সিলেট ১০ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৫শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৬ই রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৫:১৪ অপরাহ্ণ, মার্চ ২৫, ২০১৮
ফাহাদ হোসাইন, গোলাপগঞ্জ থেকে :: সিলেটের গোলাপগঞ্জে হাতুড়ে ডাক্তারের হাতে নিহত মাদ্রাসার ছাত্র ফুয়াদ আহমদের (১৩) এর ঘাতককে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে উপজেলার বাগলা এলাকা। হাতুড়ে চিকিৎসক খালেদকে গ্রেফতারের দাবিতে এলাকায় একের পর এক চলছে বিভিন্ন কর্মসূচী। গতকাল শনিবার উপজেলার বাগলা বাজাওে বিশাল মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্টিত হয়েছে। স্থানীয় বাগলা হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এলাকাবাসী এ বিশাল মানববন্ধনের আয়োজন করে।
দুপুরে মানববন্ধনের পর সভায় সভাপতিত্ব করেন এলাকার বিশিষ্ট মুরব্বি আতাউর রহমান। হাফিজ রাসেল আহমদ ও আলী আহমদের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন, বাগলা হাফিজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক আলী আহমদ, কুশিয়ারা পুলিশ ফাড়িঁর ইনচার্জ মুরাদ উল্লাহ বাহার, আতিকুর রহমান, মিজানুর রহমান মিজান, সিলেট চেম্বার অব কমার্সের সদস্য আলী হোসেন, জাকারিয়া আহমদ, নিহত ফুয়াদের পিতা খছরুল আলম, তার ছোট ভাই মুরাদ আহমদ ও সমাজসেবক মাহবুবুর রহমান নাছির প্রমূখ। সভায় বক্তারা আগামী ২৪ঘন্টার মধ্যে হাতুড়ে ডাক্তার খালেদকে গ্রেফতারের আল্টিমেটাম দেয়া হয়। কুশিয়ারা পুলিশ ফাড়িঁর ইনচার্জ মুরাদ উল্লাহ বাহার বলেন, আমরা খালেদকে গ্রেফতারে সর্বেচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তাকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। এদিকে. মাদ্রাসার ছাত্র ফুয়াদ আহমদের মৃত্যুর পর উত্তপ্ত হয়ে উঠছে উপজেলার গোটা বাগলা এলাকা। ভূয়া চিকিৎসক খালেদ হোসেনকে হত্যাকারী অখ্যায়িত করে তার ফাঁিস দাবি করেছেন এলাকার বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। মাদ্রাসার ছাত্র ফুয়াদ আহমদের মৃত্যুর পর গা-ঢাকা দিয়েছে ভূয়া চিকিৎসক খালেদ। বর্তমানে পুলিশ তাকে হন্যে হয়ে খুজঁছে বলে জানা গেছে। সরেজমিন বাগলা বাজারে গিয়ে দেখা যায়, ভূয়া চিকিৎসক খালেদের হামিদ ফার্মেসী তালাবদ্ধ। আশপাশের কয়েকজন দোকানদার জানান, ভূল চিকিৎসায় মাদৃাসার ছাত্র ফুয়াদ আহমদের মৃত্যুর পর সে ফার্মেসী বন্ধ করে গা-ঢা দিয়েছে। শনিবার নিহত ফুয়াদের বাড়ীতে গেলে দেখা যায় এক শোকাবহ পরিবেশ। ঘটনার পর থেকে নিহতের পরিবারের লোকজনদের বিলাপ আর আহাজারিতে এলাকার আকাশ-বাতাশ ভারি হয়ে উঠছে। পুত্রের মৃত্যুর খবর পেয়ে সৌদি প্রবাসী পিতা খছরুল আলমও বাড়ীতে ছুটে এসেছেন। নিহত ফুয়াদে মা শেফালী বেগমের সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি কোন কথাই বলতে পারেনি। এসময় তিনি শুধু আহাজারি করে বলেন,” আমার ছেলেরে আনিয়া দেও, আমার ছেলের দোষ কি ছিল?, আমি ভূয়া ডাক্তারের ফাসি চাই” একথাগুলে বলেই তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। পরে কিছুটা শান্ত হয়ে বলেন, আমি আমার ছেলে ফুয়াদকে ইনজেকশন পুশ করতে খালেদকে নিষেধ করি। কিন্ত সে আমার কথা শুনেনি। জোরপূর্বক ইনজেকশন পুশের পর আমার ছেলের মৃত্যু হয়। নিহত ফুয়াদের পিতা খছরুল আলম হাউমাউ করে কেদে বলেন, আমার ছেলেকে ইচ্ছাকৃতভাবে খালেদ ইনজেকশন দিয়ে হত্যা করেছে। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিচার চাই। আমি খালেদের ফাঁিস চাই। অপরদিকে স্থানীয় বাগলা হাফিজিয়া মাদ্রাসায় নিহত পুয়াদেও স্বরণে শোক সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্টিত হয়েছে। শনিবার সকালে মাদ্রাসা প্রাঙ্গনে এ দোয়া মাহফিল অনুষ্টিত হয়েছে।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd