সিলেট ১১ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৬শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৮ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৫:৫২ অপরাহ্ণ, জুন ২৬, ২০১৮
স্টাফ রিপোর্টার :: সাম্প্রতিক বন্যায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে সিলেটের আন্তঃজেলা যোগাযোগের প্রধান চারটি সড়ক। সিলেট শহরের সঙ্গে উপজেলা শহরগুলোর যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম এসব সড়ক অনেক স্থানে ভেঙে গেছে। কোথাও কোথাও সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্তের। এতে ভেঙে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা।সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সিলেটে এবারের বন্যায় সওজের আওতাধীন সড়কের শতাধিক কিলোমিটার রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সিলেট-জকিগঞ্জ, চারখাই-বিয়ানীবাজার, দরবস্ত-কানাইঘাট-শাহবাগ ও সারি-গোয়াইনঘাট সড়ক। এর মধ্যে খুবই বেহাল দশা সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কের। বন্যার পানির কারণে সড়কটির প্রায় ৫ কিলোমিটার অংশজুড়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে এ সড়ক দিয়ে যান চলাচল প্রায় বন্ধ রয়েছে।সওজ ছাড়াও সিলেটের বিভিন্ন উপজেলা শহরের স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) আওতাধীন বেশকিছু সড়ক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।এলজিইডি কর্মকর্তারা বলছেন, এখনো ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি। তবে ১২০ কিলোমিটারের মতো ক্ষতি হতে পারে।এ বিষয়ে সিলেট সওজ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রঞ্জন সামন্ত বলেন, বন্যায় সিলেট-জকিগঞ্জ, চারখাই-বিয়ানীবাজার, দরবস্ত-কানাইঘাট-শাহবাগ ও সারি-গোয়াইনঘাট সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কের কিছু অংশ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এ সড়কটিতে যান চলাচল চালু রাখতে আমরা প্রাথমিক সংস্কার কাজ শুরু করেছি। আর জুলাইয়ে ক্ষতিগ্রস্ত সবগুলো সড়ক পূর্ণ সংস্কার হবে। তবে কী পরিমাণ সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তা এখনো নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি বলে জানান তিনি।টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সম্প্রতি সিলেটের সীমান্তবর্তী কয়েকটি উপজেলায় বন্যা দেখা দেয়। পাহাড়ি ঢল ও নদীর পানিতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে তলিয়ে যায় বিভিন্ন উপজেলা। সিলেটের জকিগঞ্জ, কানাইঘাট, গোয়াইনঘাট, বিয়ানীবাজার, গোলাপগঞ্জ, বালাগঞ্জ, ওসমানীনগর ও কোম্পানীগঞ্জের বিস্তীর্ণ এলাকা বন্যায় তলিয়ে যায়। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়ে তিন লক্ষাধিক মানুষ। বন্যায় ঘরবাড়ির পাশাপাশি তলিয়ে যায় সড়কও।সিলেট জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বন্যায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জকিগঞ্জ উপজেলা। এ উপজেলার সড়কও সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সিলেট-জকিগঞ্জ সড়ক ছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন সড়ক চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে বন্যার পানিতে।ঢল ও বৃষ্টি থামায় গত সোমবার থেকে বন্যার পানি কমতে শুরু করে। এরই মধ্যে বাড়িঘর ও প্রধান সড়কগুলো থেকে নেমে গেছে পানি। পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে দশ্যমান হয়েছে ক্ষয়ক্ষতির চিত্র।জকিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিজন কুমার সিংহ জানান, বন্যার পানির তোড়ে ক্ষত-বিক্ষত হয়ে পড়েছে উপজেলার প্রায় সড়ক। ব্রিজ, কালভার্ট ও সড়ক ভেঙে যাওয়ার কারণে মানুষের যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সিলেট-জকিগঞ্জ প্রধান সড়কের অবস্থা আগেই নাজুক ছিল। বন্যার পর ভাঙন ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। তিনি বলেন, আমরা এলাকার জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের কাজ করছি। এরপর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন প্রেরণ করব।
এলজিইডি সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী এইচএম মহসিন বলেন, বন্যার পানি মাত্র নেমেছে। এখনো আমরা ক্ষয়ক্ষতি সম্পূর্ণ নিরূপণ করতে পারিনি। তবে উপজেলা কর্মকর্তাদের মাধ্যমে যেটুকু জেনেছি, ১২৩ কিলোমিটারের মতো পাকা সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এছাড়া আরো কিছু কাঁচা ও আধাপাকা সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণের পর সংস্কারকাজ শুরু হবে বলে জানান তিনি।এদিকে, বন্যাদুর্গত এলাকার ক্ষয়ক্ষতি দ্রুত নির্ধারণ ও প্রয়োজনীয় চাহিদাপত্র তৈরি করে পাঠাতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব ড. জাফর আহমেদ খান। শুক্রবার বিকালে সিলেট সার্কিট হাউসে সিটি করপোরেশন, এলজিইডি, ডিপিএইচই, পৌরসভা, জেলা পরিষদ ও উপজেলা পরিষদের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ নির্দেশ দেন তিনি।ড. জাফর আহমেদ খান বলেন, সিলেটে বন্যায় সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ সড়কগুলো সংস্কারে জরুরিভিত্তিতে পদক্ষেপ নেয়া হবে।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd