সিলেট :: সিলেট সদর উপজেলার মোগলগাঁও ইউনিয়নের যোগীরগাঁও গ্রামের কবরস্থানের পবিত্রতা রক্ষা দাবী প্রেক্ষিতে গতকাল ৭ মে সোমবার দুপুরে জালালাবাদ থানার অফিসার ইনচার্জ শফিকুল ইসলাম যোগীরগাঁও পঞ্চায়েতী কবরস্থান ও প্রিমিয়াম ফিশ এগ্রো ইন্ডাস্টিজ লিমিটেড পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি উভয় পক্ষের সাথে মতবিনিয় করেন।
মতবিনিময় শেষে কোম্পানীকে দুষিত পানি বন্ধের কথা বললে, প্রিমিয়াম ফিশ এগ্রো ইন্ডাস্টিজ লিমিটেডের কর্তৃপক্ষকে আগামী ২২ মে পর্যন্ত সময় চেয়ে নেন। ওসি তাদের প্রস্তাব গ্রহণ করে আগামী ২২ তারিখের মধ্যে অবশ্যই দুষিত পানি কোম্পানীর বাইরে যাতে না পারে সে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, কোম্পানীর দুষিত পানি কবরস্থানের পবিত্রতা নষ্ট করার পাশাপাশি পরিবেশকে দুষিত করছে। এটা সম্পূর্ণ বেআইনী। তাই পরিবেশ সুন্দর রাখার স্বার্থে দুষিত পানি অবশ্যই কোম্পানীর বাইরে আসা বন্ধ রাখতে হবে। এটা কোম্পানীর শুরু থেকেই করা উচিত ছিল তিনি বলেন।
এর আগে গত ২০ এপ্রিল শুক্রবার বাদ জুম্মা সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের যোগীরগাঁও প্রিমিয়াম ফিশ এগ্রো ইন্ডাস্টিজ লিমিটেডের সামনে গ্রাম ও এলাকাবাসীর উদ্যোগে এক মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। মানববন্ধন থেকে ১৫ দিনের মধ্যে সমস্যার সমাদান না করলে পরবর্তীতে এলাকাবাসী কঠোর কর্মসূচি দিবে বলে হুশিয়ারী উচ্চারণ করে। সেই অনুযায়ী গত ৪ মে শুক্রবার ১৫ দিন অতিবাহ হয়।
এলাকার শান্তি-শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা রক্ষার্থে গত ৫ মে শনিবার জালালাবাদ থানার অফিসার ইনচার্জ শফিকুল ইসলাম যোগীরগাঁওবাসী ও প্রিমিয়াম ফিশ এগ্রো ইন্ডাস্টিজ লিমিটেডের কর্তৃপক্ষকে থানায় সমস্যা সমাধানের জন্য বসার আহবান করলে গ্রামবাসীর পক্ষে সাংবাদিক মকসুদ হোসেন মকসুদ, এডভোকেট আব্দুল হান্নান, এলাকার মুরুব্বি শাহজাহান মিয়া, এরশাদ আলী, আফরোজ আলী, আলতাফ আলী, তৈয়বুর রহমান ভুলু, জমসিদ মিয়া, সুরুজ আলী এবং প্রিমিয়াম ফিশ এগ্রো পক্ষে সিইও মোহাম্মদ মাহবুবুল আলম চৌধুরী ও ম্যানেজার থানা যান। উভয় পক্ষের সাথে আলোচনার পর সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত হয়।
পরিদর্শনকালে উল্লেখিত গণ্যমান্য ব্যক্তিগণসহ আরো উপস্থিত ছিলেন মোঃ আবুল মিয়া, আব্দুর রাজ্জাক, শহীদ আহমদ, বেলায় মিয়া, বারিক আলী, ফয়সল মিয়া, হবি মিয়া, আব্দুস সত্তার, কাহার মিয়া, কালা মিয়া সহ গ্রামের জনগণ।
উল্লেখ্য, ইতোপূর্বে ফিশ এগ্রো কর্তৃপক্ষের সাথে প্রায় ২ বছর যাবৎ এলাকাবাসীর কয়েক দফায় আলাপ আলোচনা হয়েছে কিন্তু তারা সমস্যার সমাধান করবেন বলে আশ^াসই দিয়েছেন। বাস্তবে কোন উদ্যোগ নেননি। যার ফলে এলাকাবাসী গত ৯ এপ্রিল জেলা প্রশাসক ও জালালাবাদ থানায় স্মারকলিপি প্রদান করেন। এছাড়াও গত ১৬ এপ্রিল সিলেট বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তরেও স্মরকলিপি প্রদান করা হয়। গত ২০ এপ্রিল মানববন্ধন থেকে আলটিমেটাম দেয়া পর গতকাল বিষয়টির সমাধানে সমঝতা হয়।
এদিকে গত ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ইং তারিখে মোঃ আবুল মিয়া এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে জালালাবাদ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে জালালাবাদ থানা মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে প্রেরণ করেন। যার ফলে এখন মামলাটি বিচারাধিন রয়েছে।
Sharing is caring!