সিলেট ৩রা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৩০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১:৩৭ পূর্বাহ্ণ, মে ৩১, ২০১৮
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি :: সুনামগঞ্জের হাওর পাড়ে ও সীমান্ত এলাকায় অবিনব কায়দায় চলছে ভারতীয় তীর খেলার বানিজ্য। তীর খেলার নামে জুয়ার আসর দিন দিন ভয়াবহ হয়ে উঠেছে তীর কাউন্টার ডটকম অনলাইন খেলার নামে হাওরপাড়ের বিভিন্ন গ্রাম ও সীমান্ত এলাকার গ্রাম গুলোতে। এই জুয়া খেলার আসক্ত হয়ে অন্ধকারে ডুবে যাচ্ছে সমাজের একটি বিরাট জনগোষ্টি। যাদের অধিকাংশই তরুন। যারা দেশের ভবিষ্যত্ব তারাই আজ দিন দিন এই খেলায় ১০টাকায় ৭শত টাকা লাভের আশায় অন্ধকারের দিকে দাবিত হচ্ছে সবার সামনেই।
এদের একটি অংশ এই জুয়া খেলার হাত পাকা পুক্ত করে আরও বড় জুয়ারী এবং অপরাধিতে পরিনত হচ্ছে। এ তীর খেলার পরিচালনাকারীরা স্থানীয় প্রভাবশালী মহল এবং সীমান্তের সাংবাদিক নামদারী লোকজনকে মেনেজ করেই খেলা পরিচালিত করছে বলে মনে করেন স্থানীয় সচেতন মহল।
একাধিক সূত্রে জানাযায়,এই জুয়ার আসরটি পরিচালিত হয় ভারতের মেঘালয় রাজ্যের রাজধানী শিলংয়ে। আর এই খেলায় স্থানীয় এজেন্টের কাছ থেকে ১০টাকা থেকে ২০টাকা মূল্যের কুপন কিনেন স্থানীয় প্রাইমারী স্কুল পরোয়া শিক্ষার্থী,মাধ্যমিক,উচ্চ মাধ্যমিক পড়–য়া শিক্ষার্থীরা। বাদ পড়ছে না শ্রমিক,ব্যবসায়ী,বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরাও। স্থানীয় এজেন্টরা তাদের কাছ থেকে কেনা কুপনের কমিশন রেখে বাকি টাকা পাঠিয়ে দেয় ভারতের তীর খেলা পরিচালনা কারীদের কাছে। তথাকথিত তীর খেলাটি এখন একটি আন্ত-রাষ্ট্রীয় জুয়া খেলা পরিনত হয়েছে। এর মাধ্যমে শুধু তরুন সমাজ অর্থ খোয়াচ্ছেন না এর মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে এ দেশের লাখ লাখ টাকা ভারতে পাচার হচ্ছে প্রতিদিন। এ খেলার সুনামগঞ্জ জেলাসহ দেশের আনাচে কানাছে হলেও ধরা ছোঁয়ার বাহিরে থাকছে এদেশের স্থানীয় খেলা পরিচালনার সহযোগীতা কারীর ঐ সব মূলহুতারা। ফলে বাড়ছে এই খেলার চাহিদা। এই খেলা সাপ্তাহের ৬দিন দৈনিক ২বার করে চলে। এই খেলাটি সরাসরি চলে না। চলে অনলাইনের মাধ্যমে। এই খেলায় ১-৯৯পর্যন্ত সংখ্যার চরকি থাকে। যারা এই খেলায় অংশ নিতে চায় তারা এই সংখ্যা গুলো থেকে একটির উপর বাজি ধরে। যে সংখাটির উপর তীর বীদ্ধ হয় তারাই বিজয়ী এবং তারা বিজয়ী হিসাবে ১০টাকায় ৭শত টাকা পায়। যাদের তীর পরে নি তারাই পরাজিত। জেলার তাহিরপুর উপজেলার উত্তরশ্রীপুর ইউনিয়নের নতুন বজার,বড়ছড়া,চারাগাঁও,বাগলী,লাকমা,টেকেরঘাটসহ বিভিন্ন গ্রাম গুলো সীমান্ত এলাকা হওয়ায় এই খেলা চলছে বেশি স্থানীয় দালালদের প্ররোচনায় ও ঐ এলাকার স্থানীয় কয়েকজন নামধারী সাংবাদিক জরিত থেকে মাসোহারা নিচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
মাসুক মিয়া,আবুল কালাম,সাদেক আলী,রফিকুলসহ সীমান্ত এলাকা ও হাওরপাড়ের সচেতন মহল জানান,শুধু তীর খেলা নয় হাওর পাড়ের ও সীমান্তের জনপথে ব্লুফিল্ম প্রদশন,ভিডিও গেমস,নেশা জাতীয় সকল পন্য পরিচালনার আসর গড়েছে পাকাপুক্ত ভাবে। জাতীর একটি অংশকে নিঃশ্বেস করে দিচ্ছে শুরুতেই একবারে ভেতর থেকে। অথচ সবাই নির্বিকার। এই সর্বনাশা পতনের হাত থেকে উঠতি বয়সী যুব সমাজ কে বাচাঁতে আইন শৃংখলা বাহিনীর কঠোর হস্তক্ষেপ,পরিবারের অভিবাবকগন গুরুত্বসহ কারে সন্তানদের দিকে নজর রাখতে হবে না হলে ধংশ হবে সন্তানদের নিয়ে ভবিষত্বের সকল স্বপ্ন আশা।
তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কামরুল জানান,সামন্য কিছু পাবার আশায় একটি বড় অংশ যাদের উপর দেশের ভবিষত্ব তারাই নষ্ট হচ্ছে,নষ্ট করে দিচ্ছে সুকৌশুলে স্থানীয় দালালারা। এখনেই এই সব বিষয়ে প্রতিরোধ গড়ে না তুললে ভেঙ্গে পড়বে সামাজিক অবকাঠামো,আইন-শৃংখলা,পরশপরের প্রতি ভ্রাতিত্ববোধ।
তাহিরপুর থানার ওসি নন্দন কান্তি ধর জানান,এই তীর খেলাটি নির্মোলে গুরুত্ব সহকারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছি। প্রায়ই অভিযান পরিচালনা করি। তীর খেলা একবারেই নির্মোল করতে হলে বাবা,মা পরিবারের সকল সদস্যসহ নিজ নিজ এলাকার সবাই সচেতন হতে হবে। সব সময় ছেলেদের খোঁজ রাখতে হবে তারা কোথায় যায় কি করে তা হলে কিছুটা হলেও নির্মোল করা সম্ভব হবে। আর আমাদের পক্ষ থেকে কোন ছাড় পাবে না কোন ব্যক্তিই।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd