সিলেট ১৩ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩০শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৩ই শাবান, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১২:৫৫ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ১৬, ২০১৮
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি :: ১৫মার্চ বৃহস্পতিবার তাহিরপুরের লাউড়েরগড় এলাকার ভারতের মেঘালয় সীমান্তের জিরো পয়েন্ট এলাকায় শাহ আরেফিনের মোকামে বাদ আছর ওলি আউলিয়া ও হযরত শাহ আরোফিন (রঃ) এর জীবন দর্শনের উপর আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিলের মাধ্যমে ৩দিন ব্যাপী ওরস বার্ষিক মোবারক আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু হয়েছে। শেষ হবে ১৭মার্চ শনিবার ফজরের নামাজের পর আখেরী মোনাজাতের মাধ্যমে। প্রতি বছরের ন্যায় হযরত শাহ আরোফিন (রঃ) ওরসে আধ্যাত্বিক ঔলীর ভক্তবৃন্ধের মিলনমেলাকে কেন্দ্র করে যাদুকাটা নদীর র্তীরবর্তী লাউড়েরগর এলকায় উৎসব মুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। হযরত শাহ আরোফিন (রঃ) ওরসে কাফেলাধারী পাগল,ফকির,ভক্ত,সাধক ও দর্শনার্থীরা ওরস মহোৎসবে যোগ দিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত হতে পূন্যার্থী ও ভক্তবৃন্দরা এসে ভিড় জমিয়েছেন। এই ওরসকে কেন্দ্র করে দূরদূরান্তের আতœীয়-স্বজনরাও এখানে আশার আনন্দিত সবাই। কেউ পূন্যের আশায়,আবার কেউ আসেন মানত নিয়ে মনোবাসনার ইচ্ছে পূরণ করার আশায় ঔলীর আস্তাস্থলে। এ উৎসবকে কেন্দ্র করে গত এক সাপ্তাহ পূর্ব থেকে সিলেট বিভাগের সিলেট,হবিগঞ্জ,মৌলভীবাজার ও সুনামগঞ্জসহ ৪জেলা দেশ,বিদেশের দেশে থেকে কাফেলাধারী পাগল,ফকির,ভক্ত,সাধক ও দর্শনার্থীরা ওরস মহোৎসবে যোগ দিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত হতে পূন্যার্থী ও ভক্তবৃন্দরা এসে ভিড় জমিয়েছেন মেঘালয় সীমান্তের লাউড়েরগর এলাকায় যাদুকাটা নদীর তীর সংশ্লিষ্ঠ আশ পাশের গ্রাম,স্থানীয় হাটবাজার ও শাহ আরেফিন মোকাম আস্তানায়। মানুষের আগমনে মিলন মেলায় যাদুকাটা নদী ও সীমান্ত এলাকা এখন কানায় কানায় পরিপূর্ন।
স্থানীয় সূত্রে জানাযায়, মুসলমান ধর্মালম্বীরা তাদের মনোবাসনা পূরণ ও সিদ্ধি লাভের আশায় শাহ আরোফিন (রঃ) এর ওরসে আসেন। তিনি আরো জানান,মুসলমানদের ৩৬০আওলিয়ার মধ্যে শাহ আরোফিন (রঃ) ছিলেন অন্যতম। সবাই জানেন তিনি একজন জিন্দা পীর। তিনি ভারতের মেঘালায় পাহাড়ের বড়বড় পাথরের গুহায় বসে আল্লাহ ইবাদত করতেন। ওইটাই ছিল তার একমাত্র আস্তানা,বাংলাদেশে কোন আস্তানা নেই। কিন্তু ভারতের সেই আস্তানায় ভক্তদের যেতে দেয় না ভারতীয় বিএসএফ। তাই বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের লাউড়েরগড় এলাকায় জিরো পয়েন্ট সংলগ্ন স্থানে শাহ আরোফিন (রঃ) এর আস্তানা তৈরি করে সেখানেই ওরস পালন করা হয়। সাধারণ দর্শনার্থীরা আসেন শাহ আরেফিনের স্মৃতি বিজড়িত বাংলাদেশ আস্তানায় এবং সেখান থেকেই একবার চোখ দিয়ে পরখ করে নেন অদূরে ভারতের মেঘালয় পাহাড়ে অবস্থিত শাহ আরেফিনের আস্তানার স্মৃতি চিহ্ন দিকে। কেউ আসেন মানত নিয়ে আবার কেউ দোয়া নেন কেউবা মোকাম জিয়ারত করে চলে যান। সেখানে বক্তরা বাউল,জারী,সারি,মারফতি,আদ্ধাতির্ক,বাউল শাহ আব্দুল করিম,হাসন রাজা,রাধারমন সহ বিভিন্ন শিল্পীর গাওয়া গান পরিবেশন করে গানে গানে মুখরীত করে তুলে চারপাশ। এ বাবেই বছরের পর বছর এ দু’উৎসবকে কেন্দ্র করে দু’ধর্মাবলম্বীদের মেলবন্ধন বসে যাদুকাটায়। আরো জানায়,এ সময় পূণার্থী ও দর্শনার্থীদের পদচারনায় মুখরিত হয়ে উঠে যাদুকাটা নদীর চারপাশ। শাহ আরোফিন (রঃ) এর ওরস ও পনাতীর্থকে কেন্দ্র করে যাদুকাটা নদীর দুই তীর রাজারগাঁও ও লাউড়েরগড়ে বসে বিরাট বারুনী মেলা। মেলায় লক্ষলক্ষ দোকানপাট বসে। এসব দোকানপাট থেকে কোটি কোটি টাকা চাঁদা উঠানো হয়। চোরাচালানীরা ওপেন বিক্রি করে মদ,গাজা,হেরুইন ও মেলা বসায় জুয়ার বোর্ড। এছাড়াও অনৈতিক ঘটনা স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যাক্তি,চোরাচালানী,মদ,গাজা ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন মামলার চিহ্নিত আসামীদের সহযোগীতায় চুরি-ডাকাতি,ছিন্তাই হয়। চাঁদাবাজি করতে গিয়ে গনধৌলাইয়ের শিকার হয় চাঁদাবাজরা অভিযোগ রয়েছে স্থানীয় এলাকাবাসীর। শাহ আরেফিন(রাঃ)ওরস উদযাপন কমিটির সফল সাথে ১৪বছর ধরে দায়িত্বে থাকা সাধারন সম্পাদক আলম সাব্বির জানান,নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমান আদালতের পাশাপাশি,এনএসআই, ডিএসবি, ডিবি,সাদা পোশাকধারী পুলিশ ও র্যাবের কয়েক শতাধিক সদস্য বিশেষ নজরধারী করা ছাড়াও ঝুঁকিপুর্ণ সড়ক গুলোতে দিবারাত্রী যাতায়াতকারীদের নিরাপত্তার স্বার্থে সেচ্ছা সেবকদল রয়েছে নিয়মিত টহল দেবে। তাহিরপুর থানার অফিসার্স ইনচার্য নন্দন কান্তি ধর জানান,শাহ আরেফিন(রাঃ)ওরস ওরস ও ¯œানযাত্রা মহোৎসবে সার্বিক নিরাপত্তা দিতে এ বছর অন্যান্য বছরের ন্যায় আখড়াবাড়ী,পণতীর্থ ধামে গঙ্গাস্নান,গড়কাটি ইসকন মন্দির,বারুণী মেলা ও ওরশ মোবারক আস্থানায় পুলিশ,বিজিবি,আনসার সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত যৌথ বাহিনীর অস্থায়ী ক্যাম্প বসানো হয়েছে। তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুজ্জামন কামরুল জানান-এবার দু-ধর্মের দুটি মেলায় আসা লোকজনের নিরাপত্তার জন্য সকল প্রকার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মেলায় যে কোন অনিয়মে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া জন্য বলা হয়েছে সংশ্লিষ্টদের। তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পূনেন্দ্র দেব বলেন,প্রতি বছরের ন্যায় এবারও মেলা উন্মুক্তো রাখা হয়েছে। কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্টানের নামে কেউ কোন প্রকার চাঁদা উত্তোলন করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়াও অন্যান্য বিষয়ের উপর কড়া নজরদারীর জন্য পুলিশ,র্যাব ও বিজিবি,এনএসআই,ডিএসবি,ডিবি,সাদা পোশাকধারী পুলিশ ও র্যাবের সদস্যগন বিশেষ নজরধারী দিচ্ছে নিরাপত্তার স্বার্থে।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd