সিলেট ৫ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২রা জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৫:৩৫ অপরাহ্ণ, মার্চ ৩১, ২০১৮
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে কিশোরী বিউটি আক্তারকে (১৬) একাধিকবার ধর্ষণ ও হত্যা মামলার প্রধান আসামি বাবুল মিয়াকে অবশেষে গ্রেফতার করা হয়েছে। র্যাব-৯ সিলেটের একটি টিম সিলেটের বিয়ানিবাজার এলাকা থেকে শুক্রবার দিবাগত গভীর রাতে তাকে গ্রেফতার করে। ধর্ষক বাবুলকে গ্রেফতারের খবরে নিহত বিউটি আক্তারের পরিবারে স্বস্তি দেখা দিয়েছে। তারা বাবুলের ফাঁসি দাবি করেছেন।
বিউটির মা হোসনা বেগম বলেন, বাবুলের কারণে আমার মেয়ের পড়াশোনা বন্ধ হয়েছিল। মেয়েকে সে দুইবার নির্যাতন করেছে। এরপর তাকে হত্যা করেছে। তিনি ধর্ষক বাবুলের ফাঁসি দাবি করেন।
এদিকে বিউটি হত্যার বিচার দাবিতে আগামী সোমবার মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করবে জেলা নাগরিক আন্দোলন।
জেলা বাপা’র সাধারণ সম্পাদক ও সাংস্কৃতিক কর্মী তোফাজ্জল সোহেল জানান, বিউটিকে যখন প্রথম দফায় অপহরণ করা হয় তখন তার পরিবার একটি মামলা করে। তখনই যদি আসামিকে গ্রেফতার করা হতো তাহলে তাকে হত্যার শিকার হতে হতো না। বিচারহীনতার সংস্কৃতির জন্যই এমনটি ঘটেছে।
তিনি বলেন, পুলিশ যদি তৎপর হতো তবে মেয়েটিকে মরতে হতো না।
সমাজকর্মী পিযুষ চক্রবর্তী জানান, এ ঘটনাটি অত্যন্ত হৃদয়বিদারক। এটি সমাজের প্রতিটি মানুষকে মর্মাহত করেছে। প্রথম দফায় মামলা হওয়ার পর পুলিশ যদি দায়িত্ব পালন করতো তবে হত্যাকাণ্ডটি এড়ানো যেতো। এ ঘটনার জন্য তিনি পুলিশের নিষ্ক্রিয়তাকে দায়ী করেন।
আইনজীবী মো. কামরুল হাসান জানান, প্রথমে বিউটিকে ধর্ষণ করা হয়। এরপর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করা হয়। কিন্তু পুলিশ আসামিদের গ্রেফতার করেনি। ফলে পরবর্তীতে নির্মম এ হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে।
মামলার বিবরণে বাদী উল্লেখ করেন, স্থানীয় মোজাহের উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বিউটি আক্তারকে প্রায়ই উত্ত্যক্ত করতো স্থানীয় ইউপি মেম্বার কলম চানের ছেলে বাবুল মিয়া। একপর্যায়ে প্রেমের প্রস্তাব দিলে তা প্রত্যাখ্যান করে বিউটি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গত ২১ জানুয়ারি বাবুল তাকে ধরে নিয়ে ধর্ষণ করে। এ বিষয়ে গত ৪ মার্চ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে একটি মামলা করা হয়।
বিউটির বাবা সায়েদ আলীর ভাষ্য, এ ঘটনার পর বিউটিকে লাখাই উপজেলার গুনিপুর গ্রামে তার নানার বাড়িতে রেখে আসেন। ১৬ মার্চ রাত ১২টার দিকে মেয়ে টয়লেটে গিয়ে আর ঘরে ফিরেনি। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরদিন ১৭ মার্চ গুনিপুর থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার দূরে হাওরে তার মরদেহ পাওয়া যায়।
এ ঘটনায় ১৮ মার্চ কিশোরীর বাবা সায়েদ আলী বাদী হয়ে একই গ্রামের বাবুল মিয়া (৩২) ও তার মা ইউপি সদস্য কলম চান বিবিকে (৪৫) আসামি করে শায়েস্তাগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর অভিযান চালিয়ে কলম চান বিবিকে শায়েস্তাগঞ্জ নতুন ব্রিজ এবং বাবুলের বন্ধু ইসমাইল মিয়াকে অলিপুর থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd