ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে তেলের লরি থেকে প্রতিদিন বিভিন্ন স্পটে হাজার হাজার লিটার জ্বালানি তেল বিক্রি হলেও শায়েস্তাগঞ্জ প্রশাসন নীরব থাকায় অবাধে তেল চোরাই পথে বিক্রি হচ্ছে। প্রতিদিন তেলচুরি করে বিক্রি করার ফলে দেশের ফিলিং স্টেশন মালিক পক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অন্যদিকে সরকারের ভর্তুকি দিতে হচ্ছে প্রতিমাসে লক্ষাধিক টাকা। এসব টাকা যাচ্ছে দুর্নীতিবাজদের পেটে। সরজমিন ঘুরে দেখা যায়, হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল উপজেলার রশিদপুর পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন তেলের ডিপো থেকে প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন স্থান হতে শত শত তেলবাহী লড়ি বোঝাই করে মৌলভীবাজার বাহুবল উপজেলার মিরপুর পর্যন্ত আঞ্চলিক সড়ক পথ দিয়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের উপর দিয়ে চলাচল করে। এতে তেলবাহী লড়ি চালকরা মহাসড়কের বিভিন্ন স্পটে তেলের লড়ি থেকে চোরাইভাবে প্রতিদিন হাজার হাজার লিটার জ্বালানি তেল পেট্রোল, অকটেন, ডিজেল, কেরোসিন বিক্রি করছে অর্ধেক মূল্যে ও বেশ কিছু লাইসেন্স বিহীন ব্যবসায়ীদের কাছে।
তাদের নেই কোন দোকানের সাইনবোর্ড। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল উপজেলার তিতার কোনা, বশিনা, হবিগঞ্জ সদর উপজেলার লস্করপুর রেল গেট, চুনারুঘাট উপজেলার উবাহাটা, নতুন ব্রিজ, শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার ডেউন্দি সড়ক চৌমুনাসহ মহাসড়কে বিভিন্ন স্পটে তেলবাহী লড়ি দাঁড় করিয়ে লাইসেন্সবিহীন তেল চোরাই ব্যবসায়ীরা তেল ড্রামের ভরে দোকানে রাখছে। এসব চোরাই তেল বিক্রি করে অনেকেই কোটিপতি হয়েছে। তেলগুলো বেশিরভাগ শহর, যানবাহন স্ট্যান্ড এলাকাসহ দূরের গ্রামাঞ্চল এলাকায় বিক্রি হচ্ছে ফিলিং স্টেশন থেকে অনেক কম মূল্যে। চোরাই তেল বিক্রি হলেও র্যাব, থানা, ডিবি পুলিশ ও প্রভাবশালীদের মাসিক মাসোহারা দিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ ব্যবসা করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এদিকে বুধবার (১৮এপ্রিল) ৩টায় হবিগঞ্জের ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক লস্করপুর রেলগেটস্থ ৩টি তেলবাহী লরি পিরোজপুর-ঢ-৪১০০৬৮, চট্টমেট্রো-ঢ-৪১০৩০৪, নারায়ণগঞ্জ-ঢ-৪১০০৪১ থেকে হাজার হাজার লিটার জ্বালানি তেল নামিয়ে নিচ্ছে লস্করপুর এলাকার প্রভাবশালী ব্যবসায়ী মো. নাজমুল হোসেন। এ সময় তেল ব্যবসায়ী নাজমুল হোসেনকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, লস্করপুর এলাকার প্রভাবশালী দেওয়ান সৈয়দ হুমায়ুন রেজার ভাড়াটিয়া ঘর নিয়ে তেলের ব্যবসা করে যাচ্ছি। বিভিন্ন স্থানে মাসিক মাসোহারাও দিচ্ছি। ইউনিয়ন ট্রেড লাইসেন্স দিয়ে ব্যবসা করছি। ফায়ার সার্ভিস ও জ্বালানি খনিজ মন্ত্রণালয়ের কোনো অনুমতি কাগজপত্রসহ লাইসেন্সের প্রয়োজন নেই। তিনি আরো বলেন, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে তিতার কোনা, মিরপুর, বসিনা, শায়েস্তাগঞ্জ নতুন ব্রিজ উবাহাটা, দেউন্দি চৌমুহনাস্থসহ বিভিন্ন স্পটে জ্বালানি তেল বিক্রি করছে প্রশাসনকে মাসিক মাসোহারা দিয়ে। লাইসেন্স বিহীন চোরাই তেল ব্যবসায়ীরা মহাসড়কের পার্শ্বে দাঁড়িয়ে তেলবাহী লড়ির চালককে আটক করে সুবিধামতো তেল নামিয়ে নিচ্ছে। এই তেলবাহী লরি থেকে চোরাই তেল বন্ধের ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি দেয়া খুবই প্রয়োজন মনে করেন এলাকাবাসী।
Sharing is caring!