সিলেট ২৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | ১৩ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরি
প্রকাশিত: ১:৩৪ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ২৪, ২০১৮
ফাহাদ হোসাইন, গোলাপগঞ্জ থেকে :: গোলাপগঞ্জে হাতুড়ে ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় সিদ্দিক আহমদ ফুয়াদ (১৩) নামের এক মাদ্রাসা ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। গত বুধবার রাতে উপজেলার ভাদেপাশা ইউনিয়নের বাগলার মীরের চকে এ ঘটনার পর ভূয়া ডাক্তারের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে মৃত ফুয়াদের চাচা শামীম আহমদ সেলিম বাদী হয়ে এ হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা নং -১০/২২-০৩-১৮ ইং। নিহত ফুয়াদ আহমদ এই গ্রামের সৌদি প্রবাসী খছরুল আলমের পুত্র ও বাগলা হাফিজিয়া দাখিল মাদ্রাসার ছাত্র। এ ঘটনার পর পুলিশ লাশ উদ্ধারের পর সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে ময়না তদন্তের জন্য প্রেরণ করেন। পরে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। মামলার এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত কয়েকদিন আগে ফুয়াদের পায়ের কিছু অংশ কেটে যায়। পায়ের কাটা অংশে ক্ষতের সৃষ্টি হলে ফুয়াদের মা নাছিমা আক্তার শেফালী গত বুধবার স্থানীয় বাগলা শাহী ঈদগাহ বাজারের হামিদ ফার্মেসীতে তাকে নিয়ে আসলে ফার্মেসীর পরিচালক খালেদ আহমদ ফুয়াদকে ট্রাক্সন নামের একটি ইনজেকশন পুশ করেন । ফুয়াদের মা নাছিমা আক্তার শেফালী ইনজেকশন দিতে বাধা দেওয়ার পরও খালেদ আহমদ এই ইনজেকশন বিক্রির লোভে পুশ করেন। এর কিছুক্ষণের মধ্যে ফুয়াদের সারা শরীরে ঝাকুঁনি ও বমি শুরু হলে তাকে তাৎক্ষণিক একটি বমির ট্যাবলেটও খাওয়ানো হয়। পরে তার অবস্থা আশংকাজনক হলে ঢাকাদক্ষিণের চিকিৎসক বসু দেব কর্মকারের কাছে নিয়ে আসার পথিমধ্যে তার মৃত্যু হয়।
সরেজমিনে গেলে, ফুয়াদের মৃত্যুতে এলাকা জুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। ভূয়া চিকিৎসক দ্বারা এলাকার সব থেকে ভালো ফুয়াদের এমন মৃত্যু কেউ মেনে নিতে পারছেন না। এলাকাবাসী ফুয়াদের খুনি ঘাতক ভূয়া চিকিৎসক খালেদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবী করেন। এদিকে আজ শনিবার খালেদের ফাসির দাবীতে সর্বস্তরের জনতার ব্যানারে মানববন্ধনের ডাক দেয়া হয়েছে।
ফুয়াদের চাচাতো ভাই নাছির মাহবুব এ প্রতিবেদককে অভিযোগ করে বলেন, আমার ভাইকে ভুয়া ডাক্তার খালেদ ভুল চিকিৎসা দিয়ে মেরে ফেলেছে । ফুয়াদের প্রবাসী পিতা খছরুল আলম এ প্রতিবেদককে জানান, আমি প্রশাসনের কাছে এই ঘটনার সুষ্ঠ বিচার চাই। আমার ছেলেটাকে ওই ভুয়া চিকিৎসক হত্যা করেছে।
ফুয়াদের মাতা নাছিমা আক্তার শেফালী জানান, আমি নিষেধ করার পরেও জোরপূর্বক আমার ছেলেকে খালেদ ইনজেকশন পুশ করেছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকাদক্ষিণ বাজারের ডাক্তার বি. কর্মকার বলেন, আমার কাছে নিয়ে আসার আগে ফুয়াদের মৃত্যু হয়। পরিবারের সদস্যরা আমাকে ট্রাক্সন নামের একটি ইনজেকশনের কাভার দেখিয়েছেন। যা নিউমোনিয়া, টাইফয়েড হলে দেওয়াহয়। বাদেপাশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদ জানান, ঘটনাটি আমি শুনেছি। ফুয়াদের পরিবারের পক্ষ থেকে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এ বিষয়ে গোলাপগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা একেএম ফজলুল হক শিবলী ঘটনা ওও মামলা দায়েরের ব্যাপারটি নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় প্রধান আসামী খালেদকে পুলিশ গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে।
এদিকে খালেদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে গতকাল শুক্রবার প্রতিবাদ সভা করেছে এলাকাবাসী। প্রতিবাদ সভায় বক্তারা আর কোন মায়ের বুক যেন ভুয়া চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসায় খালি না হয় যে জন্য প্রশাসনের কাছে এসব ভুয়া ডাক্তারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আকুল আবেদন জানান।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd