সিলেট ২৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | ১৩ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরি
প্রকাশিত: ১০:৪১ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৮
ক্রাইম ডেস্ক : :: শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বন্ধ হচ্ছে না ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস কর্মকর্তাদের দুর্নীতি। বিমানবন্দর ইমিগ্রেশনে নিয়মিত হয়রানির শিকার হচ্ছেন বিমানের যাত্রীরা। চাঁদা না দিলে বিমানে যাত্রীদের আটকে দিচ্ছে ইমিগ্রেশন। সন্দেহে আটকে দেওয়া পাসপোর্টগুলো পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে মালিবাগ পুলিশের বিশেষ শাখায়। বিমানবন্দর কাস্টমসও পিছিয়ে নেই। বিদেশগামী কিংবা স্বদেশফেরত যাত্রীরা কাস্টমস কর্মকর্তাদের খুশি করতে না পারলে যাত্রী সাধারণকে হতে হচ্ছে নাজেহাল। সারা বছরই ইমিগ্রেশন ও কাস্টমসের একশ্রেণীর দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা যাত্রী সাধারণকে হয়রানি করে আসছে বলে একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগী যাত্রীদের অভিযোগ, ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস কর্মকর্তাদের মনোভাব দেখে মনে হয়, তাদের টাকা দেওয়ার জন্যই মানুষ বিদেশ যাচ্ছে এবং দেশে ফিরছে। যাত্রীদের কেন্দ্র করে রীতিমতো হরিলুট চালায় ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস কর্মকর্তারা। অনুসন্ধানে জানা গেছে, যাদের টাকায় দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ঘটছে, সেই প্রবাসী বাংলাদেশীরাই সবচেয়ে বেশি হয়রানির শিকার হচ্ছেন। কোনো কারণ ছাড়াই ইমিগ্রেশন পুলিশের অযাচিত জেরায় নাকাল হতে হচ্ছে তাদের। হয়রানি থেকে নিস্তার পাচ্ছেন না ব্যবসায়ী, ছাত্র, রাজনীতিক এমনকি পর্যটকরাও। ইমিগ্রেশন পুলিশ এসব যাত্রীর পাসপোর্ট আটকে রাখার ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা আদায় করছে। আবার কারও পাসপোর্ট পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে মালিবাগ পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি)-এর প্রধান দফতরে। অথচ ইমিগ্রেশন পুলিশের সহায়তায় গলাকাটা পাসপোর্টধারী অবৈধ যাত্রীরা বিনা বাধায় উড়োজাহাজে চেপে বসছেন। ভুক্তভোগীরা বলছেন, কী কারণে পাসপোর্ট আটকিয়ে রাখা হচ্ছে এমন প্রশ্ন করা হলে তারা জবাব পান না। উল্টো ইমিগ্রেশন কর্মকর্তাদের হুমকি-ধমকি শুনতে হয়। তাদের অভিযোগ, মালিবাগ এসবি অফিসে মোটা অঙ্কের টাকা না দিলে পাসপোর্ট উঠানো যায় না। রাজনীতিকদের বলা হচ্ছে, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে কিনা দেখতে হবে, তদন্ত হবে। নানাভাবে জেরা করা হয় তাদের। ব্যবসায়ীদেরও একই কায়দায় হয়রানি করছেন তারা। বিমানবন্দরে কর্মরত একটি গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে জানা গেছে, ট্রাভেল এজেন্টরা পাচারের জন্য মানুষের জোগান দেয়। আর পাসপোর্ট জোগান দেয় বিমানবন্দরকেন্দ্রিক একটি ছিনতাইকারী চক্র। এরা প্রবাসী যাত্রীদের কাছ থেকে পাসপোর্ট ছিনতাই করে ফকিরেরপুলে নিয়ে যায়। সেখানে ট্রাভেল এজেন্সির অফিসে এসিড দিয়ে ছিনতাই করা পাসপোর্ট থেকে ছবি তুলে ফেলা হয়। এরপর সেখানে যাদের পাচার করা হবে তাদের ছবি সংযুক্ত করা হয়।
দেশি-বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলো এদের বোর্ডিং কার্ড ইস্যু করে। এরপর ইমিগ্রেশন পুলিশের কতিপয় দুর্নীতিবাজ সদস্য পাচারকৃতদের বিমানবন্দর থেকে উড়োজাহাজে তোলার বন্দোবস্ত করে। মালয়েশিয়া ও মধ্যপাচ্যের দেশের জন্যে যাত্রী পিছু ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা করে রাখা হচ্ছে।
প্রায় প্রতিদিনই এই দুই দেশে যাওয়ার একাধিক ফাইট রয়েছে। মানব পাচারের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন এমন একজন ব্যবসায়ী জানান, প্রতি পাসপোর্টের জন্য তাকে ইমিগ্রেশন পুলিশকে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা করে দিতে হয়। অনেক সময় এই টাকার অঙ্ক না মিললে তারা আটকে দেয় পাসপোর্ট। তখন ওই টাকা দিয়েই পাসপোর্ট ছুটিয়ে আনতে হয় মালিবাগের এসবি অফিস থেকে। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, ঘটনায় জড়িতরা হলেন ইমিগ্রেশন পুলিশের চার উপ-পরিদর্শক, কাতার এয়ারলাইন্সের ম্যানেজারসহ দুই আইএনএস কর্মকর্তা ও প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের একজন ওয়েলফেয়ার কর্মকর্তা। জড়িতদের বিরুদ্ধে সরকারের উচ্চমহলে লিখিত অভিযোগ পাঠিয়েছেন তারা। অপর একটি আদম পাচারের অভিযোগে ইমিগ্রেশন পুলিশের এক ওসিসহ কয়েক কর্মকর্তাকে বিমানবন্দর থেকে বদলি করা হয়।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd