সাংবাদিক পেশা কে আর কলঙ্কিত করবেন না

প্রকাশিত: ৭:১২ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৫, ২০১৮

সাংবাদিক পেশা কে আর কলঙ্কিত করবেন না
সাংবাদিক শব্দটা ভয়ংকর ও আতঙ্কের। আবার সাংবাদিকরা নমনীয়, শ্রদ্ধার, সাধারণ মানুষের আশার প্রতীক, যাকে বলা হয় জাতির বিবেক, কলম সৈনিক।
ভয়ংকর তখনি বলা হয়- যখন অন্যায়ের প্রতিবাদ করেন, অধিকার আদায়ের জন্য কথা লিখেন, সত্য কথা প্রকাশ করেন, জনসাধারণের মনের কথা লিখেন, সবার প্রিয় ভয়ংকর “সাংবাদিক”। বাংলাদেশ সরকার ঠিকে থাকে সাংবাদিকের উপর ভর করে। দেশের একপ্রান্তের খবর অন্য প্রান্তে দ্রুত গতিতে পৌঁছে দেয় সাংবাদিক।
কিন্তু এই প্রকৃত সাংবাদিকদের মধ্যে মিশ্রিত হয়ে গেছে একধরনের- হলুদ সাংবাদিক, পকেট সাংবাদিক, দূর্নীতিবাজ সাংবাদিক, তেলবাজ সাংবাদিক, নেতা সাংবাদিক। সাধারণ মানুষ চিনতে পারবেন না। সবার সাথে পত্র পত্রিকার আইডি কার্ড গলায় বা কোমরে ঝুলানো আছে। এখানে কোনটা আসল আর কোনটা নকল চিনা খুব মুশকিল। তবে সহজে তাদের পরিচয় পাওয়া যাবে- “কর্মে”। আপনারা দেখবেন- এদের কে লোভ লালসায় ঘিরে রেখেছে তাদের নীতি আদর্শ ও সত্য প্রকাশ কে। সাংবাদিকের পরিচয় দিয়ে দিনের পর দিন ঘুমন্ত মানুষকে জবাই করছে। সাধারণ মানুষের রক্ত চুষে খাচ্ছে। তাদের পেশা হচ্ছে- সত্যকে মিথ্যা প্রমাণিত করা, মিথ্যা কে সত্য প্রমাণিত, দূর্নীতিবাজ দের সাথে হাত মিলিয়ে ভাগাভাগি করে অর্থ উপার্জন করা, সাধারণ মানুষকে কব্জা করে টাকা আদায় করা ইত্যাদি। এদের কে সমাজের সাধারণ মানুষ সামনাসামনি সালাম করে, পিছনে সমালোচনা করে। ওরা জাতির বিবেক নয়, জাতির অভিশাপ, সাংবাদিক জাতির কলঙ্ক। ওদের কথা বার্তায় বুঝা যাবে মস্ত বড় জ্ঞানী ও সবজান্তা।
উদাহরণ দিতে হলে-“টোকেন” সাংবাদিক মোস্তফা কামাল উরফে শামীমের কথা বলতে হয়। অর্থাৎ- ট্রাফিক পুলিশের টোকেন বিক্রি করে মোস্তফা কামাল শামীম। ট্রাফিক পুলিশের গোলাম ও দালাল কাজ করে। ট্রাফিক পুলিশের সাথে হাত মিলিয়ে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকার পত্রিকার নামের স্টিকার ও মানবাধিকারের স্টিকার করে পুলিশ টোকেন বিক্রি করছে।
সাংবাদিকের কাজ হচ্ছে, সত্যের পথে কলম চালাতে হবে। অন্যায় কে প্রতিহত করতে। আর তিনি তা না করে পুলিশ টোকেন বিক্রি করে সরাসরি দূর্নীতির সাথে জড়িত। সাধারণ শ্রমিকের রক্ত চুষে খান। তিনি সবসময়ই পরিচয় দিয়ে থাকেন- আমি “সাংবাদিক” মোস্তফা কামাল শামীম- দৈনিক জনবাণী পত্রিকার ব্যুরো প্রধান ও মানবাধিকার কর্মী। তিনির নাম বললে নাকি- সিলেট শহরে যেকোন ট্রাফিক পুলিশ গাড়ি সিগন্যাল করবে না। বড় ভাইর নাম বলেই হবে। দেখুন- হলুদ সাংবাদিকতার কত পাওয়া।
ওদের মত আরো অনেকেই পত্র পত্রিকার নাম বিক্রি করে খাচ্ছে। আপনারা দেখে নিবেন- অটোরিকশার সামনের গ্লাসে লাগানো বিভিন্ন পত্র পত্রিকার নামে স্টিকার ও পেট্রোল পাম্পের নামের স্টিকার গুলো, ঐ স্টিকার গুলো হচ্ছে পুলিশ টোকেন নামে পরিচিত। যা একটি স্টিকারের জন্য প্রতি মাসে ৫০০ টাকা থেকে ১২০০ টাকা আদায় করা হয়।
বাস্তবে দেখা যায়- এসব পত্র পত্রিকার কোন অস্তিত্ব নেই। অথবা পত্রিকার মূল সম্পাদক নিজেই জানেন না, কোথাও কি হচ্ছে।
এর মধ্যে একটি প্রমাণ দেই- দৈনিক আজকের জনবাণী’র সম্পাদক নিজেই জানেন না মোস্তফা কামাল শামীম “কে”?  অথচ মোস্তফা নিজেই বলেছে আমি দৈনিক আজকের জনবাণী’র নির্বাহী সম্পাদক হিসাবে পরিচয় দেন। একটি মানবাধিকারের কার্ড করে দেন ২-৪ হাজার টাকার বিনিময়ে।
আমার দৃষ্টিতে- সিলেট জেলায় ৩/৪শত উপরে হবে মানুষ সাংবাদিক পেশায় নিয়োজিত আছেন। এর মধ্যে ২০/৩০ জন বা এরচেয়ে বেশি হবে অপকর্মের সাথে জড়িত। ওদের জন্য অন্যান্য সাংবাদিক দেখলে সাধারণ জনগণ পিছন থেকে গালি দেয়। মিথ্যে অপবাদ দেয়। আবার কেউ বলে- সম্বাদিক, কেউ বলে- সাঙ্ঘাতিক।
আর কত অপমানিত হবো? আমরা কি এদের কে চিহ্নিত করতে পারিনা? ওদের কে কি পুলিশের হাতে তুলে দিতে পারিনা? আমাদের তো এই মহান পেশা কে টিকিয়ে রাখার জন্য অনেক দায়িত্ব আছে। এদের কে যদি এখনি প্রতিহত না করতে পারি, তাহলে কি আমাদের অস্তিত্ব টিকে থাকবে? টেলিভিশন ও পত্রিকার সংবাদ কর্মী সিলেট বিভাগে প্রধানগণ, জেলায় ও থানায় যারা দায়িত্ব পালন করছেন- আপনারা তো এবিষয়ে ভূমিকা পালন করতে পারেন?
সাংবাদিক পেশা কে আর কলঙ্কিত করবেন না। মানুষের কাজে আর ছোট করাবেন না।
লেখক : সাংবাদিক আবুল কাশেম

Sharing is caring!

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..