সিলেট ২৫শে জানুয়ারি, ২০২১ খ্রিস্টাব্দ | ১১ই মাঘ, ১৪২৭ বঙ্গাব্দ | ১১ই জমাদিউস সানি, ১৪৪২ হিজরি
প্রকাশিত: ১:৪৫ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৬, ২০১৮
Sharing is caring!
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগ সভানেত্রী আফরোজা আক্তার লাইজু ও যুব মহিলা লীগের সহসভাপতি ডলি আক্তার প্রতারণার পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করছেন। এ দুজনকে ঘিরে দলে বিভক্তি তৈরি হয়েছে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাজাপুর উপজেলার পুখরিজানা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরি কাম নৈশপ্রহরী পদে নিয়োগে টাকা লেনদেন হয়েছে। বাইপাস সড়কের আল আমিন খানকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে চার লাখ টাকা ঘুষ নেন উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান লাইজু। আমিনের বড় বোন ডলির কাছ থেকে ২০১৫ সালে তিনি এ টাকা নেন। টাকা নেওয়ার পরও চাকরি দেওয়া হয়নি। এই টাকা ফেরত চাইলে তা দেননি। গত বুধবার রাতে ডলি তাঁর মামাতো ভাই মো. ছায়েদকে পাঠায় লাইজুর কাছে। লাইজুর কাছে গিয়ে টাকা ফেরত দিতে বলেন ছায়েদ। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে লাইজু দলবল নিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে ডলির বাইপাস সড়কের বাসায় গিয়ে হামলা করেন। একপর্যায়ে ডলিকে মারধর করেন তাঁরা। আহত অবস্থায় ডলি রাজাপুর থানায় ছুটে আসেন। তিনি পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। এ খবর শুনে লাইজু লোকজন নিয়ে থানায় আসেন। পুলিশের সামনে ডলিকে বেধড়ক মারধর করেন। রাজাপুর থানার মহিলা পুলিশ তাঁদের হাত থেকে ডলিকে উদ্ধার করে। বর্তমানে ডলি বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ডলিকে নির্যাতনের প্রতিবাদ এবং লাইজুর বিচারের দাবিতে রবিবার সকালে ঝালকাঠির জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনের সড়কে মানববন্ধন করা হয়। মানববন্ধনে নির্যাতিত ডলির পরিবারসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেয়। মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য দেন ডলির মা বকুল বেগম, ননদ শিরিন সুলতানা ও ভাবি মরিয়ম বেগম।
এদিকে যুব মহিলা লীগের সহসভাপতি ডলি আক্তারের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ করেন লাইজুর সমর্থক রোজিনা বেগম। তিনিও রাজাপুর উপজেলা মহিলা লীগের সদস্য। তিনি অভিযোগ করেন, ডলির স্বামী মো. সোহাগ সিকদার সৌদি আরব থাকেন। বর্তমানে তিনি বাড়িতে আছেন। সোহাগ সৌদি থাকাকালে তাঁর স্ত্রী ডলি বিভিন্ন লোকজনকে সৌদি আরব পাঠানোর কথা বলে টাকা নিয়ে প্রতারণা করেন। রোজিনার বোনের ছেলে আতিকুর রহমানকে সৌদি আরব পাঠানোর জন্য ডলির সঙ্গে সাত লাখ টাকায় চুক্তি হয়। গত বছর জানুয়ারিতে মঠবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদে বসে ডলির কাছে সাত লাখ টাকা হস্তান্তর করেন রোজিনা। ৫০ হাজার টাকা বেতনে দুই মাসের মধ্যে আতিকুরকে সৌদি আরব পাঠানোর কথা ছিল। অথচ এক বছর পার হলেও তাঁকে পাঠাননি ডলি। পরবর্তী সময় রোজিনা জানতে পারেন, ডলি তাঁদের সঙ্গে প্রতারণা করছেন। তখন ডলির কাছে দেওয়া সাত লাখ টাকা ফেরত চান তিনি। অনেক দিন ঘুরিয়েও টাকা দিচ্ছেন না ডলি ও তাঁর স্বামী। এ ঘটনায় লাইজুর কাছে অভিযোগ দেন রোজিনা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ডলি ও তাঁর স্বামী রোজিনাকে মারধর করেন। এমনকি লাইজু সালিসে মীমাংসার জন্য ডলিকে আসতে বললেও তিনি আসেননি। বরং লাইজু মীমাংসার কথা বলায় তাঁকে হেয় করার জন্য ডলি ও তাঁর পরিবার নানা ষড়যন্ত্র করছে। গত বৃহস্পতিবার লাইজুর নামে মিথ্যা অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলনও করেন ডলি। ওই সংবাদ সম্মেলনে ডলির সব বক্তব্য বানোয়াট ছিল বলেও দাবি করেন রোজিনা।
ডলি আক্তার বলেন, ‘আমার স্বামী কাউকে বিদেশে নেওয়ার কথা বলে টাকা নেয়নি, আমিও নিইনি।’ অন্যদিকে আফরোজা আক্তার লাইজু বলেন, ‘আমি বা আমার লোকজন তাঁকে কোনো মারধর করিনি।’
রাজাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মিলন মাহামুদ বাচ্চু বলেন, ‘সবার সঙ্গে আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা করব।’
রাজাপুর থানার পরিদর্শক মো. শামসুল আরেফিন বলেন, ‘থানার মধ্যে বসে কোনো মারধর ঘটেনি। ডলির একটি অভিযোগ পেয়েছি। তাঁর বিরুদ্ধে রোজিনা একটি অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগ দুটি তদন্ত করে দেখছি।’
………………………..
Design and developed by best-bd