সিলেট ৪ঠা অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৯শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৩০শে রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১২:৩৮ পূর্বাহ্ণ, মে ১২, ২০১৮
ক্রাইম ডেস্ক :: সিলেটের সীমান্তবর্তী এলাকায় আবারো একটি পাথর খেকো চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে। কোন নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে পেশী শক্তির বলে এই চক্র বহুল আলোচিত ভোলাগঞ্জ রোপওয়ের সংরক্ষিত এলাকায় বেআইনিভাবে অবৈধ ‘বোমা মেশিন’- এর মাধ্যমে সেখানকার কোটি কোটি টাকার পাথর সম্পদ লুটে নিচ্ছে। গত ১০/১৫ দিন যাবত্ সেখানে এই ধ্বংসযজ্ঞ চলছে। অবৈধ পাথর উত্তোলন বন্ধে প্রশাসনের তরফ থেকে সংরক্ষিত এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হলেও তাতে কোন কাজ হচ্ছে না। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ এর প্রতিকার চেয়ে জেলা প্রশাসনকে বলেছে অবৈধ পাথর উত্তোলন বন্ধ না হলে তারা কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবেন। ভোলাগঞ্জ রোপওয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ সরকারি স্থাপনা। এই প্রতিষ্ঠানের প্রায় ১৪১ একর নিজস্ব ভূমি রয়েছে। সেখানে বেশ কয়েকটি ভবন ও শতকোটি টাকার যন্ত্রপাতি বিদ্যমান আছে। এই সম্পদ পাহারায় আনসার ও রেলওয়ে পুলিশ নিয়োজিত আছে। বর্তমানে বাংকারের সংরক্ষিত এলাকা থেকে বোমা মেশিনের মাধ্যমে পাথর উত্তোলন করে সরকারের শতকোটি টাকার সম্পদ ধ্বংসস্তূপে পরিণত করা হচ্ছে। অবৈধ পাথর উত্তোলন বন্ধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাঝে মাঝে অভিযান পরিচালিত হলেও তাতে তেমন কাজ হচ্ছে না। পাথর খেকো চক্র কিছুদিন তাদের অপকর্ম বন্ধ রাখলেও প্রশাসন একটু ঢিলেমি দিলেই বোমা মেশিনের মাধ্যমে পাথর উত্তোলনের অবৈধ কর্মটি নতুন উদ্যমে শুরু করে দিচ্ছে। এলাকাবাসী বলেন, এই অবস্থা চলতে থাকলে রোপওয়ের সংরক্ষিত এলাকার অস্তিত্ব হারিয়ে যাবে এবং সেটি হলে বর্ষায় ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ওমঘাটে এসে ভয়াবহ রূপ ধারণ করে ভোলাগঞ্জের গ্রাম ও জনপদ ধ্বংস করে দেবে। পরিবেশ হবে বিপর্যস্ত। উল্লেখ্য, বোমা মেশিনের মাধ্যমে ভোলাগঞ্জ পাথর কোয়ারী থেকে পাথর উত্তোলন না করার জন্য হাইকোর্টেরও নির্দেশনা রয়েছে। স্থানীয় সূত্র জানায়, কোম্পানীগঞ্জ আওয়ামী লীগের নাম ভাঙ্গিয়ে কয়েকজন যুবলীগ ও আওয়ামী লীগ নেতা ও তাদের নিয়োজিত সন্ত্রাসী বাহিনী রোপওয়ের পাথর বিক্রির মাধমে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাত্ করছে। বিগত এপ্রিল মাসে ভোলাগঞ্জ পাথর কোয়ারীতে অভিযান চালায় প্রশাসন। সেখানে অবৈধ বোমা মেশিন পুড়িয়ে ফেলে তারা। কিন্তু সেখান থেকে ফেরার পথে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ পুলিশের উপর দুর্বৃত্তরা চড়াও হয়। এরপর থেকে অবৈধ বোমা মেশিন বন্ধে বেশ তত্পরও ছিল স্থানীয় প্রশাসন। এপ্রিলে সরকারি দলের ক্যাডার পরিচয়ধারী স্থানীয় কিছু লোক সংরক্ষিত ওই এলাকা থেকে পাথর চুরি শুরু করলে গত ২২ এপ্রিল থেকে রোপওয়ের সংরক্ষিত এলাকায় অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন যা এখনো বলবত্ রয়েছে। এ অবস্থায় দুর্বৃত্ত চক্র আবারও অবৈধ বোমা মেশিনের সাহায্যে সেখানকার মূল্যবান পাথর উত্তোলন করায় অনেকেই বিস্ময় প্রকাশ করছেন। সংরক্ষিত এলাকা পাথর খেকোদের হাত থেকে রক্ষা ও তাদের শাস্তির দাবিতে সিলেটের জেলা প্রশাসকের কাছে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, কোম্পানীগঞ্জ আওয়ামী লীগের নাম ভাঙ্গিয়ে জেলা ও থানা পর্যায়ের কতিপয় যুবলীগ ও আওয়ামী লীগ নেতা এই অপকর্মটি করে চলেছে। স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, ভোলাগঞ্জে রোপওয়ের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিতদের ‘ম্যানেজ’ করে এই কাজ চলছে। তবে রেলওয়ে নিয়োজিত নিরাপত্তাকর্মী সাইদুর রহমান এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, এলাকার লোকজন রোপওয়ের চারপাশে ‘বোমা মেশিন’ স্থাপন করেছে। ইউএনওর নির্দেশ পেলেই তিনি এসব মেশিন অপসারণে নামবেন।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd