ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : বোরো ফসলহানির পর চলতি বোরো মওসুমে ভর্তুকি হিসেবে সুনামগঞ্জের ৩ লাখ কৃষককে সার-বীজ ও নগদ টাকা দেয়া হয়েছে।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী গত ডিসেম্বর মাসেই প্রত্যেককে ৫ কেজি বীজ ধান, ২০ কেজি ডিএপি ও ১০ কেজি এমওপি সার বিতরণ করা হয়।
ব্যাংকের মাধ্যমে ১ হাজার করে নগদ টাকা জানুয়ারিতে বিতরণ করা হয়েছে। ১০ টাকার বিনিময়ে রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকে একাউন্ট খোলে সেই টাকা বিতরণ করা হয়।
কিন্তু ধান কাটা প্রায় শুরু হওয়ার সময় চলে আসলেও কৃষি ভর্তুকির নগদ ১ হাজার টাকা পাননি বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার পলাশ ইউনিয়নের ৩,৮০০ কৃষক। কবে সেই টাকা পাবেন তা বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত জানতে পারেননি কার্ডধারী কৃষকেরা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কৃষকদের টাকা দিবে ব্যাংক। দেরী হওয়ার প্রকৃত কারণ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানবেন।
স্থানীয় সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, একসাথে অনেকগুলো হিসাব খোলতে হচ্ছে। হিসাব খোলার ফরম পূরণ ও রেজিস্টারে তালিকাভূক্ত করছেন ইউনিয়ন পরিষদ। তারা এখন পর্যন্ত (বৃহস্পতিবার) সেই ফরমগুলো জমা দেননি।
এদিকে পলাশ ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কাইয়ুম মাস্টার জানিয়েছেন, হিসাব খোলার ফরম পূরণ ও রেজিস্টার করার কাজটি ব্যাংকের। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ সেই কাজটি আমাদের পরিষদের সদস্যদের দিয়ে করাচ্ছেন। কাজগুলো দেয়া হয়েছে সবার পরে। যার কারণে দেরী হচ্ছে। হিসাব খোলার ফরমের কাজ শেষ হতে আরও ৭-৮ দিন সময় লাগতে পারে।
জানা যায়, সরকার সুনামগঞ্জের ৩ লাখ কৃষককে সার-বীজ ও নগদ ১ হাজার টাকা করে মোট সাড়ে ৫৮ কোটি টাকার কৃষি ভর্তুকি দিয়েছে।
পলাশ ইউনিয়নের গোবিন্দনগর গ্রামের কৃষি কার্ডধারী অর্জুন কান্তি দাস (কালীকুমার) বলেন,‘অন্য এলাকার কৃষকরা দুই-তিন মাস আগেই ভর্তুকির টাকা পেয়েছে, কিন্তু আমরা এখন পর্যন্ত পাইনি। ইউনিয়ন পরিষদ বলে, কৃষি অফিস আর কৃষি অফিস বলে ব্যাংকের কথা। ধান কাটা শুরু হচ্ছে যাচ্ছে, অথচ কেউ জানে না কোন দিন টাকা দেয়া হবে।’
একই গ্রামের হেলিম শেখ ও বিজয় পাল জানান, সবাই সার-বীজ ও নগদ টাকা পেয়েছেন অনেক আগেই। কিন্তু আমাদের ইউনিয়নে কি সমস্যা হচ্ছে আমরা তা জানি না। কবে টাকা দেয়া হবে তাও জানানো হয়নি।
পলাশগাঁও-এর কৃষক আব্দুস সালাম বলেন, ‘কোন দিন কৃষি কার্ডের টাকা দেয়া হবে এখনও জানি না। মেম্বার-চেয়ারম্যানও বলতে পারছেন না। ’
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দীপক কুমার দাস বলেন,‘ইতোমধ্যে সবাইকে সার-বীজ প্রদান করা হয়েছে। পলাশ ছাড়া অন্য সকল ইউনিয়নের কৃষকরা নগদ টাকাও পেয়েছেন। তবে যতদূর জানি জনবলের কারণে পলাশ ইউনিয়নের কৃষকদের একটু সময় লাগছে।’
সোনালী ব্যাংক বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ব্যবস্থাপক দীপক রঞ্জন চৌধুরী বলেন,‘১০ টাকার বাংক হিসাব খোলার ফরম পূরণ ও রেজিস্টারে তালিকাভূক্তির কাজটি করছেন ইউনিয়ন পরিষদ। তারা এখন পর্যন্ত (বৃহস্পতিবার) সেই ফরমগুলো জমা দেননি। সেই ফরম পাওয়ার পর আমরা টাকা বিতরণ করব।’
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সমীর বিশ্বাস বলেন,‘পলাশ ইউনিয়নের কৃষকরা কেন এখন পর্যন্ত ভর্তুকির নগদ টাকা পায়নি তার খোঁজ খবর নেয়া হবে।