সিলেট ৯ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৬শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৯ই শাবান, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৭:৫২ অপরাহ্ণ, মে ১০, ২০১৮
আলী হোসেন, জৈন্তাপুর থেকে ফিরে :: সিলেটের জৈন্তাপুরে চলছে পাহাড় ও টিলা কাটার মহোউৎসব চলছে। অনবৃষ্টিতে ঘটতে পারে প্রাণহানি, পরিবেশ ধ্বংসের মূখে। সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসন নিরব।
সরে জমিন ঘুরে দেখা যায় জৈন্তাপুর উপজেলা প্রায় সব কয়েকটি ইউনিয়নে ছোট বড় টিলা ও পাহাড় রয়েছে। একশ্রেনীর ভূমি খেকু চক্র এসব পাহাড় ও টিলা কেটে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করছে। উপজেলা নিজপাট ইউনিয়নের গৌরীশংঙ্কর, কমলাবাড়ী, গুয়াবাড়ী, সারীঘাট চারিকাটা ইউনিয়নের আঞ্জাগ্রাম, বালিদাঁড়া, নয়াখেল উত্তর, নয়াখেল পশ্চিম, চামটি, সহ বেশ কয়েকটি গ্রাম, এছাড়া বাংলাদেশের সর্ববৃহত গ্যাস ক্ষেত্র উপজেলার সিলেট গ্যাস ফিল্ডের সংরক্ষিত এলাকায় নির্বিচারে চলছে পাহাড় কাটার মহোউৎসব। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসীরা জানান আমরা পাহাড় কাটা বন্দের জন্য একাধিক বার অভিযোগ করা হলেও সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসন কোন কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না। ফলে দিন দিন পাহাড় খেকু চক্র স্থানীয় ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা, বন বিভাগ ও উপজেলা ভূমি অফিসের কিছু সংখ্যাক অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজেসে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে পরিবেশের ছাড়পত্র ছাড়াই তারা পাহাড় ও টিলা কেটে উজাড় করছে। ফলে পরিবেশের মারত্বক ঝুকির মধ্যে রয়েছে। চারিকাটা ইউনিয়নের বেশ কিছু পাহাড় রয়েছে বন বিভাগের অধিনে। বন বিভাগের কিছু সংখ্যাক অসাধু কর্মকর্তারা পাহাড় খেকু চক্রের সাথে আতাত করে নির্বিচারে এসকল পাহাড় ও টিলা কর্তন করছে। জৈন্তাপুর ইউনিয়ন ভূমি ও উপজেলা ভূমি অফিসের কিছু সংখ্যাক কর্মকর্তার যোগসাজেসে নিজপাট ইউনিয়নের গৌরীশংঙ্কর, কমলাবাড়ী, গোয়াবাড়ী ও সারীঘাট এলাকায় চলছে পাহাড় কর্তন এবং প্রভাবশালী নেতাদের ছাত্রছায়ায় বাংলাদেশের সর্ববৃহত গ্যাস ক্ষেত্র হরিপুর উৎলারপার জ্বলাটিলা এবং হরিপুর গ্যাস ফিল্ড কার্যালয় সংলগ্ন উমনপুর এলাকায় চলছে পাহাড় ও টিলা কর্তন করে পাহাড়ের চুড়ায় অপরিকল্পিত ভাবে তৈরী হচ্ছে বসতবাড়ী। যাহা প্রতিদিন মহা সড়কে যাতায়াতকারী প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা দেখে থাকলেও অদৃশ্য কারনে প্রতিকারে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
সচেতন মহলের দাবী বাংলাদেশের সর্ববৃহত গ্যাস ক্ষেত্র হরিপুরের বিষ্ফোরিত এলাকায় যে হারে পাহাড় ও টিলা ধ্বংস করা হচ্ছে তাতে আবারও ঐ গ্যাসক্ষেত্র এলাকায় বিষ্ফোরনের আশংঙ্কা বিদ্যমান রয়েছে। জৈন্তাপুর উপজেলা বাংলাদেশের শ্রেষ্ট বৃষ্টিপাত অঞ্চল হিসাবে পরিচিত হওয়ার ফলে অতি বৃষ্টি ও অনাবৃষ্টির কারনে এসকল পাহাড় ও টিলা ধষে যে কোন সময় বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে ও প্রাণহানির আশংঙ্কা রয়েছে। ইতোপূর্বে চারিকাটা ইউনিয়নে কাটা পাহাড় ধর্ষে ২শিশুর মৃত্যুর হয় এবং আহত হয় ৩জন। এদিকে জৈন্তাপুর উপজেলা সহকারী কমিমনার ভূমি যোগদানের পর চারিকাটা ইউনিয়নে পাহাড় কাটার সময় অভিযান পরিচালনা করে ২জনকে ১মাসের সাজা প্রদান এবং ১০হাজার টাকা জরিমানা করেন। এর পর হতে অজ্ঞাত কারনে উপজেলার আর কোথাও কোন অভিযান পরিচালনা হচ্ছে না, ফলে দিন দিন নির্বিচারে উপজেলার সর্বত্র উৎসব মূখর পরিবেশে পাহাড় কাটা অব্যহত রয়েছে।
এবিষয়ে জানতে জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌরীন করিমের কার্যালয়ে আলপকালে তিনি জানান- উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে প্রচুর পরিমান পাহাড় ও টিলা রয়েছে। যা জৈন্তাপুর উপজেলার পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। পাহাড় কর্তন বন্দে উপজেলা প্রশাসন ইতোপূর্বে ৬টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের পত্রের মাধ্যমে কমিটি গঠনের নিদের্শ দেওয়া হয়েছে এবং কারা কারা পাহাড় ও টিলা কাটার সাথে জড়িত একটি তালিকা প্রনয়নের জন্য নির্দেশ প্রদান করলেও এখনও কোন কমিটি কিংবা তালিকা আমার দপ্তরে আসেনি। হরিপুর অঞ্চলের গ্যাস ফিল্ডের সংরক্ষিত এলাকায় সমুহে পাহাড়কাটা বন্দে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সিলেট গ্যাস ফিল্ডের প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে অবহিত করলেও কোন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহন করছেন না। তিনি আরও বলেন পাহাড়কাটা বন্দে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে যে কোন সময় অভিযান পরিচালনা করা হবে বলে তিনি জানান।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd