সিলেট ৯ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৬শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৯ই শাবান, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৮:৩২ অপরাহ্ণ, মে ২০, ২০১৮
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় বিয়ের দাবীতে প্রেমিকের বাড়িতে অনশন করছে এক স্কুলছাত্রী। উপজেলার সীমান্তবর্তী মনিয়ন্দ ইউনিয়নের মনিয়ন্দ পূর্বপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বা মেম্বাররা ঘটনার কথা জানলেও কোনো পদক্ষেপ নেননি।
প্রেমিক আক্তার হোসের (২৫) ওই গ্রামের বাসিন্দা মৃত মো. দেলোযার হোসেনের ছেলে। সে বিবাহিত এবং প্রবাস ফেরৎ। তার একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। অনশনরত ওই কিশোরী ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাকাইল উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী। প্রেমিকার অবস্থানের কথা জানার পর থেকেই পলাতক আক্তার হোসেন।
এদিকে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া মনিয়ন্দ গ্রামের প্রেমিক আক্তার হোসেনের সঙ্গে বিয়ের দাবিতে বিষের বোতল নিয়ে প্রেমিকের বাড়িতে প্রেমিকা অবস্থান নিয়েছেন। হয় বিয়ে, না হয় প্রেমিকের বাড়িতেই বিষপানে আত্মহত্যা-এ ব্রত নিয়ে প্রেমিকা স্কুল ছাত্রী শাহীদা আক্তার বৃহস্পতিবার (১৭মে) সকাল থেকে অবস্থান করছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার মনিয়ন্দ পূর্বপাড়ার মৃত দেলোয়ার হোসেনের প্রবাস ফেরৎ আক্তার হোসেনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে একই এলাকায় বড় বোনের (দুলা ভাইয়ের) বাড়িতে বেড়াতে আসা ওই স্কুল ছাত্রী শাহীদা আক্তারের। গত দেড় মাস ধরে সম্পর্ক চলাকালে আক্তার হোসেন ওই মেয়েকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে অবৈধভাবে মেলামেশা শুরু করে।
গত সোমবার বিয়ে করার কথা বলে আক্তার তাকে নিয়ে আবাসিক হোটেলে রাত্রি কাটায়। তিনদিন পর বিয়ে না করে বুধবার সন্ধ্যায় শাহীদাকে তার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয় প্রেমিক আক্তার। বাড়িতে যাওয়ার পর পরিবারের লোকজনের কাছে বিষয়টি খুলে বলে শাহীদা। পরদিন বৃহস্পতিবার সকালে প্রেমিকের বাড়িতে এসে আক্তারকে ওই শিক্ষার্থী বিয়ের চাপ দেয়। এসময় প্রেমিক আক্তার তাকে ফিরে যেতে বলে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়।পরে প্রেমিকা শাহীদা প্রেমিক আক্তারের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অনশন শুরু করেন।
এলাবাসী অনশনের বিষয়টি অবগত হলে স্থানীয় ইউপি সংরক্ষিত মহিলা সদস্য বিনা আক্তারকে অবহিত করেন।পরে স্থানীয়দের নিয়ে ছেলের মামা আনিছ মিয়াকে ম্যানেজ করে অনশনকারী ওই মেয়েকে বিয়ে করাতে রাজি হয়। কিন্তু প্রেমিক আক্তার হোসেন ওই মেয়েকে বিয়ে করতে রাজি নয়।
অনশনকারী মেয়ের খালা আরজুদা বেগম জানান, আক্তার নামে ছেলেটি আমার ভাগ্নিকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তোলে। অবুঝ মেয়েটিকে স্কুল থেকে ফুসলিয়ে নিয়ে ৩দিন ধরে সে বিভিন্ন হোটেলে রাখে। সে বিয়ে না করে মেয়েটির সর্বনাশ করে বাড়িতে পাঠায়। কিন্তু আক্তারকে পরে বিয়ের চাপ দিলে সে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানায়।অবশেষে আমার বোনের মেয়ে বিষের বোতল হাতে নিয়ে বিয়ের দাবিতে ছেলের বাড়িতে অবস্থান নেয়।
অনশনরত শাহীদা আক্তার জানান, আক্তার সঙ্গে হোটেলে টানা তিনদিন এক বিছানায় ছিলাম। তার সঙ্গে ঘুমাইছি। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সে আমার দেহ ভোগ করেছে। সে আমাকে বিয়ে করতে হবে। বিয়ে না করলে তার বাড়িতেই আত্মহত্যা করব। এছাড়া আমার আর কোনো উপায় নাই।
ইউপি সংরক্ষিত মহিলা সদস্য বিনা বেগম বলেন, স্থানীয়ভাবে অনশনের বিষয়টি সুরাহা চলছে। সুরাহা না হলে বিয়ের ব্যবস্থা করা হবে।
মনিয়ন্দ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. কামাল ভূঁইয়া ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ সভাপতি মো. মফিজুর রহমান শিশুর কাছে জানতে চাইলে বলেন, ছেলে ও তার পরিবার ওই মেয়েকে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।মেয়ের পরিবার পরিষদে বা থানায় লিখিত অভিযোগ করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে আখাউড়া থানার ওসি মোশারফ হোসেন তরফদার বলেন, অনশনের বিষয়টি আমরা এখনো অবগত নই। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd