সিলেট ২৯শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৬ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ৩০শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১১:০০ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৩, ২০১৭
ডেস্ক নিউজ : ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলার চাদঁপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ কেয়ামুল্লাহ গ্রামের মৃত ফজলুল রহমানের শিশুকন্যা সুরমার ওপর অমানুষিক নির্যাতনের ঘটনায় কালের কণ্ঠে সংবাদ প্রকাশের পর অবশেষে মামলা দায়ের হয়েছে। নির্যাতিত শিশুর মা আনোয়ারা বেগম বাদী হয়ে আজ সোমবার মনপুরা থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
বাদীর পরিবারের অভিযোগ, আসামিরা তাদেরকে হুমকি দিচ্ছে। এদিকে, এখন পর্যন্ত মামলার আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। পুলিশ বলছে, আসামিরা পলাতক।
আজ সোমবার দুপুরে সরেজমিনে ভোলা সদর হাসপাতালের দোতলায় সার্জারি বিভাগে দেখা যায়, সারা শরীরে ক্ষত নিয়ে নির্যাতনের শিকার শিশু সুরমা শুয়ে আছে ওই বিভাগের ৬১ নম্বর শয্যায়। মেয়ের শয্যার পাশেই শুয়ে আছেন তার মা আনোয়ারা বেগম ও খালা মরজিনা বেগম।
আনোয়ারা বেগম ও খালা মরজিনা বেগম অভিযোগ করে জানান, মামলা দায়ের করায় আসামিপক্ষ বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছে।
এ ব্যাপারে মনপুরা থানার ওসি শাহিন খান জানান, শিশু সুরমার ওপর অমানবিক নির্যাতনের ঘটনায় মনপুরা থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। নির্যাতিত শিশুর মা আনোয়ারা বেগম বাদী হয়ে দুইজনের বিরুদ্ধে মনপুরা থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় মিনু বেগমকে প্রধান আসামি করা হয়েছে।
ভোলার পুলিশ সুপার মো. মোকতার হোসেন বলেন, “ঘটনার পর থেকে আসামিরা পলাতক। তবে, পুলিশ আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে। “
উল্লেখ্য, তজুমদ্দিন উপজেলার চাদঁপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ কেয়ামুল্লাহ গ্রামের মুনাফ আলী বাড়ীর মৃত ফজলুল রহমানের মেয়ে সুরমাকে মনপুরা উপজেলার বাসিন্দা মিনারা বেগমের (মিনু) বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। নিয়োগের পর থেকে শিশুটির ওপর চলে অমানুষিক নির্যাতন। তার সারা শরীরে গরম খুন্তি দিয়ে ছেঁকা দেওয়া হতো।
গত বৃহস্পতিবার সকালে মা আনোয়ারা বেগম মেয়ে সুরমার মনপুরা থেকে তজুমদ্দিন আসার খবর পেয়ে দিলাওয়াত হাজীর বাসায় যান। সেখানে গিয়ে মর্মান্তিক অবস্থায় মেয়ে সুরমাকে দেখতে পেয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়েন মা আনোয়ারা বেগম। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় সুরমাকে প্রথমে তজুমদ্দিন হাসপাতাল ও পরে ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে সুরমা বেগম ভোলা সদর হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের ৬১ নম্বর শয্যায় মুমূর্ষু অবস্থায় মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে।
ভোলা সদর হাসপালের আরএমও ডা. তৈয়বুর রহমান বলেন, “আমরা শিশুটিকে পর্যবেক্ষণে রেখেছি। তার চিকিৎসা চলছে। তবে, তার শরীরে আনেক ক্ষতের দাগ দেখা গেছে। এসব দাগ দীর্ঘদিনের। ধারণা করা হচ্ছে, মেয়েটিকে প্রায়ই নির্যাতন করা হতো। সেখানে ওষুধও দেওয়া হতো না। ফলে ওর শরীরের ঘা এখন ওর যন্ত্রণার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এ নিয়ে আজ সোমবার কালের কণ্ঠ’র প্রিয়দেশ পাতায় ‘নির্মম, সুরমার চোখে জল’ শিরোনামে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে তোলপাড় শুরু হয় প্রশাসনে। তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয় এলাকাবাসীর মধ্যে।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd