সমঝোতা প্রত্যাখ্যান রাজপথে শিক্ষার্থীরা

প্রকাশিত: ৩:০৫ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১১, ২০১৮

সমঝোতা প্রত্যাখ্যান রাজপথে শিক্ষার্থীরা

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : এক মাসের জন্য কোটা সংস্কার আন্দোলন স্থগিত ঘোষণা করার পরদিনই আবার আন্দোলনে ফিরল বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। কৃষিমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিবাদেই নতুন করে আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। কোটা সংস্কারের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সুনির্দিষ্ট ঘোষণা চেয়ে এবং আটক শিক্ষার্থীদের মুক্তি ও আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করার দাবিতে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। কর্মসূচি ঘোষণার পরই কয়েক হাজার শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মিছিল করে।

কোটা সংস্কারের দাবিতে বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও গতকাল আন্দোলনে নেমেছে। দুপুর থেকে তারা রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধ করায় ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়। ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা সোবহানবাগে, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি ও এআইইউবির শিক্ষার্থীরা যমুনা ফিউচার পার্কের সামনে এবং ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা রামপুরা ব্রিজের পূর্ব পাশে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে।

আন্দোলন স্থগিত করা নিয়ে আগের দিন শিক্ষার্থীদের মধ্যে যে মতভেদ দেখা দিয়েছিল তার অবসান ঘটিয়ে গতকাল সবাই নতুন কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছে। সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খান নতুন আন্দোলনের ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, কোটা সংস্কারের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে সুনির্দিষ্টভাবে ঘোষণা দিতে হবে। ঘোষণায় কবে নাগাদ কোটা সংস্কার করা হবে সেটি উল্লেখ করতে হবে। এ ছাড়া গ্রেপ্তার করা শিক্ষার্থীদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। আহতদের সরকারি সহায়তায় চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। এসব দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচির পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনির্দিষ্টকাল অবরোধ এবং ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন চলবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়।

ওই ঘোষণার পর কয়েক হাজার শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে দিয়ে মিছিল করে রাজু ভাস্কর্য ঘুরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, পলাশী হয়ে আবার রাজু ভাস্কর্যের কাছে গিয়ে শেষ হয়। রাত সোয়া ৮টায় তারা সেখানে অবস্থান নেয়। আজ বুধবার সকাল ১০টা থেকে আবারও অবস্থান কর্মসূচি পালন করার ঘোষণা দিয়ে গতকালের মতো কর্মসূচি শেষ করে আন্দোলনকারীরা।

আন্দোলন নিয়ে গত সোমবার সংসদে দেওয়া কৃষিমন্ত্রীর বক্তব্য গতকাল বিকেল ৫টার মধ্যে প্রত্যাহার করার দাবি জানান পরিষদের নেতারা। কিন্তু বিকেল ৫টার মধ্যে বক্তব্য প্রত্যাহার না হওয়ায় আন্দোলনকারীরা দ্বিধাবিভক্তি ভুলে বিকেল ৫টা থেকে একযোগে আন্দোলনে নামে। তখন থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে শিক্ষার্থীদের জমায়েত বাড়তে থাকে।

এর আগে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীরা কয়েকটি ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছিল। আন্দোলনকারী সংগঠন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের বাইরে আরো অন্তত দুটি পক্ষ তৈরি হয়। তারা মাঠে অবস্থান করে। এ ছাড়া বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও গতকাল দুপুর থেকে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধ করে আন্দোলনে নামে। বিশেষ করে প্রগতি সরণি, মিরপুর রোডসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক অবরোধ করায় যানজটে স্থবির হয়ে যায় নগরী। মানুষকে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

গতকাল সংবাদ সম্মেলনে রাশেদ খান বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ সরকারপক্ষের সঙ্গে সোমবার সচিবালয়ে আমাদের আলোচনা হয়েছিল। তাদের অনুরোধে আমরা এক মাসের সময় দিয়েছিলাম। কিন্তু সাধারণ আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা তা মেনে নেয়নি। তারা আন্দোলন চালিয়ে যায়, রাজপথে অবস্থান করে। এই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আমাদের আলোচনা চলাকালে গতকাল সংসদে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেন। আমাদের রাজাকার বলেন। এমন বক্তব্যে আমরা মর্মাহত। আমরা অধিকার আদায়ে আন্দোলন করতে গিয়ে রাজাকারের বাচ্চা হলাম।’

রাশেদ বলেন, ‘বিজ্ঞ রাজনীতিবিদ মতিয়া চৌধুরীর বক্তব্য প্রত্যাহারে আমরা বিকেল ৫টা পর্যন্ত সময় দিয়েছিলাম, কিন্তু তিনি তা করেননি। উল্টো অর্থমন্ত্রী সচিবালয়ে বললেন, আগামী বাজেটের আগে কোটা সংস্কারের দাবি পূরণ করা সম্ভব নয়। এরপর আর গতকালের আলোচনা এবং এক মাস আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণার কোনো গুরুত্ব থাকে না। তাই আমরা ফের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অবরোধ, ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিচ্ছি। কোটা সংস্কারের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে।’

গতকাল সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ‘কোটা থাকতেই হবে। তবে কত শতাংশ থাকবে সেটা আলোচনার বিষয়। এখন কোটার শতাংশ অনেক বেশি। এটা সংস্কার হওয়া উচিত। তবে কোটা সংস্কারের বিষয়টি আমার মন্ত্রণালয়ের কাজ নয়। তার পরও আমি প্রধানমন্ত্রীকে পরামর্শ দিয়েছি এটিকে সংস্কারের জন্য। বাজেটের পর ৫৬ শতাংশের কোটা অবশ্যই সংস্কার করা হবে। কারণ কোটায় প্রার্থী পাওয়া যায় না।’ অর্থমন্ত্রী আরো বলেন, ‘সরকারি চাকরিতে কোটা কত অংশ থাকবে তা নিয়ে আলোচনা হতে পারে। পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে এগিয়ে নিতেই কোটা প্রথা থাকতে হবে। আসন্ন বাজেটের পর এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’

এদিকে কোটা সংস্কারের দাবিতে গতকাল দুপুর দেড়টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধ করে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ কারণে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট। চরম ভোগান্তিতে পড়ে নগরবাসী। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার গেটের সামনের সড়কে সকাল সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে শিক্ষার্থীরা কোটা সংস্কারের দাবিসংবলিত পোস্টার হাতে নিয়ে সড়ক অবরোধ করে। এতে আশপাশের সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এরপর থেমে থেমে সড়কের ওপর অবস্থান করে শিক্ষার্থীরা, যা চলে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত।

দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের সামনে মানববন্ধনে দাঁড়ায় প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে। এরপর রামপুরা ব্রিজের কাছে রাস্তার দুই পাশ অবরোধ করে তারা স্লোগান দিয়ে কোটা সংস্কারের দাবি জানায়। ওই সময় রাস্তায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

ইউআইটিএস বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মার্কিন দূতাবাসের সামনের রাস্তায় অবস্থান নেয়। এতে কুড়িল থেকে রামপুরা পর্যন্ত পুরো রাস্তায় গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। প্রগতি সরণি বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে বনানী ও গুলশানের ভেতরের সব রাস্তাও একরকম বন্ধ হয়ে যায়।

ধানমণ্ডির ২৭ নম্বর সড়ক অবরোধ করে স্টেট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা। কোটা সংস্কারের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে সকাল ১১টা থেকে মিরপুর রোডে অবস্থান নিয়েছিল ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এতে থমকে গিয়েছিল মিরপুর রোডে যান চলাচল। আসাদগেট থেকে নিউ মার্কেটের দিকে চলাচলকারী যানবাহন ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছিল ধানমণ্ডি ২৭ নম্বর সড়ক দিয়ে সাত মসজিদ রোডের দিকে। এতে সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। দুপুরের দিকে এই যানজট টেকনিক্যাল মোড় পর্যন্ত গিয়ে ঠেকে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির মানববন্ধন : এদিকে কোটা সংস্কারের আন্দোলন চলার সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ভবনে হামলাকারীদের বিচার দাবিতে গতকাল সকালে মানববন্ধন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। একই সঙ্গে আগামীকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত কলমবিরতি পালনের ঘোষণাও দিয়েছেন শিক্ষকরা।

মানববন্ধনে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, ‘উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবক। কিন্তু কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ব্যবহার করে যারা উপাচার্যের বাসভবনে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে, তার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। একই সঙ্গে হামলাকারীদের শনাক্ত করে উপযুক্ত শাস্তি প্রদান করতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’

অধ্যাপক আখতার হোসেন খান বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে সবার সমর্থন থাকে কিন্তু আন্দোলন যদি সহিংস হয় তাতে কারো সমর্থন থাকে না। উপাচার্য বাসভবনে হামলার ঘটনার নিন্দা জানাই। তদন্ত করে দোষীদের বের করে শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানাই।’

অধ্যাপক এস এম মাকসুদ কামালের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শিবলী রুবইয়াতুল ইসলামের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে শিক্ষক সমিতির সদস্য ও নীল দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক কবি মুহাম্মদ সামাদ, সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক সাদেকা হালিম, সিন্ডিকেট সদস্য বাহলুল মজনুন চুন্নু, সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক আখতার হোসেন খানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শতাধিক শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী অংশ নেন।

ভিসির বাসভবন পরিদর্শনে ওবায়দুল কাদের : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে হামলা পরিকল্পিত বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। গতকাল উপাচার্যের বাসভবন পরিদর্শনে গিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন। তিনি ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের কোনো অবস্থায় ছাড় দেওয়া হবে না বলে জানান।

ওবায়দুল কাদের বলেন, উপাচার্যের বাসভবনে যে হামলা হয়েছে তা পরিকল্পিত। কারণ ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা আগেই বিকল করে এই হামলা করা হয়েছে। এই নারকীয় বর্বরতার সঙ্গে জড়িতদের কাউকে কোনো অবস্থায়ই ছাড় দেওয়া হবে না। তদন্ত চলছে। কিছুটা চিহ্নিত হয়েছে। বাকিটাও চিহ্নিত হবে। এর বিচার করতেই হবে। এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে।

ওই সময় সড়কমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীমসহ দলের কয়েকজন নেতা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন শিক্ষক।

ছাত্রলীগের বিক্ষোভ : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ভবনে ভাঙচুর, লুটপাট ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ অস্থিতিশীল করার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। গতকাল দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে আয়োজিত সমাবেশ থেকে হামলাকারীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়। এর আগে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি মধুর ক্যান্টিন থেকে শুরু হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের সামনে দিয়ে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ঘুরে অপরাজেয় বাংলায় গিয়ে শেষ হয়।

সমাবেশে ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ বলেন, কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনে পুলিশের ওপর আক্রমণ করায় পুলিশ তাদের ওপর টিয়ার গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করেছে। উপাচার্যের বাসভবনে যে হামলা ও তাণ্ডব করা হয়েছে তা ২৫শে মার্চের কালরাতকে হার মানিয়েছে। আসলে তাদের আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্য ছিল বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করা।

Sharing is caring!

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..