সিলেট ৫ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২০শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১লা রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১:০০ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ১৯, ২০১৮
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন অধরাই রয়ে গেল বাংলাদেশের। ভারতের বিপক্ষে নিদাহাস কাপের ফাইনাল ম্যাচের শেষের রোমাঞ্চে আবারও হারল বাংলাদেশ। আরো একবার তীরে এসে তরী ডুবল বাংলাদেশের।
প্রথম তিন ওভারে ১৩ রান দেওয়া রুবেল ১৯ তম ওভারে দিলেন ২২ রান। শেষ ওভারে ১২ রান দরকার হলেও রান আটকাতে পারেননি সৌম্য সরকার। শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে শেষ বলে ছক্কা হাঁকিয়ে টাইগারদের কাঁদালেন দিনেশ কার্তিক। তার দুর্দান্ত এক ইনিংসে ভর করে নিদাহাস ট্রফির ফাইনালে বাংলাদেশকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে ভারত।
কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালোই করেছিল বাংলাদেশ। দুই ওপেনার তামিম ইকবাল আর লিটন দাস ১৯ বলের জুটিতে তুলে ফেলেন ২৭ রান। তবে ভালো শুরুর পরও আরও একবার হতাশ করেছেন লিটন।
৯ বলে ১ ছক্কায় ১১ রান করে ওয়াশিংটন সুন্দরকে সুইপ করতে গিয়ে সুরেশ রায়নার ক্যাচ হয়ে ফিরেছেন এই ওপেনার। এরপর যুজবেন্দ্র চাহালের বলে শার্দুল ঠাকুরের দুর্দান্ত এক ক্যাচ হন তামিমও। ১৩ বলে ১ চারে ১৫ রান করেন তিনি।
ব্যর্থতার বৃত্ত ফুড়ে এই ম্যাচেও বের হয়ে আসতে পারেননি সৌম্য সরকার। চাহালকে সুইপ করতে গিয়ে স্কয়ার লেগে শেখর ধাওয়ানের ক্যাচ হয়েছেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। করেন মাত্র ১ রান।
৩৩ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে তখণ ভীষণ বিপদে পড়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। সেখান থেকে তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৩৫ রান যোগ করেন মুশফিকুর রহীম আর সাব্বির রহমান। তবে এরপরই মুশফিক বোকার মতো আউট হয়েছেন। অফস্ট্যাম্পের অনেক বাইরের বল মারতে গিয়ে ৯ রান করে চাহালের তৃতীয় শিকার তিনি।
পঞ্চম উইকেটে সাব্বিরের সঙ্গে ৩৬ রানের জুটি গড়ে ভুল বোঝাবুঝির কারণে রানআউট হয়ে যান মাহমুদউল্লাহ। ১৬ বলে ২ বাউন্ডারিতে ২১ রান করেন বাংলাদেশকে ফাইনালে উঠানোর এই নায়ক। রানআউট দুর্ভাগ্যে পড়েছেন সাকিব আল হাসানও। দ্রুত এক রান নিতে গিয়ে আউট হন ৭ বলে ৭ রান করা বাংলাদেশ অধিনায়ক।
তবু সাব্বির চড়াও হয়েই খেলছিলেন। দারুণ খেলতে থাকা এই ব্যাটসম্যানকে বোল্ড করে সাজঘরে ফেরান জয়দেব উনাদকাত। ৭৭ রানের ঝড়ো ইনিংসে ৭টি চারের পাশে ৪টি ছক্কা হাঁকান সাব্বির।
