তাহিরপুরে ব্লেড সিজার করা সেই ডাক্তার গ্রেফতার

প্রকাশিত: ২:৩৪ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৪, ২০১৮

তাহিরপুরে ব্লেড সিজার করা সেই ডাক্তার গ্রেফতার

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি :: সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় ব্লেড দিয়ে সিজার করা সেই দুই পল্লী চিকিৎসকের মধ্যে এক জনকে গ্রেফতার করেছে তাহিরপুর থানা পুলিশ। তার নাম লাল মোহন বর্মণ (৪৫)। তিনি উপজেলার বালিজুরী ইউনিয়নের বড়খলা গ্রামের মদন মোহন বর্মনের ছেলে।

স্থানীয় ও পুলিশ সুত্রে জানাযায়,উপজেলার সীমান্ত এলাকা দিয়ে পল্লী চিকিৎসক লাল মোহন বর্মন ও নরুল আমিন বাংলাদেশ সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে গোপন সংবাদের ভিত্তিত্বে তাহিরপুর থানা পুলিশ জানতে পারে। এসময় সংবাদের ভিত্তিত্বে মঙ্গলবার ভোরে উপজেলার শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের সীমান্তের বীরেন্দ্রনগড় এলাকার জিরো লাইন থেকে তাহিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ননন্দন কান্তি ধরের নেতৃত্বে মামলার তদর্ন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মুহিত মিয়াসহ সঙ্গী র্ফোসদের সহযোগীতায় অভিযান চালিয়ে লাল মোহনকে গ্রেফতার করে। এসময় বালিজুরী ইউনিয়নের বড়খলা গ্রামের মৃত আব্দুল খালেকের ছেলে পল্লী চিকিৎসক অপর আসামী নরুল আমিন বাংলাদেশ সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে পালিয়ে যায়। এঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে তাহিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নন্দন কান্তি ধর জানান,ঘটনা ছিল খুবেই দুঃখজনক ঘটনার পর থানা থেকে একজন এসআই পাঠিয়ে খোঁজ খবর নিয়েছিলাম। ঐ দুই চিকিৎসক কে ধরতে আমাদের অভিযান অব্যাহত ছিল মঙ্গলবার ভোরে অভিযান চালিয়ে লাল মোহনকে আটক করতে সক্ষম হয়েছি।

আটককের খবর শুনে বড়খলা গ্রামের স্থানীয় এলাকাবাসী পুলিশ প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়ে তারা বলেন,শুনেছি আপোষ মিমাংশা করার চেষ্টা করছে মোটা অংকের টাকার বিনীময়ে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। মিমাংশা হলে ত এই রখমের অন্য সব ডাক্তাররা আরো সাহস পাবে। যে এত বড় অন্যায় করেও শাস্তি হল না। এই দিকে এই আলোচিত ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে অর্থের বিনিময়ে আপোষ মিমাংশা করতে জোড়ালো কার্যকর প্রদক্ষেপ নিচ্ছে ঐ দু ডাক্তারের সাথে যোগ সাজোসে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। ফলে প্রভাবশালী মহলের চাপে মামলা দিতে পারছিল না ভুক্তিভোগী পরিবার। তাই এই দুই হাতুরে ডাক্তারের কঠিন শাস্থির দাবী করছি।

এ বিষয়ে ঐ মৃত নবজাতক ও আহত গর্ভবর্তীর স্বামী সুজিত বর্মন জানান,আমার সুস্থ বাচ্চাটিকে মেরে ফেলল আর আমার স্ত্রী এখন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। এখন আমি সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আছি। আমি ঐ ডাক্তারদের বিচার চাই।

উল্লেখ্য,স্থানীয় এলাকাবাসী জানায়,উপজেলার বালিজুরী ইউনিয়নের বুধবার (৮আগষ্ট) রাতে বড়খলা গ্রামের সুজিত বর্মনের স্ত্রী শৌমরী বর্মনের প্রচন্ড প্রসব ব্যাথা উঠে। এই সময় সুজিতের পরিবারের লোকজন গ্রামের পল্লী চিকিৎসক লাল মোহন বর্মন ও নরুল আমিন নামের দু জনকে বিষয়টি অবগত করে। তারা ঘটনা শুনে পরেই দুইজন মিলেই সুজিতের বাড়িতে যায়। ঐ দুই ডাক্তার ঐ গভবর্তীর শরীরিক অবস্থা দেখে পরিবারের লোকজনকে জানায় পেটের বাচ্চা মারা গেছে আর মায়ের অবস্থা বেশী ভাল না। এই অবস্থায় সুজিতের পরিবারের লোকজকে দুই ডাক্তার আরো জানায়,দ্রæত সিজার করাতে হবে। আর তারা নিজেরাই সিজার করতে পারবে বলে জানায়। পেটের বাচ্চা মারা গেছে শুনে সুজিতের পরিবারের লোকজন কি করবে দিশেহারা হয়ে পরে। কোন পথ না বুজেই ঐ দুই ডাক্তারের কথায় রাজি হয়ে যায়। এই দুই ডাক্তার এর পরেই সুজিতের বসত-বাড়িতেই সিজার করতে গিয়ে অনবিজ্ঞ থাকায় গর্ভবতীর যোনী পথ বেøড দিয়ে অতিরিক্ত কেটে বাচ্চা বের করে আনতে গিয়ে নবজাতক শিশুর মাথাসহ শরীলের বিভিন্ন অংশ কেটে ফেলে। এতে বাচ্চাটি মারাতœক ভাবে আহত হয়। কিন্তু বাচ্চা মরা যায় নি। কেটে যাওয়া অংশে কয়েকটি সেলাই ও করে তারা। এই অবস্থায় বাচ্চাটিকে বাচাঁতে দ্রæত পাশ্বভর্তি বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার পথেই মারা যায়। অতিরিক্ত রক্তক্ষরনে গুরুত্বর আহত অবস্থায় শৌমলী বর্মন (বাচ্চার মা) কে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করা হয়। প্রসুতিকে আশংকা জনক অবস্থা যোনী পথে অতিরিক্ত কাটা অংশ সেলাই করেন কর্তব্যরত ডাক্তারগন। এই ঘটনা বৃহস্পতিবার বিকালে জানাজানি হলে ব্যাপক তুলপার সৃষ্টি হয়। ঘটনার পর থেকেই ঘা ডাকা দিয়েছে ঐ দুই পল্লী চিকিৎসক। এর প্রয়োজনীয় চিকিৎসা চলছিল গত বুধবার থেকে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। এরপর ৪দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর আরো উন্নত চিকিৎসার জন্য শনিবার (১১আগষ্ট) দুপুরের সিলেট রের্ফাট করেছিল কর্তরত ডাক্তারগন।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..