাচ্ছে।
সামাজিক মাধ্যমে অধিকাংশ ব্যক্তিই মজাচ্ছলে বলছে, দুই দুইজন বউ পেয়ে বরের ভাগ্য খুলে গেল। অনেকেই ওই দুই বোন ও তাদের স্বামীর বিষয়টি তাদের নিজেদের ব্যক্তিগত মামলা বলে মনে করছেন। তাই এতে অন্যদের নাক গলানোটা অনধিকার চর্চা বলে মানছেন। অনেকেই আলিনা ও আলিস্মার এমন বিয়েকে বলছেন, বন্ধুত্বের তুলনাহীন উপমা! কারণ, কট্টরপন্থি মুসলিম প্রধান একটি দেশের বাসিন্দা হয়েও তারা নিজেদের বন্ধুত্বকে এমন এক বন্ধনে জড়িয়েছেন যাকে এককথায় বলা যায়, বে-মিশাল (যার তুলনা নেই)।
প্রসঙ্গত, ইসলামি বিধান মতে কোনো পুরুষ তার স্ত্রীর জীবিতাবস্থায় সেই স্ত্রীর সহোদর অপর কোনো বোনকে বিয়ে করতে পারে না। কিন্তু চাচাতো-মামাতো বোনদের ক্ষেত্রে নিষেধ নেই। তবে, সাধারণত এরকম ঘটনা খুবই বিরল যে একই সঙ্গে দুই বোন (চাচাতো) একই স্বামীর সংসার করছে। তাও আবার পাকিস্তানের মতো ‘অনার কিলিংয়ের’ দেশে।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd