বিশ্ব পানি দিবস ২০১৮ উপলক্ষে সনাক ও বেলার উদ্যোগে শীর্ষক আলোচনা সভা

প্রকাশিত: ৪:৪৬ অপরাহ্ণ, মার্চ ২৮, ২০১৮

সিলেট :: ২৭ মার্চ ২০১৮, সিলেট: বিশ্ব পানি দিবস ২০১৮ উপলক্ষে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)’র অনুপ্রেরণায় গঠিত সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক), সিলেট ও বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা), সিলেট এর যৌথ উদ্যোগে ‘সিলেট সিটি কর্পোরেশনের অভ্যন্তরীণ পুকুর-দিঘী-জলাশয় সংরক্ষণে আইনের কঠোর প্রয়োগ ও স্বচ্ছ-জবাবদিহিমূলক কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণে করণীয়’ শীর্ষক এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। ২৭ মার্চ ২০১৮ বিকেলে নগরীর মীরবক্সটুলা এলাকার খয়রুন ভবনে অবস্থিত সনাক কার্যালয়ে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র জনাব আরিফুল হক চৌধুরী আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সভাপতিত্ব করেন সনাক সিলেটের সভাপতি আজিজ আহমদ সেলিম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সনাক সদস্য ফারুক মাহমুদ চৌধুরী। সঞ্চালনায় ছিলেন সনাক সদস্য এ্যাডভোকেট সৈয়দ মনির আহমদ।

সভায় বিশ^ পানি দিবস ২০১৮ উপলক্ষে টিআইবি’র ধারণাপত্র পাঠ করেন সনাক সিলেটের ইয়েস গ্রপের সহ-দলনেতা ফাহমিদা ওসমান দিয়া। সিলেট সিটি কর্পোরেশনের অভ্যন্তরীণ পুকুর-দিঘী-জলাশয় সমূহের বর্তমান চিত্র তুলে ধরে এগুলো সংরক্ষণে করণীয় নির্ধারণের উপর একটি পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনা করেন বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা), সিলেট এর বিভাগীয় সমন্বয়কারী শাহ সাহেদা আখতার।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সংস্কৃতি কর্মী অরুপ শ্যাম বাপ্পী, সাংবাদিক আশরাফুল কবীর, বাপা সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিম, মজুমদারী এলাকার বিশিষ্ট নাগরিক আনোয়ার বখত, এলজিইডি সিলেটের সোসিওলজিস্ট মোঃ রুবায়েত হোসেন, সনাক সদস্য এ্যাডভোকেট মোহিত লাল ধর, এ্যাডভোকেট এমাদ উল্লাহ শহিদুল ইসলাম শাহীন, এ্যাডভোকেট ইরফানুজ্জামান চৌধুরী ও হাসিনা মহিউদ্দিন। বক্তাগণ সিলেট নগরীর বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া পুকুর-দিঘী-জলাশয় সমূহ উদ্ধার ও যেগুলো বিলুপ্ত হওয়ার পথে রয়েছে সেগুলো সংরক্ষণের জোর দাবী জানান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, পুকুর-দিঘী-জলাশয় উদ্ধার ও সংরক্ষণে সিলেটে কর্পোরেশন অব্যাহত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন পুকুরের মালিকানা নিয়ে বিরোধ ও মামলা থাকার কারণে এ কার্যক্রম সম্পন্ন করতে সময় লাগছে। অনেক জলাশয়, ছরা, পুকুর ও দিঘীর মালিকানা জেলা প্রশাসনের আওতায় থাকার ফলে সিটি কর্পোরেশন এগুলো উদ্ধার কিংবা সংরক্ষণে আইনী জটিলতার সম্মূখীন হচ্ছে। তিনি বলেন, সিটি কর্পোরেশন, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও নাগরিক সমাজের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে সিলেট নগরীর পুকুর-দিঘী-জলাশয় সংরক্ষণ করা সম্ভব। পাশাপাশি পুকুর-জলাশয় যাতে দুষিত না হয় সে জন্য নগরবাসীকে সচেতন থাকতে বলেন। তিনি পরিবেশবাদী সংগঠন, সিটি কর্পোশনের আইনজীবী, বেলা’র আইনজীবী ও সাংবাদিকবৃন্দের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠনের কথা বলেন যা পুকুর-দিঘী-জলাশয় সংরক্ষণে আইনী জটিলতা ও প্রতিকুলতাসমূহ কাটিয়ে উঠতে সহায়ক ভুমিকা পালন করবে।

আলোচনা সভায় সিলেট সিটি কর্পোরেশনের অভ্যন্তরীণ পুকুর-দিঘী-জলাশয় সংরক্ষণে সনাক ও বেলা’র পক্ষ থেকে ১০টি দাবী উত্থাপন করা হয়- ১) বিলুপ্ত ও বিলুপ্তপ্রায় পুকুর-দিঘী-জলাশয়ের সীমানা নির্ধারণ করা ও ১৯৫৬ সালের ম্যাপ অনুযাযী পুনরুদ্ধার; ২) তীর সংরক্ষণ ও সৌন্দর্য্য বর্ধনের (স্টিলের রেলিং তৈরি) ব্যবস্থা করা; ৩) স্থানীয়দের নিয়ে পুকুর-জলাশয় রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কমিটি গঠন; ৪) সরকারি পুকুর ব্যবহার উপযোগী করে শিশুদের সাতার শেখার ব্যবস্থা করা ৫) সরকারি ভবন নির্মাণে জলাশয় ভরাট বন্ধ করা; ৬) সংশ্লিষ্ট আইন ও মাস্টার প্ল্যান অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ; ৭) সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠানের কার্যালয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত তথ্য কর্মকর্তার উপস্থিতি নিশ্চিত করার মাধ্যমে চাহিদাভিত্তিক তথ্য প্রদান ব্যবস্থা কার্যকর করতে হবে; ৮) সংশ্লিষ্ট সকল অংশীজনের সমন্বয়ে একটি কার্যকর অভিযোগ নিরসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হবে; ৯) যে কোনো প্রকার অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ নিরসনে কার্যকর জবাবদিহিতা পদ্ধতি প্রতিষ্ঠা ও তথ্যদাতার সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে; ১০) সকল পুকুর-দিঘী-জলাশয়ের সঠিক তালিকা প্রকাশ এবং সংরক্ষণ ও উদ্ধার কার্যক্রমের বাজেট, প্রকল্প প্রস্তাবনা, নকশা ইত্যাদি স্বপ্রণোদিত হয়ে তথ্যবোর্ডের মাধ্যমে উন্মুক্ত করতে হবে।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

March 2018
S S M T W T F
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  

সর্বশেষ খবর

………………………..