শেষ ওভারে মেহেদী হাসান মিরাজ নিয়েছেন ১৮ রান। তার ৭ বলে ১৯ রানের ইনিংসে ভর করে লড়াকু পুঁজি গড়তে পেরেছে টাইগাররা। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৬৬ রান তুলে টাইগাররা। ভারতের পক্ষে ১৮ রানে ৩টি উইকেট যুজবেন্দ্র চাহালের। ২টি উইকেট জয়দেব উনাদকাতের।
এদিকে ১৬৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে বেশ ভালো সূচনা করেন ভারতীয় দুই ওপেনার রোহিত শর্মা আর শিখর ধাওয়ান। ১৬ বলে গড়া তাদের ৩২ রানের জুটিটি ভাঙেন সাকিব আল হাসান। ৭ রান করা ধাওয়ানকে আরিফুল হকের ক্যাচ বানিয়ে ফেরান তিনি।
এরপর রুবেল হোসেনের লেগ সাইড দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া বলে ব্যাট ছুঁইয়ে মুশফিকের গ্লাভসবন্দী হন সুরেশ রায়না। এখানেও আম্পায়ার ওয়াইডের ভুল সংকেত দিয়েছিলেন। আত্মবিশ্বাসী মুশফিক সঙ্গে সঙ্গেই রিভিউ নিয়ে নেন। রিপ্লেতে দেখা যায় বল রায়নার (০) ব্যাটে লেগেছে।
৩২ রানেই ২ উইকেট হারিয়ে তখন কিছুটা বিপদে ভারত। তৃতীয় উইকেটে সেই বিপদ কাটিয়ে উঠেন রোহিত আর লোকেশ রাহুল। এই জুটিতে আসে ৫১ রান। শেষ পর্যন্ত রাহুলকে ফিরিয়ে এই জুটিটি ভেঙেছেন রুবেল।
রোহিত শর্মা যে কোনো প্রতিপক্ষের জন্যই ভয়ের কারণ। তার ব্যাটের ধার সবারই জানা। বেশ ভয়ংকর হয়ে উঠছিলেন আজ নিদাহাস ট্রফির ফাইনালেও। তবে ৪২ বলে ৫৬ করা ভারতীয় এই ওপেনারকে অবশেষে ফিরিয়েছেন নাজমুল ইসলাম অপু।
১৮তম ওভারে বোলিং করতে এসে দুর্দান্ত একটা ওভার করলেন মুস্তাফিজুর রহমান। নিলেন উইকেট-মেডেন।
শেষ ৩ ওভারে ভারতের প্রয়োজন ছিল ৩৫ রান। মুস্তাফিজ টানা চারটি বল ডট নেন বিজয় শঙ্করের কাছ থেকে। পঞ্চম বলে লেগ বাই থেকে আসে একটি রান। শেষ বলে মুস্তাফিজকে উড়াতে গিয়ে সাব্বির রহমানের হাতে ধরা পড়েন মনিশ পান্ডে।
হিসাবটা বদলে যায় রুবেলে ওভারে খেলার ১৯ তম ওভারে। প্রথম তিন ওভারে ১৩ রান দেওয়া রুবেল ১৯ তম ওভারে দিলেন ২২ রান।
শেষ ওভারের খেলাতে যখন ২ বলে প্রয়োজন ৫ রান। ছক্কায় ম্যাচ শেষ করতে চেয়েছিলেন বিজয় শঙ্কর। আকাশে উঠে যাওয়া ক্যাচ মুঠোয় নেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ক্যাচ ধরতে গিয়েছিলেন দুই ফিল্ডার। একজনের হাত থেকে ছুটে গেল দুইবারের চেষ্টায় ক্যাচ মুঠোয় নেন মিরাজ।
তবুও শেষ রক্ষা হয়নি। কার্তিকের তাণ্ডবে আর শেষ বলের ছক্কায় শিরোপা জিতে নেয় ভারত।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৬৬/৮ (তামিম ১৫, লিটন ১১, সাব্বির ৭৭, সৌম্য ১, মুশফিক ৯, মাহমুদউল্লাহ ২১, সাকিব ৭, মিরাজ ১৯*, রুবেল ০, মুস্তাফিজ ০*; উনাদকাট ২/৩৩, সুন্দর ১/২০, চেহেল ৩/১৮, ঠাকুর ০/৪৫, শঙ্কর ০/৪৮)।
ভারত: ২০ ওভারে ১৬৮/৬ (রোহিত ৫৬, ধাওয়ান ১০, রায়না ০, রাহুল ২৪, পান্ডে ২৮, শঙ্কর ১৭, কার্তিক ২৯*, সুন্দর ০*; সাকিব ১/২৮, মিরাজ ০/১৭, রুবেল ২/৩৫, নাজমুল ১/৩২, মুস্তাফিজ ১/২১, সৌম্য ১/৩৩)।
ফল: ভারত ৪ উইকেটে জয়ী।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd