সিলেট ৫ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২রা জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ২:০০ পূর্বাহ্ণ, মে ২৩, ২০১৮
ডেস্ক নিউজ :: যে কোনো মূল্যে দেশের হাসপাতাল ও উপজেলা পর্যায়ের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোয় চিকিৎসকসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চাইছে সরকার। এ জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জুনিয়র কনসালট্যান্ট ও মেডিক্যাল অফিসারদের বলা হয়েছে, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তার আদেশ-নির্দেশ অবশ্যই মেনে চলতে হবে। অন্যথায় বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আর মেডিক্যাল অফিসারদের বলা হয়েছে, কর্মস্থলীয় উপজেলার ভৌগোলিক সীমানার বাইরে গেলেই সিভিল সার্জনের অনুমতি লাগবে।
অন্যদিকে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসায় শিক্ষকদের আরও আন্তরিকতার জন্য প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, শিক্ষকরা চিকিৎসক হিসেবে অবশ্যই পরিচালকের পরামর্শমতে কাজ করবেন। এ ক্ষেত্রে অবহেলা, গাফিলতি, শৈথিল্য, অনুপস্থিতি ইত্যাদি ক্ষেত্রে পরিচালক বিষয়টি লিখিতভাবে অধ্যক্ষকে অবহিত করবেন এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও মন্ত্রণালয়ে এর অনুলিপিও দেবেন। উল্লেখ্য, গত ফেব্রুয়ারি মাসেও গড়ে সারাদেশের চিকিৎসা সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোয় চিকিৎসক-কর্মচারীদের উপস্থিতি ছিল ৪৮.১ শতাংশ অর্থাৎ অর্ধেকেরও কম। এ সমস্যা থেকে উত্তরণে সর্বশেষ ১৩ মে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন হাসপাতালের চিকিৎসক-কর্মচারীদের উপস্থিতি নিশ্চিত করার জন্য।
জানা গেছে, স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসক-কর্মচারীর উপস্থিতি বাড়ানোর বিষয়টি নিয়ে ১৯ মার্চ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে বৈঠক হয়। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব বাবুল কুমার সাহার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে গত ফেব্রুয়ারি মাসে দেশের ৮টি বিভাগের সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসক-কর্মচারীর উপস্থিতির তথ্য তুলে ধরা হয়। এতে দেখা গেছে, খুলনা বিভাগে ৩৭.৯ শতাংশ, বরিশালে ৫৬.৬ শতাংশ, চট্টগ্রামে ৪৪.৩ শতাংশ, ঢাকায় ৪৯.২ শতাংশ, ময়মসিংহে ৪১.৫ শতাংশ, রাজশাহীতে ৪২.৬ শতাংশ, রংপুরে ৪২.৯ শতাংশ এবং সিলেটে ৫০.৯ শতাংশ চিকিৎসক-কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন। অর্থাৎ ফেব্রুয়ারিতে সারাদেশের স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসক-কর্মচারীদের মাত্র ৪৮.১ শতাংশ উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে অংশগ্রহণকারীরা জানান, চিকিৎসক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মনস্তাত্ত্বিক সমস্যা; কর্মস্থলে কাজ করার মানসিকতা না থাকা; জবাবদিহিতার অভাব; মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অধ্যক্ষ ও পরিচালকদের মধ্যে সমন্বয়হীনতা; উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তাকে কনসালট্যান্টদের মানতে না চাওয়া এবং অনুপস্থিত চিকিৎসক-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় এ ধরনের ঘটনা বাড়ছে বলে জানান।
বৈঠকে আলোচনার ভিত্তিতে স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসক-কর্মচারীর উপস্থিতি নিশ্চিত করতে বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো হচ্ছেÑ বিলম্বে অফিসে আসা, দ্রুত অফিস ত্যাগ করা এবং অনুমোদন ব্যতীত অনুপস্থিত চিকিৎসক-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান হিসেবে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তার আদেশ অবশ্যই কনসালট্যান্টদের মান্য করতে এবং অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালনে বাধ্য করা। মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অধ্যক্ষ ও পরিচালকদের মধ্যে সমন্বয় করে উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। ওই সভার পরই নতুন নির্দেশনাযুক্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রণালয়।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd