গোয়াইনঘাটে মোটরসাইকেল চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছে যুবকরা

প্রকাশিত: ৯:৫৭ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৫, ২০১৮

গোয়াইনঘাটে মোটরসাইকেল চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছে যুবকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক :: শিক্ষিত যুবকরা এখন নতুন নতুন পেশায় যুক্ত হয়ে জীবিকা নির্বাহের পথ বেছে নিচ্ছে। তারা এখন আর সরকারি কিংবা বেসরকারি চাকরির জন্য বসে থাকছে না। নদী বেষ্টিত এ অঞ্চলের বেকার যুবকরা নতুন নতুন সড়কপথে মোটরসাইকেল, অটোরিকশা ও নৌপথে নৌকা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহের নতুন পথ বেছে নিয়েছে।

সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার যুবকদের এখন বাহন মোটরসাইকেল। এক সময় যেসব এলাকার মানুষ মাইলের পর মাইল পায়ে হেঁটে অথবা নৌকা চড়ে শহর-বন্দরে যাতায়াত করতো তাদের এখন প্রধান বাহন মোটরসাইকেল।

কালের বিবর্তনে নৌকা চলাচল বলতে গেলে বন্ধ হয়ে গেছে। মোটরসাইকেলে উঠে মানুষ ছুটছে প্রত্যন্ত এলাকায়। আর এ মোটরসাইকেল চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করার পথ বেছে নেয় গোয়াইনঘাট উপজেলার একটি বেকার জনগোষ্ঠী। এখন আর এমন কোনো বড় হাট-বাজার নেই যেখানে ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল পাওয়া যায় না। এককালের বেকার যুবকরা মোটরসাইকেলে যাত্রী বহন করে হর্ন বাজিয়ে এ গ্রাম থেকে অপর গ্রামে ছুটে যাচ্ছেন। এদের অধিকাংশই উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে চাকরি না পেয়ে শক্ত হাতে মোটরসাইকেলের হ্যান্ডেল ধরেছেন। কারো কারো রয়েছে উচ্চতর ডিগ্রী।

নৌকা চালানো বা দিনমজুরের কাজে আপত্তি থাকলেও মোটরসাইকেলে যাত্রী বহন করে অর্থ উপার্জনে আপত্তি নেই এসব শিক্ষিত-অর্ধশিক্ষিত যুবকদের। এটা একটা স্বাধীন ব্যবসাও বটে। উপজেলার রাধানগর,মামার দোকান,গোয়াইনঘাট থেকে মাতুরতল, মনরতল থেকে হাদাপার, হাদাপার থেকে বিছনাকান্দি এসব এলাকায় দৈনিক দু’শ থেকে তিনশ’ মোটরসাইকেল চলে। মোটরসাইকেল চালকরা জানান, প্রতিদিন সকল খরচ বাদ দিয়ে দুই-তিনশ’ টাকা আয় হয়। বিভিন্ন ছুটির সময় পর্যটনে দ্বিগুণ উপার্জন হয়। তারা জানান, পর্যটকদের যাতায়াতের উপর তাদের আয়-উপার্জন নিভর্র করে। যারা মোটরসাইকেল চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন তারা সকলেই পরিবার-পরিজন নিয়ে ভালভাবে দিন কাটাচ্ছেন বলে জানান। এ উপজেলায় কমপক্ষে হাজারেও বেকার যুবক মোটর সাইকেল চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন। মোটরসাইকেল চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতে পুঁজি খুব কম লাগে। অটোরিকশা বা মাইক্রোবাস ক্রয় করে যাত্রী পরিবহন করতে তিন-চারগুণ বেশি পুঁজির প্রয়োজন। তার উপরে রয়েছে ট্রাফিক পুলিশের বাড়তি ঝামেলা। উপার্জনের টাকা সঞ্চয় করে কেউ কেউ একাধিক গাড়ির মালিক হয়েছেন। তারা সহকর্মীদের কাছেই দৈনিক অথবা চুক্তি ভিত্তিক এসব যানবাহন ভাড়া দিয়ে বাড়তি আয়-রোজগার করে বেশ স্বাবলম্বী হয়েছেন। একটি গাড়ি থেকে ২/৩টি গাড়ির মালিক হওয়ার নজির এ এলাকার অনেক। তারা ট্রাফিক পুলিশ ম্যানেজ করেই ব্যবসা পরিচালনা করেছেন। রাজনৈতিক মিছিল-মিটিং ছাড়া অন্য যেকোন কাজে যেকোন স্থানে যাওয়ার জন্য গাড়ি ভাড়া দিতে এদের আপত্তি নেই। একটু চেনা-জানা হলে দ্বিগুণ-তিনগুণ ভাড়ায় গভীর রাতেও যাত্রী পরিবহনে রাজী এরা। তবে মোটরসাইকেল চালকরা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ম্যানেজ করতে পারেন না ট্রাফিক পুলিশকে। তাদের প্রায়ই গাড়ির কাগজপত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষার নামে হয়রানি করা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

Sharing is caring!

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

September 2018
S S M T W T F
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930  

সর্বশেষ খবর

………………………..