সিলেট ৩রা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৩০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৭:৩১ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৮, ২০১৮
আলী হোসেন,মৌলভীবাজার :: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে জমি সংক্রান্ত পূর্ব বিরোধের জের ধরে দেবর কর্তৃক পাঁচ সন্তানের জননী গৃহবধূ রোকেয়া বেগম (৪৩) এর গায়ে এসিড নিক্ষেপ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় কমলগঞ্জ থানা পুলিশ গৃহবধূর দেবর ময়ুর মিয়া (৪৫)কে আটক করেছে। এসিডদগ্ধ গৃহবধূকে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
শুক্রবার রাত ১টার দিকে কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নের ভানুবিল গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটে।
এসিডদগ্ধ রোকেয়া বেগমের ছেলে রোমান আহমদ অভিযোগ করে বলেন, শুক্রবার রাত ১টার দিকে তার মা প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিয়ে ঘরের বাইরে বের হলে পূর্ব থেকে ওঁত পেতে থাকা চাচা ময়ুর মিয়া (৪৫) ও তার সহযোগী মিলাদ মিয়া (২৭) গৃহবধূর উপর এসিড নিক্ষেপ করে। এসিডে গৃহবধূর গলা, কপাল, হাত ও বুকের কিছু অংশ ঝলসে যায়। গৃহবধূর চিৎকারে এসিড নিক্ষেপকারীরা পালিয়ে গেলে পরে বাড়ির লোকজন তাঁকে (রোকেয়া বেগমকে) উদ্ধার করে রাতেই প্রথমে কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে চিকিৎসকরা তাকে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। বর্তমানে তিনি হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় সার্জারি বিভাগের মহিলা ওয়ার্ডের ২২নং বেডে ডা. সুব্রত রায়ের তত্ত্বাবধানে আছেন।
মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালের ডা. সুব্রত রায় জানান, রোকেয়া বেগম চিকিৎসাধীন আছেন। মেডিকেল বোর্ডের পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বোঝা যাবে এটি আসলে এসিডদগ্ধের ঘটনা কি না?
এসিডের শিকার গৃহবধূর স্বামী হুছন মিয়া জানান, জমিজমা সংক্রান্ত পূর্ব শক্রতার জের ধরে আমার ছোট ভাই ময়ুর মিয়া ও তার সহযোগী মিলাদ মিয়া এসিড নিক্ষেপ করে পালিয়ে যায়।
আদমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আবদাল হোসেন ও স্থানীয় সদস্য কে মনিন্দ্র সিংহ জানান, জমি সংক্রান্ত বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে তাদের পারিবারিক বিরোধ চলছিল। তাদের ধারনা এ বিরোধেই এসিড নিক্ষেপের এ ঘটনাটি ঘটেছে।
এলাকাবাসী আব্দুর রহমান, শামীম মিয়া সহ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন এলাকাবাসী জানান, রোকেয়া বেগমের স্বামী হুছন মিয়ার সাথে তার ভাই ময়ুর ও আত্মীয় মিলাদের দীর্ঘদিন ধরে জমিজমা নিয়ে ঝগড়া বিবাদ রয়েছে।
শনিবার দুপুরে কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মোকতাদির হোসেন পিপিএম ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) নজরুল ইসলাম, উপপুলিশ পরিদর্শক কৃষ্ণমোহন দেব নাথসহ পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
অভিযুক্ত মিলাদ মিয়াকে পাওয়া না গেলেও ময়ুর মিয়ার স্ত্রী ইয়ারুন বেগম তার স্বামী কর্তৃক রোকেয়া বেগমকে এসিড নিক্ষেপের কথা অস্বীকার করে বলেন, এটি সম্পূর্ণ ষড়যন্ত্র।
তবে কমলগঞ্জ থানায় আটক ময়ূর মিয়া পারিবারিক বিরোধের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সম্প্রতি তিনি তাদের উপর আদালতে একটি মামলা করেছেন। আর এ মামলা করার কারণে ভাই হুছন মিয়া ও তার স্ত্রী রোকেয়া নিজেরাই পরিকল্পিতভাবে এসিড নিক্ষেপের ঘটনা ঘটিয়েছে। সাথে সাথে পুলিশ দিয়ে তাকে আটকও করিয়েছে।
কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোক্তাদির হোসেন পিপিএম মৌখিকভাবে অভিযোগ গ্রহণ ও অভিযুক্ত ময়ুর আলীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করার সত্যতা নিশ্চিত করেন। তবে এখন পর্যন্ত থানায় কোন লিখিত অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে তদন্তক্রমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd